hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২১৯
অধ্যায়- ২ : দান করার পদ্ধতি
আল্লাহ হালাল ও পবিত্র জিনিস দান করতে বলেছেন :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اَنْفِقُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّاۤ اَخْرَجْنَا لَكُمْ مِّنَ الْاَرْضِ۪ وَلَا تَيَمَّمُوا الْخَبِيْثَ مِنْهُ تُنْفِقُوْنَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যা উপার্জন করেছ এবং আমি জমিন থেকে যা উৎপন্ন করি তার মধ্য হতে পবিত্র জিনিসসমূহ দান করো। আর তোমরা খারাপ জিনিস দান করার ইচ্ছা পোষণ করো না। (সূরা বাক্বারা- ২৬৭)

প্রিয় জিনিস দান করার মধ্যে সওয়াব নিহিত :

لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتّٰى تُنْفِقُوْا مِمَّا تُحِبُّوْنَؕ وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ شَيْءٍ فَاِنَّ اللهَ بِهٖ عَلِيْمٌ

তোমরা কখনো যথার্থ নেকী অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় জিনিস আল্লাহর পথে খরচ কর। আর তোমরা যা কিছুই দান কর আল্লাহ তা জানেন। (সূরা আলে ইমরান- ৯২)

ব্যাখ্যা : আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদিনায় আনসারদের মাঝে আবু তালহা (রাঃ) এর খেজুর বাগানের সম্পদ সবচেয়ে বেশি ছিল এবং তাঁর সম্পদের মাঝে ‘বাইরূহা’ বাগানটিই তাঁর অধিকতর প্রিয় ছিল। এটা ছিল মসজিদে নববীর সামনে অবস্থিত। রাসূল ﷺ কখনো কখনো ঐ বাগানে ঢুকতেন এবং সেখানকার মিঠা পানি পান করতেন। আনাস (রাঃ) বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল হলো- ‘‘তোমরা যা পছন্দ কর, তা হতে দান না করা পর্যন্ত তোমরা কিছুতেই প্রকৃত নেকী অর্জন করতে পারবে না’’, তখন আবু তালহা (রাঃ) রাসূল ﷺ এর কাছে এসে বললেন, ‘‘হে আল্লাহর রাসূল! মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘‘তোমরা যা পছন্দ কর তা হতে দান না করা পর্যন্ত কিছুতেই প্রকৃত নেকী অর্জন করবে না।’’ (আমি দেখলাম) আমার সম্পদসমূহের মাঝে ‘বাইরূহা’ বাগানটি আমার কাছে অধিকতর প্রিয়। আমি তা আল্লাহর জন্য দান করলাম, আল্লাহর কাছে এর নেকী ও সঞ্চয়ের আশা রাখি। অতএব হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এটা নিয়ে নিন এবং যেভাবে আল্লাহ আপনাকে নির্দেশ দেন সেভাবে ব্যবহার করুন। রাসূল ﷺ বললেন, বাহ! এটা তো লাভজনক ব্যবসা, এটা তো লাভজনক ব্যবসা; তুমি যা বললে তা আমি শুনলাম। (তবে) তুমি এটা তোমার আত্মীয়স্বজনদের দিয়ে দেয়াটাই আমি ভালো মনে করি। আবু তালহা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তাই করব। অতঃপর আবু তালহা (রাঃ) তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও চাচাত ভাইদের মাঝে বিতরণ করে দিলেন। (সহীহ বুখারী, হা/১৪৬১)

মধ্যম মানের প্রয়োজন পূরণের পরেই দান করতে হবে :

وَيَسْاَ لُوْنَكَ مَاذَا يُنْفِقُوْنَ قُلِ الْعَفْوَ

তারা আপনাকে প্রশ্ন করে, কী ব্যয় করবে? আপনি বলে দিন, (প্রয়োজন বাদে) যা অতিরিক্ত হয় (তাই ব্যয় করবে)। (সূরা বাক্বারা- ২১৯)

প্রকাশ্যে দান করার চেয়ে গোপনে দান করা উত্তম :

اِنْ تُبْدُوا الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَۚ وَاِنْ تُخْفُوْهَا وَتُؤْتُوْهَا الْفُقَرَآءَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ

তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান কর, তবে তা ভালো। আর যদি গোপনে গরীবদেরকে দান কর, তবে তা তোমাদের জন্য আরো উত্তম। (সূরা বাক্বারা- ২৭১)

ব্যাখ্যা : যে দান ফরয, সেটি প্রকাশ্যে করাই উত্তম এবং যে দান ফরয নয় তা গোপনে করাই উত্তম। তাছাড়া অন্যান্য সকল উত্তম কাজের ক্ষেত্রেও এ নীতি প্রযোজ্য হবে, অর্থাৎ ফরযগুলো প্রকাশ্যে এবং নফলগুলো গোপনে করাই উত্তম হিসেবে বিবেচিত হবে।

ফরজগুলো প্রকাশ্যে পালন করাতে কয়েকটি উপকারিতা রয়েছে। আর তা হলো,

(১) এ কাজের ব্যাপারে অধিক সাক্ষী সংগ্রহ হয়ে যায়, যা কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে প্রদান করা হবে।

(২) তার কাজগুলো দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হবে।

(৩) মানুষ তাকে একজন সৎ ব্যক্তি হিসেবে জানবে। ফলে সে কোন উপদেশ দিলে তারা তা মান্য করবে। তবে এ ব্যাপারে শর্ত হচ্ছে, নিয়ত শুদ্ধ রাখা।

আর গোপনে সৎকাজ করার মধ্যে বেশ কয়েকটি উপকারিতা রয়েছে। আর তা হলো,

(১) এর মাধ্যমে মানুষের আত্মার উন্নতি সাধিত হয়।

(২) নিয়তের পরিশুদ্ধতা নিশ্চিত হয়।

(৩) ব্যক্তির সৎ গুণাবলি বিকাশ লাভ করে এবং সকল দোষ-ত্রুটি ও অসৎ বৃত্তিগুলো ধীরে ধীরে নির্মূল হয়ে যায়।

দান করতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য :

وَسَيُجَنَّبُهَا الْاَتْقٰى اَ لَّذِيْ يُؤْتِيْ مَالَهٗ يَتَزَكّٰى وَمَا لِاَحَدٍ عِنْدَهٗ مِنْ نِّعْمَةٍ تُجْزٰى اِلَّا ابْتِغَآءَ وَجْهِ رَبِّهِ الْاَعْلٰى

এ থেকে (জাহান্নাম থেকে) দূরে রাখা হবে আল্লাহভীরু ব্যক্তিদেরকে, যে আত্মশুদ্ধির জন্য তার ধনসম্পদ হতে দান করে। অতঃপর তার উপর মহান পালনকর্তার সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদানযোগ্য অনুগ্রহ থাকে না। (সূরা লাইল, ১৭-২০)

দান করে খোঁটা দেয়া যাবে না :

اَلَّذِيْنَ يُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ ثُمَّ لَا يُتْبِعُوْنَ مَاۤ اَنْفَقُوْا مَنًّا وَّلَاۤ اَذًى لَّهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْۚ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُوْنَ

যারা আল্লাহর পথে তাদের মাল খরচ করে, পরে তার জন্য খোঁটা দেয় না এবং কষ্টও দেয় না, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট প্রতিদান রয়েছে। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। (সূরা বাক্বারা- ২৬২)

দান করে খোঁটা দিলে সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تُبْطِلُوْا صَدَقَاتِكُمْ بِالْمَنِّ وَالْاَذٰى

হে ঈমানদারগণ! খোঁটা এবং কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে বরবাদ করে দিয়ো না। (সূরা বাক্বারা- ২৬৪)

ব্যাখ্যা : আল্লাহ তোমাদের দান-খয়রাতের মুখাপেক্ষী নন। আল্লাহ নিজেই যেহেতু সহনশীল, তাই তিনি এমন লোকদের পছন্দ করেন যারা সংকীর্ণমনা নয়; বরং বিপুল সাহসের অধিকারী এবং সহিষ্ণু। যে আল্লাহ তোমাদের জীবনে অগণিত উপায়-উপকরণ দান করেছেন এবং বহুবিধ ভুল-ত্রুটি করার পরও তোমাদেরকে বার বার ক্ষমা করে দিচ্ছেন, তিনি কেমন করে এমন লোকদের পছন্দ করতে পারেন, যারা কোন গরীবকে এক মুঠো ভাত খাওয়ানোর পর বার বার নিজের অনুগ্রহের কথা তার সামনে প্রকাশ করে তার আত্মমর্যাদাকে নষ্ট করে দেয়।

একনিষ্ঠভাবে দান করার দৃষ্টান্ত :

مَثَلُ الَّذِيْنَ يُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنْۢبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِيْ كُلِّ سُنْۢبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍؕ وَاللهُ يُضَاعِفُ لِمَنْ يَّشَآءُؕ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِيْمٌ

যারা আল্লাহর পথে তাদের মাল খরচ করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে একটি শস্যদানার মতো, যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে এবং প্রত্যেক শীষে একশ’ শস্যদানা থাকে। আর আল্লাহ যাকে চান তাকে আরো বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রশস্তকারী ও মহাজ্ঞানী। (সূরা বাক্বারা- ২৬১)

ব্যাখ্যা : ধনসম্পদ নিজেদের প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্য, পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের বা আত্মীয়স্বজনের দেখাশুনা করার জন্য অথবা অভাবীদের সাহায্যার্থে বা জনকল্যাণমূলক কাজে এবং জিহাদের উদ্দেশ্যে যে কোনভাবেই ব্যয় করা হোক না কেন, তা যদি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী এবং একমাত্র তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে করা হয়, তাহলে তা আল্লাহর পথে ব্যয় করার মধ্যেই গণ্য হবে। অর্থাৎ যে পরিমাণ আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও গভীর আবেগ-উদ্দীপনা সহকারে মানুষ আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে তার প্রতিদানও ততবেশি ধার্য করা হবে। যে আল্লাহ একটি শস্যদানায় এত বিপুল পরিমাণ বরকত দান করেন যে, তা থেকে সাতশটি শস্য উৎপন্ন হতে পারে, তাঁর পক্ষে মানুষের দান-খয়রাতের মধ্যে এমনভাবে বৃদ্ধি ও দান করা, যার ফলে এক টাকা ব্যয় করলে তা বৃদ্ধি পেয়ে সাতশ’ গুণ হয়ে ফিরে আসবে- এটা মোটেই কঠিন ব্যাপার নয়। এ বাস্তব সত্যটি বর্ণনা করার পর আল্লাহর দু’টি গুণাবলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একটি গুণ হচ্ছে, তাঁর হাত সংকীর্ণ নয় বরং তিনি মুক্তহস্তের অধিকারী। মানুষের কাজ প্রকৃতপক্ষে যতটুকু উন্নতি, বৃদ্ধি ও প্রতিদান লাভের যোগ্য, তা তিনি দিতে সক্ষম। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, তিনি সর্বজ্ঞ। অর্থাৎ তিনি কোন বিষয়ে বেখবর নন। যা কিছু মানুষ ব্যয় করে এবং যে মনোভাব, আবেগ ও প্রেরণা সহকারে ব্যয় করে, সে সম্পর্কে তিনি অবহিত; ফলে মানুষ তার যথার্থ প্রতিদান হতে বঞ্চিত হবে না।

وَمَثَلُ الَّذِيْنَ يُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمُ ابْتِغَآءَ مَرْضَاةِ اللهِ وَتَثْبِيْتًا مِّنْ اَنْفُسِهِمْ كَمَثَلِ جَنَّةٍ ۢبِرَبْوَةٍ اَصَابَهَا وَابِلٌ فَاٰتَتْ اُكُلَهَا ضِعْفَيْنِۚ فَاِنْ لَّمْ يُصِبْهَا وَابِلٌ فَطَلٌّؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ

যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং নিজেদের (ঈমানকে) দৃঢ় করার জন্য তাদের মাল খরচ করে, তাদের উদাহরণ হচ্ছে উর্বর জমিতে অবস্থিত একটি বাগানের মতো, যাতে প্রবল বৃষ্টি বর্ষিত হয়। ফলে তা দিগুণ খাদ্যশস্য উৎপন্ন করে। যদি প্রবল বৃষ্টি নাও হয়, তবে অল্প বৃষ্টিই যথেষ্ট হয়ে যায়। আর তোমরা যা কর আল্লাহ তা প্রত্যক্ষ করেন। (সূরা বাক্বারা- ২৬৫)

ব্যাখ্যা : বৃষ্টিপাতের ফলে মাটি স্বাভাবিকভাবেই সরস ও সতেজ হয় এবং তাতে চারা জন্মায়। কিন্তু যে মাটিতে সরসতা সৃষ্টি হয়, তার পরিমাণ যদি হয় নামমাত্র এবং তা কেবল উপরিভাগেই লেপটে থাকে আর তার তলায় থাকে পাথর, তাহলে বৃষ্টির পানি তার জন্য লাভজনক হওয়ার পরিবর্তে ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়। অনুরূপভাবে দান-খয়রাত যদিও নেকী ও সৎকর্মকে বিকশিত করার ক্ষমতাসম্পন্ন, কিন্তু তা লাভজনক হওয়ার জন্য সদুদ্দেশ্য ও সৎ নিয়তের শর্ত আরোপিত হয়েছে। নিয়ত সৎ না হলে এ দান নিছক সম্পদের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রবল বৃষ্টিপাত বলতে এমন দান-খয়রাতকে বুঝানো হয়েছে, যার পেছনে থাকে চরম কল্যাণাকাঙ্ক্ষা ও পূর্ণ সদিচ্ছা। আর হালকা বৃষ্টিপাত বলতে কল্যাণাকাঙ্ক্ষার তীব্রতা বিহীন দান-খয়রাতকে বুঝানো হয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন