hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১১৩
অধ্যায়- ৫ : মুজাহিদদের বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি
ইসলামের পক্ষে জিহাদ করার জন্য বায়‘আত করতে হবে :

اِنَّ الَّذِيْنَ يُبَايِعُوْنَكَ اِنَّمَا يُبَايِعُوْنَ اللهَؕ يَدُ اللهِ فَوْقَ اَيْدِيْهِمْۚ فَمَنْ نَّكَثَ فَاِنَّمَا يَنْكُثُ عَلٰى نَفْسِهٖۚ وَمَنْ اَوْفٰى بِمَا عَاهَدَ عَلَيْهُ اللهَ فَسَيُؤْتِيْهِ اَجْرًا عَظِيْمًا

(হে রাসূল!) যারা আপনার কাছে বায়‘আত গ্রহণ করেছিল তারা মূলত আল্লাহর কাছেই বায়‘আত করেছিল, তাদের হাতের উপর ছিল আল্লাহর হাত। সুতরাং এখন যে ব্যক্তি এ ওয়াদা ভঙ্গ করবে এর কুফল তার উপরই পড়বে। আর যে আল্লাহর সাথে ওয়াদা করে তা পূরণ করবে, অচিরেই তাকে মহাপুরস্কারে ভূষিত করা হবে। (সূরা ফাতহ- ১০)

لَقَدْ رَضِيَ اللهُ عَنِ الْمُؤْمِنِيْنَ اِذْ يُبَايِعُوْنَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِيْ قُلُوْبِهِمْ فَاَنْزَلَ السَّكِيْنَةَ عَلَيْهِمْ وَاَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيْبًا

(হে রাসূল!) আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলেন, যখন তারা গাছের নিচে আপনার কাছে বায়‘আত গ্রহণ করেছিল। তাদের অন্তরের অবস্থা তিনি জানেন। তাই তিনি তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং পুরস্কার হিসেবে নিকটবর্তী বিজয় দান করলেন। (সূরা ফাতহ- ১৮)

জিহাদের জন্য অস্ত্র যোগাড় করতে হবে :

وَاَعِدُّوْا لَهُمْ مَّا اسْتَطَعْتُمْ مِّنْ قُوَّةٍ وَّمِنْ رِّبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُوْنَ بِهٖ عَدُوَّ اللهِ وَعَدُوَّكُمْ وَاٰخَرِيْنَ مِنْ دُوْنِهِمْۚ لَا تَعْلَمُوْنَهُمُۚ اَللهُ يَعْلَمُهُمْؕ وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ شَيْءٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ يُوَفَّ اِلَيْكُمْ وَاَنْتُمْ لَا تُظْلَمُوْنَ

তোমরা তাদের মুকাবিলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ব-বাহিনী প্রস্তুত রাখবে। এর দ্বারা তোমরা ভীত-সন্ত্রস্ত করবে আল্লাহ ও তোমাদের শত্রুকে। এছাড়া এমন কিছু শত্রুকেও (ভীত-সন্ত্রস্ত করবে) যাদেরকে তোমরা জান না, কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে জানেন। আল্লাহর পথে তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে, তোমাদেরকে তার পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে এবং তোমাদের প্রতি কোন যুলুম করা হবে না। (সূরা আনফাল- ৬০)

সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا خُذُوْا حِذْرَكُمْ فَانْفِرُوْا ثُبَاتٍ اَوِ انْفِرُوْا جَمِيْعًا

হে মুমিনগণ! সতর্কতা অবলম্বন করো; অতঃপর হয় দলে দলে বিভক্ত হয়ে অগ্রসর হও অথবা একসঙ্গে অগ্রসর হও। (সূরা নিসা- ৭১)

সঠিক জায়গায় সৈন্য নিযুক্ত করতে হবে :

وَاِذْ غَدَوْتَ مِنْ اَهْلِكَ تُبَوِّئُ الْمُؤْمِنِيْنَ مَقَاعِدَ لِلْقِتَالِؕ وَاللهُ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ

(স্মরণ করো) যখন তুমি তোমার পরিবার থেকে সকালে বের হয়েছিলে, তখন মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য ঘাঁটিতে নিয়োজিত করেছিলে। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী। (সূরা আলে ইমরান- ১২১)

জিহাদের ডাক শুনলে মুজাহিদদের ঈমান বৃদ্ধি পায় :

اَ لَّذِيْنَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ اِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوْا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ اِيْمَانًاۗ وَقَالُوْا حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ

লোকেরা যাদেরকে বলেছিল, নিশ্চয় তোমাদের বিরুদ্ধে লোকজন সমবেত হয়েছে। অতএব তোমরা তাদেরকে ভয় করো; কিন্তু এতে তাদের বিশ্বাস আরো বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং তারা বলেছিল, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং মঙ্গলময় কর্মবিধায়ক। (সূরা আলে ইমরান- ১৭৩)

তারা পেছনে থাকার জন্য বাহানা খুঁজে না :

لَا يَسْتَاْذِنُكَ الَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ اَنْ يُّجَاهِدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَاَنْفُسِهِمْؕ وَاللهُ عَلِيْمٌ ۢبِالْمُتَّقِيْنَ

যারা আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনে, তারা তোমার নিকট নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদ করা থেকে অব্যহতি পাওয়ার জন্য আবেদন করে না। আল্লাহ মুত্তাক্বীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত। (সূরা তাওবা- ৪৪)

তারা আল্লাহর রহমত কামনা করে :

اِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَالَّذِيْنَ هَاجَرُوْا وَجَاهَدُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ اُولٰٓئِكَ يَرْجُوْنَ رَحْمَتَ اللهِ ؕ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

নিশ্চয় যারা ঈমান আনয়ন করেছে, হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, তারাই আল্লাহর রহমত পাওয়ার আশা করতে পারে। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সূরা বাক্বারা- ২১৮)

তারা আখিরাতের বিনিময়ে দুনিয়াকে বিক্রি করে দেয় :

فَلْيُقَاتِلْ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ الَّذِيْنَ يَشْرُوْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا بِالْاٰخِرَةِؕ وَمَنْ يُّقَاتِلْ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَيُقْتَلْ اَوْ يَغْلِبْ فَسَوْفَ نُؤْتِيْهِ اَجْرًا عَظِيْمًا

যারা আখিরাতের বিনিময়ে পার্থিব জীবনকে বিক্রয় করে দিয়েছে তারা যেন আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করবে সে নিহত হোক অথবা বিজয়ী হোক- আমি তাকে মহাপুরস্কার দান করবই। (সূরা নিসা- ৭৪)

ব্যাখ্যা : আল্লাহর পথে লড়াই করা দুনিয়ার স্বার্থ পূজারী লোকদের কাজ নয়। এটা এমন লোকদের কাজ, যারা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাজ করে, যারা আল্লাহ ও আখিরাতের উপর পূর্ণ আস্থা রাখে এবং নিজেদের পার্থিব সমৃদ্ধির সমস্ত সম্ভাবনা একমাত্র আল্লাহর জন্য ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকে। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়, তাদের রব যেন তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান এবং আখিরাতে যেন তাদের শ্রম বিফলে না যায়।

তারা শত্রুকে ভয় করে না, বরং আল্লাহকেই ভয় করে :

اَلَا تُقَاتِلُوْنَ قَوْمًا نَّكَثُوْاۤ اَيْمَانَهُمْ وَهَمُّوا بِاِخْرَاجِ الرَّسُوْلِ وَهُمْ بَدَءُوْكُمْ اَوَّلَ مَرَّةٍ اَتَخْشَوْنَهُمْ فَاللهُ اَحَقُّ اَنْ تَخْشَوْهُ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ

তোমরা কি এমন একটি দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না, যারা বার বার নিজেদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে। যারা আল্লাহর রাসূলকে স্বদেশ থেকে বের করার পরিকল্পনা করেছে এবং তারাই তো প্রথম তোমাদের উপর হামলা শুরু করেছে। তোমরা কি তাদেরকে ভয় কর? অথচ যদি তোমরা মুমিন হও, তাহলে তোমাদের উচিত আল্লাহকেই সবচেয়ে বেশি ভয় করা। (সূরা তাওবা- ১৩)

তারা কোন নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করে না :

يُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَلَا يَخَافُوْنَ لَوْمَةَ لَآئِمٍؕ ذٰلِكَ فَضْلُ اللهِ يُؤْتِيْهِ مَنْ يَّشَآءُؕ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِيْمٌ

তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে, কোন নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করে না; এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ। (সূরা মায়েদা- ৫৪)

ব্যাখ্যা : অর্থাৎ তারা আল্লাহর দ্বীনের অনুসরণ করার ব্যাপারে, তাঁর বিধানসমূহ কার্যকর করার ব্যাপারে এবং এ দ্বীনের দৃষ্টিতে যা সত্য তাকে সত্য আর যা মিথ্যা তাকে মিথ্যা বলার ব্যাপারে আপোষহীন ও নির্ভীক। তারা কারো বিরোধিতা, নিন্দা, তিরস্কার ও আপত্তির পরোয়া করে না। সকল মানুষও যদি ইসলাম বিরোধী হয়, তাহলেও তারা সত্য পথেই চলতে থাকে।

তারা শাহাদাত কামনা করে :

مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ رِجَالٌ صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللهَ عَلَيْهِۚ فَمِنْهُمْ مَّنْ قَضٰى نَحْبَهٗ وَمِنْهُمْ مَّنْ يَّنْتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوْا تَبْدِيْلًا

মুমিনদের মধ্যে কতক লোক এমনও রয়েছে, যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে; তাদের মধ্যে কেউ কেউ শাহাদাতবরণ করেছে এবং কেউ কেউ অপেক্ষায় রয়েছে। তারা স্বীয় সংকল্প একটুও পরিবর্তন করেনি। (সূরা আহযাব- ২৩)

তারা মুমিনদের ব্যাপারে কোমল ও শত্রুদের ব্যাপারে কঠোর :

مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللّٰهِ وَالَّذِيْنَ مَعَهٗۤ اَشِدَّآءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَيْنَهُمْ

মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, আর তাঁর (মুহাম্মদের) সাথে যারা আছে তারা কাফিরদের ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর, তবে নিজেদের ব্যাপারে একান্ত সহানুভূতিশীল। (সূরা ফাতহ- ২৯)

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا قَاتِلُوا الَّذِيْنَ يَلُوْنَكُمْ مِّنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوْا فِيْكُمْ غِلْظَةً وَّاعْلَمُوْاۤ اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الْمُتَّقِيْنَ

হে ঈমানদারগণ! কাফিরদের মধ্যে যারা তোমাদের সীমান্তের কাছাকাছি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এমনভাবে জিহাদ করো, যেন তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়। জেনে রেখো, নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাক্বীদের সাথেই রয়েছেন। (সূরা তাওবা- ১২৩)

ব্যাখ্যা : কাফিরদের ব্যাপারে কঠোর হওয়ার অর্থ হচ্ছে, নিজের মজবুত ঈমান, নিঃস্বার্থ ও একনিষ্ঠ দ্বীনদারী, চারিত্রিক শক্তি ও ঈমানী দূরদৃষ্টির কারণে একজন মুমিন ইসলাম বিরোধীদের মুকাবিলায় পাহাড়ের মতো অটল থাকবে। নিজের স্থান থেকে তাকে এক চুলও নড়ানো যাবে না। ইসলাম বিরোধীরা কখনো তাকে নমনীয়, দোদুল্যমান এবং সহজে গলধঃকরণ করার মতো খাদ্য মনে করতে পারবে না। যখনই তারা তার মুখোমুখি হয় তখনই টের পেয়ে যায় যে, আল্লাহর এ বান্দা মরে যেতে পারে; কিন্তু কখনো কোন মূল্যে বিক্রি হবে না এবং কোন চাপের কাছে নতি স্বীকারও করবে না।

কাফিরদের ন্যায় অহংকার করা যাবে না :

وَلَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ خَرَجُوْا مِنْ دِيَارِهِمْ بَطَرًا وَّرِئَآءَ النَّاسِ وَيَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِؕ وَاللهُ بِمَا يَعْمَلُوْنَ مُحِيْطٌ

তোমরা কখনো তাদের মতো হয়ো না, যারা অহংকার করে এবং লোকদেরকে নিজেদের জাঁকজমক দেখানোর জন্য নিজেদের ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং যারা সাধারণ মানুষদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রেখেছে। মূলত আল্লাহ তাদের সকল কার্যকলাপই পরিবেষ্টন করে আছেন। (সূরা আনফাল- ৪৭)

ব্যাখ্যা : কুরাইশ সেনাবাহিনী মক্কা থেকে বের হয়েছিল অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে। পথের মাঝখানে বিভিন্ন জায়গায় থেমে তারা নাচ-গান, মদ্য পান ও আনন্দ উল্লাসের আসর জমিয়ে তুলেছিল। তারা এমনভাবে বীরত্ব দেখাচ্ছিল, যেন তাদের সামনে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। যে উদ্দেশ্যে তারা ঘর থেকে বের হয়েছিল, তা ছিল তাদের নৈতিক অবস্থার চেয়েও আরো বেশি নোংরা ও অপবিত্র। তারা চাচ্ছিল সত্য, সততা ও ইনসাফের ঝান্ডা যাতে বুলন্দ না হয় এবং যারা এ পথে এগিয়ে এসেছে, তাদেরকেও খতম করা যায়। এ ব্যাপারে মুসলিমদেরকে সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে যে, তোমরা তাদের মতো হয়ো না। আল্লাহ তোমাদের ঈমান ও সত্যপ্রিয়তার যে নিয়ামত দান করেছেন তার দাবী অনুযায়ী তোমাদের চরিত্র যেমন পাক-পবিত্র হতে হবে তেমনি তোমাদের যুদ্ধের উদ্দেশ্যও হতে হবে মহৎ।

জিহাদ করতে গিয়ে সীমালঙ্ঘন করা যাবে না :

وَقَاتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ الَّذِيْنَ يُقَاتِلُوْنَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوْاۤ اِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ

যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তোমরাও তাদের সাথে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো, তবে সীমলঙ্ঘন করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে ভালোবাসেন না। (সূরা বাক্বারা- ১৯০)

وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَاٰنُ قَوْمٍ اَنْ صَدُّوْكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ اَنْ تَعْتَدُوْا

তোমাদেরকে মাসজিদুল হারামে প্রবেশে বাধা দেয়ার কারণে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন কখনই সীমালঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে। (সূরা মায়েদা- ২)

জেনে বুঝে পদক্ষেপ নিতে হবে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِذَا ضَرَبْتُمْ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَتَبَيَّنُوْا وَلَا تَقُوْلُوْا لِمَنْ اَلْقٰۤى اِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًاۚ تَبْتَغُوْنَ عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَعِنْدَ اللهِ مَغَانِمُ كَثِيْرَةٌؕ كَذٰلِكَ كُنْتُمْ مِّنْ قَبْلُ فَمَنَّ اللهُ عَلَيْكُمْ فَتَبَيَّنُوْاؕ اِنَّ اللهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرًا

হে মুমিনগণ! যখন তোমরা আল্লাহর পথে বের হবে, তখন পরীক্ষা করে নেবে এবং কেউ তোমাদেরকে সালাম বললে ইহজীবনের সম্পদের আকাঙ্ক্ষায় তাকে বলো না যে, তুমি মুমিন নও; কারণ আল্লাহর নিকট প্রচুর গনিমতের সম্পদ রয়েছে। তোমরা তো পূর্বে এরূপই ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন; সুতরাং তোমরা পরীক্ষা করে নেবে। নিশ্চয় তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত। (সূরা নিসা- ৯৪)

শানে নুযূল : ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক একটি ছোট্ট বকরীর পাল চরাচ্ছিল। এমতাবস্থায় কতক মুসলিম তার কাছে আগমন করলে সে বলল, ‘‘আস্সালামু ‘আলাকুম’’। এতদসত্ত্বেও তারা তাকে পাকড়াও করল। অতঃপর তারা তাকে হত্যা করে তার এ ছোট্ট বকরীর পালটি নিয়ে নিল। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী, হা/৭৪৩৫)

আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে :

وَعَلَى اللهِ فَتَوَكَّلُوْاۤ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ

আল্লাহর উপরই নির্ভর করো, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক। (সূরা মায়েদা- ২৩)

আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِذَا لَقِيْتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوْا وَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيْرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

হে মুমিনগণ! তোমরা যখন কোন দলের সম্মুখীন হবে তখন অবিচল থাকবে এবং আল্লাহকে অধিক হারে স্মরণ করবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সূরা আনফাল- ৪৫)

সৈন্যদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে :

وَاَطِيْعُوا اللهَ وَرَسُوْلَهٗ وَلَا تَنَازَعُوْا فَتَفْشَلُوْا وَتَذْهَبَ رِيْحُكُمْ وَاصْبِرُوْاؕ اِنَّ اللهَ مَعَ الصَّابِرِيْنَ

তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে ও নিজেদের মধ্যে বিবাদ করবে না, নতুবা তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তোমরা ধৈর্যধারণ করো; নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (সূরা আনফাল- ৪৬)

শত্রুদের চেয়ে বেশি দৃঢ়তা অবলম্বন করতে হবে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اصْبِرُوْا وَصَابِرُوْا وَرَابِطُوْا وَاتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্যধারণ করো, দৃঢ়তা প্রদর্শন করো, (নিজেদের প্রতিরক্ষাকল্পে) পারস্পরিক বন্ধন মজবুত করো এবং আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা আলে ইমরান- ২০০)

ব্যাখ্যা : صَابِرُوْا (সাবিরু) এর দু’টি অর্থ হয়। (এক) কাফিররা কুফরীর ব্যাপারে যে দৃঢ়তা দেখাচ্ছে এবং কুফরীর ঝান্ডা সমুন্নত রাখার জন্য যে ধরনের কষ্ট স্বীকার করছে, তোমরা তাদের মুকাবিলায় তাদের চেয়েও বেশি দৃঢ়তা দেখাও। (দুই) তাদের মুকাবিলায় দৃঢ়তা দেখানোর ব্যাপারে পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতা করো।

শত্রুদেরকে হত্যা করতে হবে :

فَاِذَا لَقِيْتُمُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَضَرْبَ الرِّقَابِ

যখন তোমরা কাফিরদের মুখোমুখি হবে তখন (তাদের) গর্দানে আঘাত করবে। (সূরা মুহাম্মাদ- ৪)

শত্রুদেরকে বন্দী করতে হবে :

حَتّٰۤى اِذَاۤ اَثْخَنْتُمُوْهُمْ فَشُدُّوا الْوَثَاقَ

এমনকি যখন তোমরা তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করে ফেলবে, তখন (বন্দীদেরকে) শক্তভাবে বাঁধবে। (সূরা মুহাম্মাদ- ৪)

فَاِمَّا تَثْقَفَنَّهُمْ فِى الْحَرْبِ فَشَرِّدْ بِهِمْ مَّنْ خَلْفَهُمْ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُوْنَ

যুদ্ধে তোমরা যদি তাদেরকে তোমাদের আয়ত্তে পাও, তবে তাদেরকে তাদের পশ্চাতে যারা আছে তাদের হতে বিচ্ছিন্ন করে এমনভাবে বিধ্বস্ত করবে, যাতে তারা শিক্ষা লাভ করতে পারে। (সূরা আনফাল- ৫৭)

শত্রুদের ধাওয়া করতে গিয়ে দুর্বর্র্র্লতা দেখানো যাবে না :

وَلَا تَهِنُوْا فِى ابْتِغَآءِ الْقَوْمِؕ اِنْ تَكُوْنُوْا تَاْلَمُوْنَ فَاِنَّهُمْ يَاْلَمُوْنَ كَمَا تَاْلَمُوْنَۚ وَتَرْجُوْنَ مِنَ اللهِ مَا لَا يَرْجُوْنَؕ وَكَانَ اللهُ عَلِيْمًا حَكِيْمًا

শত্রু সম্প্রদায়ের সন্ধানে তোমরা দুর্বল হয়ো না। যদি তোমরা যন্ত্রণা পাও, তবে তারাও তো তোমাদের মতোই যন্ত্রণা পায়। আর তোমরা আল্লাহর নিকট যা আশা কর, তারা তা আশা করে না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়। (সূরা নিসা- ১০৪)

ব্যাখ্যা : কাফিররা বাতিলের জন্য যে পরিমাণ কষ্ট স্বীকার করছে ঈমানদাররা যদি হকের জন্য অন্তত এতটুকু কষ্টও সহ্য করতে না পারে, তাহলে তা হবে সত্যিই বিস্ময়কর। কেননা কাফিররা কেবল দুনিয়া ও তার ক্ষণস্থায়ী স্বার্থ ছাড়া অন্য কিছুই করে না। কিন্তু ঈমানদাররা এ ক্ষণস্থায়ী স্বার্থের দিকে না তাকিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর চিরন্তন পুরস্কার লাভের বৃহত্তম আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। কাজেই বৃহত্তম স্বার্থে মুমিনদেরকে অবশ্যই কাফিরদের তুলনায় একটু বেশিই কষ্ট সহ্য করতে হবে।

নেতার আদেশ অমান্য করা যাবে না :

وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللهُ وَعْدَهٗۤ اِذْ تَحُسُّوْنَهُمْ بِاِذْنِهٖ حَتّٰۤى اِذَا فَشِلْتُمْ وَتَنَازَعْتُمْ فِى الْاَمْرِ وَعَصَيْتُمْ مِّنْ ۢبَعْدِ مَاۤ اَرَاكُمْ مَّا تُحِبُّوْنَ

আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেছেন যখন তাঁর নির্দেশে তোমরা তাদেরকে হত্যা করছিলে, কিন্তু পরে তোমরা ছত্রভঙ্গ হয়েছিলে ও কর্তব্য স্থির করার ব্যাপারে বিবাদে লিপ্ত হয়েছিলে এবং তোমরা যা ভালোবেসেছিলে, তা তিনি তোমাদেরকে দেখানোর পর তাঁর আদেশের অবাধ্য হয়েছিলে। (সূরা আলে ইমরান- ১৫২)

ব্যাখ্যা : রাসূল ﷺ ওহুদের যুদ্ধের আক্রমণ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে আবদুল্লাহ ইবনে যুবারের (রাঃ) এর নেতৃত্বে ৫০ জন তীরন্দাজকে নিযুক্ত করেন এবং সুস্পষ্ট নির্দেশ না পাওয়া পর্যমত্ম এ স্থান ত্যাগ করতে নিষেধ করেন। অতঃপর যখন যুদ্ধ আরম্ভ হয়, তখন মুসলিম বাহিনী একের পর এক সাফল্য লাভ করতে থাকে এবং কুরাইশ বাহিনী পলায়ন করতে থাকে। যুদ্ধের প্রাথমিক সাফল্যের উল্লাসে মুসলিম সৈন্যবাহিনী শৃঙ্খলা হারিয়ে ফেলে এবং গিরিপথের রক্ষণাবেক্ষণের পরিবর্তে গনিমতের মাল সংগ্রহে নিয়োজিত হয়। এ সুযোগে কুরাইশ সেনাপতি খালিদ ইবনে ওয়ালীদ পেছন থেকে অতর্কিত হামলা করে মুসলিমদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

ময়দান ছেড়ে পলায়ন করা যাবে না :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِذَا لَقِيْتُمُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوْهُمُ الْاَدْبَارَ

হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কাফির বাহিনীর সম্মুখীন হবে, তখন তোমরা তাদের পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে না।

(সূরা আনফাল- ১৫)

ময়দান থেকে পলায়ন করা বড় অন্যায় :

وَمَنْ يُّوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَهٗۤ اِلَّا مُتَحَرِّفًا لِّقِتَالٍ اَوْ مُتَحَيِّزًا اِلٰى فِئَةٍ فَقَدْ بَآءَ بِغَضَبٍ مِّنَ اللهِ وَمَاْوَاهُ جَهَنَّمُؕ وَبِئْسَ الْمَصِيْرُ

সেদিন যারা যুদ্ধ কৌশল অবলম্বন কিংবা দলে স্থান নেয়া ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, সে আল্লাহর ক্রোধে পতিত হবে। তার আশ্রয়স্থল হবে জাহান্নাম; আর তা কতই না নিকৃষ্টতম প্রত্যাবর্তনস্থল। (সূরা আনফাল- ১৬)

সাময়িক পরাজয় হলেও দুঃখ করতে নেই :

وَلَا تَهِنُوْا وَلَا تَحْزَنُوْا وَاَنْتُمُ الْاَعْلَوْنَ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ

আর তোমরা দুর্বল হয়ো না এবং চিন্তিতও হয়ো না। যদি তোমরা বিশ্বাসী হও, তবে তোমরাই বিজয়ী হবে।

(সূরা আলে ইমরান- ১৩৯)

فَلَا تَهِنُوْا وَتَدْعُوْاۤ اِلَى السَّلْمِ وَاَنْتُمُ الْاَعْلَوْنَۗ وَاللهُ مَعَكُمْ وَلَنْ يَّتِرَكُمْ اَعْمَالَكُمْ

তোমরা হীনতা স্বীকার করে সন্ধির প্রস্তাব দিয়ো না; কেননা তোমরাই তো বিজয়ী থাকবে। আল্লাহ তোমাদের সাথে আছেন এবং তিনি তোমাদের আমলের প্রতিদান মোটেই কম দেবেন না। (সূরা মুহাম্মাদ - ৩৫)

ব্যাখ্যা : ঈমানদাররা বিজয়ী হলে এটা যে তাদের জন্য ভালো- এ কথা সবার জানা। কিন্তু নিজেদের উদ্দেশ্য সাধনের পথে প্রাণ দান করে যদি তারা মাটিতে বিলীন হয়ে যায়, তাহলে দুনিয়াবাসীরা এটাকে তাদের চরম ব্যর্থ বলে মনে করলেও প্রকৃতপক্ষে এটিও এক প্রকার সাফল্য। কারণ মুমিন একটি দেশ বিজয় করল কি করল না অথবা কোন সরকার প্রতিষ্ঠিত করল কি করল না, এটা তার সাফল্য ও ব্যর্থতার মাপকাঠি নয়। বরং মুমিন আল্লাহর কালিমা উঁচু করার জন্য নিজের মন-মস্তিষ্ক, দেহ ও প্রাণের সমুদয় শক্তি নিয়োজিত করেছে কি না, এটাই তার মাপকাঠি। এ কাজ যদি সে করে থাকে, তাহলে দুনিয়ার বিচারে তার ফলাফল শূন্য হলেও প্রকৃতপক্ষে সে সফলকাম।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন