hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৫৯৩
অধ্যায়- ২১ : বিরোধীদের ষড়যন্ত্র ও অপকৌশল
তারা মানুষের মধ্যে কুধারণা সৃষ্টি করত :

وَاَسَرُّوا النَّجْوَى الَّذِيْنَ ظَلَمُوْاۗ هَلْ هٰذَاۤ اِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْۚ اَفَتَأْتُوْنَ السِّحْرَ وَاَنْتُمْ تُبْصِرُوْنَ

যারা যালিম তারা গোপনে পরামর্শ করে (বলে), সে তো তোমাদের মতোই একজন মানুষ; তবুও কি তোমরা দেখেশুনে যাদুর কবলে পড়বে? (সূরা আম্বিয়া- ২, ৩)

ব্যাখ্যা : নবী ﷺ সম্পর্কে বিরোধীরা নানা ধরনের কথা বলত। কখনো বলত, এ ব্যক্তি যাদুকর। কখনো বলত, সে নিজেই কিছু বাণী রচনা করে বলছে- এটা আল্লাহর বাণী। কখনো বলত, কিছু কাব্যিক ছন্দকে সে আল্লাহর বাণী নাম দিয়ে রেখেছে। কখনো বলত, এগুলো আবার এমন কি বাণী! এগুলো তো পাগলের প্রলাপ এবং অহেতুক চিন্তা ধারার একটা আবর্জনার স্তূপ ছাড়া আর কিছুই নয়। মূলত এসব সমালোচনার উদ্দেশ্যই ছিল লোকদেরকে প্রতারিত করা। ফলে তারা কোন একটি কথার উপর অবিচল থেকে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেশ করছিল না। কিন্তু মিথ্যা প্রচারণার ফল যা হলো তা হচ্ছে, তারা নিজেরাই নবী ﷺ এর নাম দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিল। মুসলিমদের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় যে প্রচার ও পরিচিতি হওয়া সম্ভব ছিল না, কুরাইশদের এ বিরোধিতার ফলে তা সামান্য কিছু সময়েই হয়ে গেল। প্রত্যেক ব্যক্তির মনে একটি প্রশ্ন জাগল, যার বিরুদ্ধে এ বিরাট অভিযান ও মারাত্মক অভিযোগ, কে সেই ব্যক্তি? অনেকে ভাবল, তার কথা তো শোনা উচিত। আমরা তো আর দুধের শিশু নই যে, অযথা তার কথায় পথভ্রষ্ট হয়ে যাব। তুফাইল ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, আমি দাওস গোত্রের একজন কবি ছিলাম। একদা কোন কাজে মক্কায় গিয়েছিলাম। সেখানে পৌঁছতেই কুরাইশদের কয়েকজন লোক আমাকে ঘিরে ফেলল এবং নবী ﷺ এর বিরুদ্ধে আমাকে অনেক কথা বলল। ফলে তাঁর সম্পর্কে আমার মনে খারাপ ধারণা জন্মাল। আমি ভাবলাম, তাঁর কাছ থেকে দূরে থাকব। পর দিন আমি দেখলাম তিনি কা‘বাগৃহের কাছে নামায পড়ছেন। তাঁর মুখ নিঃসৃত কয়েকটি বাক্য আমার কানে পড়লে আমি অনুভব করলাম, বড় চমৎকার বাণী। মনে মনে বললাম, আমি কবি, যুবক ও বুদ্ধিমান। আমি কোন শিশু নই যে, ঠিক ও বেঠিকের মধ্যে পার্থক্য করতে পারব না। তাহলে এ ব্যক্তি কী বলেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করি না কেন? অতঃপর নবী ﷺ যখন নামায শেষ করে চলে যেতে লাগলেন তখন আমি তাঁর পিছু নিলাম। তাঁর গৃহে পৌঁছে তাঁকে বললাম, আপনার সম্প্রদায়ের লোকেরা আপনার সম্পর্কে আমাকে এসব কথা বলেছিল, ফলে আমি আপনার ব্যাপারে এতই খারাপ ধারণা করেছিলাম যে, নিজের কানে তুলা দিয়েছিলাম, যাতে আপনার কথা শুনতে না পাই। কিন্তু এখনই যে কয়েকটি বাক্য আমি আপনার মুখ থেকে শুনেছি তা আমার কাছে বড়ই চমৎকার মনে হয়েছে। আপনি কী বলেন, আমাকে একটু বিস্তারিত জানান। জবাবে নবী ﷺ আমাকে কুরআনের একটি অংশ শুনালেন। তাতে আমি এত বেশি প্রভাবিত হলাম যে, তখনই ইসলাম গ্রহণ করে ফেললাম। সেখান থেকে ফিরে গিয়ে আমি নিজের পিতা ও স্ত্রীকে মুসলিম বানালাম। এরপর নিজের গোত্রের মধ্যে অবিরাম ইসলাম প্রচারের কাজ করতে লাগলাম। এমনকি খন্দকের যুদ্ধের সময় পর্যন্ত আমার গোত্রের সত্তর আশিটি পরিবার ইসলাম গ্রহণ করে ফেলল। (ইবনে হিশাম, ২ খন্ড, ২২-২৪ পৃ:)

কুরআন প্রচারের সময় গোলমাল সৃষ্টি করত :

وَقَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لَا تَسْمَعُوْا لِهٰذَا الْقُرْاٰنِ وَالْغَوْا فِيْهِ لَعَلَّكُمْ تَغْلِبُوْنَ

কাফিররা বলে, তোমরা এ কুরআন শ্রবণ করো না; বরং তা তিলাওয়াতকালে শোরগোল সৃষ্টি করো, যাতে তোমরা বিজয়ী হতে পার। (সূরা সাজদা- ২৬)

ব্যাখ্যা : মক্কার কাফিররা যেসব পরিকল্পনার মাধ্যমে নবী ﷺ এর প্রচারকে ব্যর্থ করে দিতে চাচ্ছিল, এটি ছিল তার অন্যতম। তারা মনে করত, এরকম উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তির মুখ থেকে এমন হৃদয়গ্রাহী ভঙ্গিতে এই নজিরবিহীন বাণী যে-ই শুনবে সে-ই ঘায়েল হয়ে যাবে। অতএব তারা পরিকল্পনা করল যে, তারা এ বাণী নিজেরাও শুনবে না এবং অন্য কাউকেও শুনতে দেবে না। মুহাম্মাদ ﷺ যখনই তা শুনাতে আরম্ভ করবেন, তখনই তারা হৈ চৈ শুরু করে দেবে। তালি বাজাবে, বিদ্রূপ করবে, আপত্তি ও সমালোচনার ঝড় তুলবে এবং চিৎকার জুড়ে দেবে। তারা আশা করত, এ কৌশল অবলম্বন করে তারা আল্লাহর নবীকে ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম হবে।

নিজেরা দূরে থাকত এবং অপরকেও দূরে রাখত :

وَهُمْ يَنْهَوْنَ عَنْهُ وَيَنْاَوْنَ عَنْهُؕ وَاِنْ يُّهْلِكُوْنَ اِلَّاۤ اَنْفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُوْنَ

তারা অন্যকে তা শ্রবণ করা হতে বিরত রাখে এবং নিজেরাও তা থেকে দূরে থাকে। আর তারা শুধু নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংস করে, অথচ তারা উপলদ্ধি করতে পারে না। (সূরা আন‘আম- ২৬)

গান-বাজনার আসর বসিয়ে মানুষকে ব্যস্ত রাখত :

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّشْتَرِيْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِ اللهِ بِغَيْرِ عِلْمٍۗ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًاؕ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ

মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে, যে লোকদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অজ্ঞতাবশত অমূলক কাহিনী ক্রয় করে নেয় এবং আল্লাহর দেখানো পথকে ঠাট্টা-বিদ্রূপের বস্তু বানিয়ে নেয়। এদেরই জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। (সূরা লুক্বমান- ৬)

ব্যাখ্যা : لَهْوَ الْحَدِيْثِ ‘লাহওয়াল হাদীস’ এমন কথা, যা মানুষকে অন্য সবকিছু থেকে গাফিল করে দেয়। এ শব্দটি খারাপ ও অর্থহীন কথা অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন, কিসসা-কাহিনী, হাসি-ঠাট্টা এবং গান-বাজনা ইত্যাদি। ‘লাহওয়াল হাদীস’ কিনে নেয়ার অর্থ ঐ ব্যক্তি সত্য কথাকে বাদ দিয়ে মিথ্যা কথা গ্রহণ করে এবং সঠিক পথনির্দেশনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে এমন কথার প্রতি আগ্রহী হয়, যার মধ্যে দুনিয়াতেও কোন মঙ্গল নেই এবং আখিরাতেও নেই। ইবনে হিশাম উদ্ধৃত করেছেন, মক্কার কাফিরদের সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও যখন এ দাওয়াত সম্প্রসারিত হয়েই চলছিল তখন নযর ইবনে হারেস কুরাইশ নেতাদেরকে বলল, তোমরা যেভাবে এ ব্যক্তির মুকাবিলা করছ, তাতে কোন কাজ হবে না। নৈতিক চরিত্রের দিক দিয়ে সে ছিল তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত লোক। এখন তোমরা বলছ, সে যাদুকর ও পাগল। এ কথা কে বিশ্বাস করবে? থামো, এ রোগের চিকিৎসা আমিই করব। এরপর সে মক্কা থেকে ইয়ামান চলে যায়। সেখান থেকে অনারব বাদশাহদের কিসসা-কাহিনী সংগ্রহ করে গল্পের আসর জমিয়ে তুলতে লাগল। তার উদ্দেশ্য ছিল এভাবে লোকেরা কুরআনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং এসব কাহিনীর মধ্যে ডুবে যাবে। (সীরাতে ইবনে হিশাম, ১ম খন্ড, ৩২০-৩২১ পৃঃ)

ইবনে আববাস (রাঃ) এতে আরো বৃদ্ধি করেছেন যে, নযর এ উদ্দেশ্যে গায়িকা ও বাঁদীদেরকে কিনে এনেছিল। ফলে কোন ব্যক্তি নবী ﷺ এর কথায় প্রভাবিত হতে চলেছে বলে তার কাছে খবর এলেই সে তার জন্য একজন বাঁদী নিযুক্ত করত এবং তাকে বলত ওকে খুব ভালো করে পানাহার করাও ও গান শুনাও এবং সবসময় তোমার সাথে জড়িয়ে রেখে ওদিক থেকে তার মন ফিরিয়ে আনো। বিভিন্ন জাতির বড় বড় অপরাধীরা প্রত্যেক যুগে যেসব ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিয়ে এসেছে, সেগুলো ছিল প্রায় একই ধরনের চালবাজি। তারা জনগণকে খেলতামাশা ও নাচগানে মশগুল করতে থাকে। এভাবে তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার প্রতি নজর দেয়ার চেতনাই থাকে না এবং তারা এ কথা অনুভবই করতে পারে না যে, তাদেরকে এক ভয়াবহ ধ্বংসের দিকে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ মূর্খ লোক জানে না যে, সে কত মূল্যবান জিনিস বাদ দিয়ে ধ্বংসের জিনিস কিনে নিচ্ছে। একদিকে আছে জ্ঞান ও সঠিক পথনির্দেশনা সমৃদ্ধ আল্লাহর আয়াত, যা সে বিনামূল্যে লাভ করতে পারত; কিন্তু তবুও সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে রয়েছে সব অর্থহীন ও বাজে জিনিস, যেগুলো নিজের টাকা-পয়সা খরচ করে হলেও লাভ করছে। সে কোন ধরনের জ্ঞান ছাড়াই লোকদের পথ দেখাচ্ছে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে সরল পথ থেকে বিচ্যুত করছে। আর এভাবে সে নিজের ঘাড়ে কত বড় যুলুমের দায়ভার চাপিয়ে নিচ্ছে, তা জানে না। এ ব্যক্তি লোকদেরকে কিসসা-কাহিনী ও গান-বাজনায় মশগুল করে কুরআনের দাওয়াতকে ঠাট্টা-তামাশার মাধ্যমে উড়িয়ে দিতে চায়। লোকেরা এসব সাংস্কৃতিক অপতৎপরতায় ডুবে গিয়ে আল্লাহ, আখিরাত ও নৈতিক চরিত্রনীতির কথা শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এর পরিণামে আল্লাহ তাকে কঠিন লাঞ্ছনাকর শাস্তি দান করবেন।

গল্প-কাহিনীর আসর বসাত :

قَدْ كَانَتْ اٰيَاتِيْ تُتْلٰى عَلَيْكُمْ فَكُنْتُمْ عَلٰۤى اَعْقَابِكُمْ تَنْكِصُوْنَ مُسْتَكْبِرِيْنَ بِه ۗ سَامِرًا تَهْجُرُوْنَ

আমার আয়াতসমূহ তোমাদের নিকট পাঠ করা হতো, কিন্তু তোমরা দম্ভভরে পেছনে সরে পড়তে এবং এ বিষয়ে অর্থহীন গল্প-গুজবে লিপ্ত হতে। (সূরা মু’মিনূন- ৬৬, ৬৭)

পরকালে অন্যের গোনাহের বোঝা নিজে বহন করার প্রতিশ্রুতি দিত :

وَقَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لِلَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّبِعُوْا سَبِيْلَنَا وَلْنَحْمِلْ خَطَايَاكُمْؕ وَمَا هُمْ بِحَامِلِيْنَ مِنْ خَطَايَاهُمْ مِّنْ شَيْءٍؕ اِنَّهُمْ لَكَاذِبُوْنَ وَلَيَحْمِلُنَّ اَثْقَالَهُمْ وَاَثْقَالًا مَّعَ اَثْقَالِهِمْؗ وَلَيُسْاَلُنَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَمَّا كَانُوْا يَفْتَرُوْنَ

কাফিররা মুমিনদেরকে বলে, আমাদের পথ অনুসরণ করো তাহলে আমরা তোমাদের পাপভার বহন করব। কিন্তু তারা তো তাদের পাপভার কিছুই বহন করবে না; অবশ্যই তারা মিথ্যাবাদী। তারা নিজেদের পাপভার বহন করবে এবং সাথে আরো কিছু বোঝা। আর তারা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করে সে সম্পর্কে কিয়ামতের দিন অবশ্যই তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে। (সূরা আনকাবূত- ১২, ১৩)

নবী ﷺ এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাত :

نَحْنُ اَعْلَمُ بِمَا يَسْتَمِعُوْنَ بِه ۤ اِذْ يَسْتَمِعُوْنَ اِلَيْكَ وَاِذْ هُمْ نَجْوٰۤى اِذْ يَقُوْلُ الظَّالِمُوْنَ اِنْ تَتَّبِعُوْنَ اِلَّا رَجُلًا مَّسْحُوْرًا

যখন তারা কান পেতে তোমার কথা শুনে, তখন তারা কেন কান পেতে শুনে তা আমি ভালো করে জানি এবং এটাও জানি যে, গোপনে আলোচনাকালে যালিমরা বলে, তোমরা তো এক যাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করছ। (সূরা বনী ইসরাঈল- ৪৭)

ব্যাখ্যা : নবী ﷺ এর দাওয়াত প্রচারের জন্য কুরাইশ নেতারা প্রতিদিন তাঁকে হুমকি দিত এবং তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ব্যক্তি তাঁকে হত্যা করে ফেলারও উপায় খোঁজত। অন্যদিকে যে গৃহের কোন একজন ইসলাম গ্রহণ করত সে গৃহের সবাই তার শত্রু হয়ে যেত। মেয়েরা তাকে অভিশাপ দিত ও বদ্দু‘আ করত। আর পুরুষরা তাকে ভয় দেখাত। বিশেষ করে হাবশায় হিজরতের পর মক্কার ঘরে ঘরে বিলাপ শুরু হয়ে গিয়েছিল। কারণ এমন একটি বাড়িও পাওয়া কঠিন ছিল যেখান থেকে একজন পুরুষ বা মেয়ে হিজরত করেনি। এরা সবাই নবী ﷺ এর নামে অভিযোগ করে বলত, এ লোকটি আমাদের পরিবার ধ্বংস করে দিয়েছে। এ আয়াতে এসব কথার জবাব দেয়া হয়েছে এবং একই সঙ্গে নবী ﷺ কেও উপদেশ দেয়া হয়েছে যে, ওদের কোন পরোয়া না করে তুমি নির্ভয়ে নিজের কাজ করে যাও। কারণ শত্রুরা যতই তোমার বিরোধিতা করুক না কেন মৃত্যুর হাত থেকে তারা নিজেদেরকে বাঁচাতে পারবে না।

তারা নবী ﷺ কে বিদ্রূপের পাত্র বানিয়ে নিয়েছিল :

وَاِذَا رَاَوْكَ اِنْ يَّتَّخِذُوْنَكَ اِلَّا هُزُوًاؕ اَهٰذَا الَّذِيْ بَعَثَ اللهُ رَسُوْلًا

যখন তারা তোমাকে দেখতে পায়, তখন তারা তোমাকে কেবল ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্র হিসেবেই গ্রহণ করে এবং বলে, এ কি সে-ই, যাকে আল্লাহ রাসূল করে পাঠিয়েছেন? (সূরা ফুরক্বান- ৪১)

নবী ﷺ কে নামায পড়তেও বাধা দিত :

اَرَاَيْتَ الَّذِيْ يَنْهٰى عَبْدًا اِذَا صَلّٰى اَرَاَيْتَ اِنْ كَانَ عَلَى الْهُدٰى اَوْ اَمَرَ بِالتَّقْوٰى

আপনি কি এমন এক বান্দাকে দেখেছেন, যখন সে নামায পড়ে তখন তারা (কাফিররা) তাকে নিষেধ করে? আপনি কি এটাও লক্ষ্য করেছেন যে, যদি সে সৎপথে থাকে, অথবা আল্লাহভীতি শিক্ষা দেয় তখনও (তাকে নিষেধ করে?) (সূরা আলাক্ব, ৯-১২)

وَاَنَّهٗ لَمَّا قَامَ عَبْدُ اللهِ يَدْعُوْهُ كَادُوْا يَكُوْنُوْنَ عَلَيْهِ لِبَدًا

যখন আল্লাহর বান্দা তাঁকে ডাকার জন্য দাঁড়ায়, তখন তারা (কাফিররা) তার নিকট ভিড় জমায় (যেন হট্টগোল সৃষ্টি করে বান্দার সেই দাওয়াতকে ব্যর্থ করে দিতে পারে)। (সূরা জিন- ১৯)

তারা নবী ﷺ কে দেশ হতে বিতাড়িত করতে চেয়েছে :

وَاِنْ كَادُوْا لَيَسْتَفِزُّوْنَكَ مِنَ الْاَرْضِ لِيُخْرِجُوْكَ مِنْهَا وَاِذًا لَّا يَلْبَثُوْنَ خِلَافَكَ اِلَّا قَلِيْلًا

তারা তোমাকে স্বদেশ হতে উৎখাত করার চূড়ান্ত চেষ্টা করেছিল, যাতে তারা তোমাকে তা থেকে বহিষ্কার করতে পারে। (আর যদি তারা তোমাকে বহিষ্কার করেই ফেলত) তাহলে তোমার পর তারাও সেখানে অল্পকাল টিকে থাকতে পারত। (অর্থাৎ তোমাকে বহিষ্কার করলে তারাও ধ্বংস হয়ে যেত)। (সূরা বনী ইসরাঈল- ৭৬)

ব্যাখ্যা : বিরোধীরা নবী ﷺ কে নিজের জন্মভূমি থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করল। এরপর আট বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হতে না হতেই তিনি বিজয়ীর বেশে জন্মভূমি মক্কায় প্রবেশ করলেন। তারপর দু’বছরের মধ্যেই সমগ্র আরব ভূখন্ডকে মুশরিক শূন্য করলেন। এরপর যারাই এ দেশে বসবাস করেছে মুসলিম হিসেবেই বসবাস করেছে, মুশরিক হিসেবে কেউ সেখানে বসবাস করতে পারেনি। আল্লাহ তা‘আলা সকল নবীর ব্যাপারে একই পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। অর্থাৎ যে জাতি তাদেরকে হত্যা ও দেশান্তর করেছে, তারা আর বেশি দিন স্বস্থানে অবস্থান করতে পারেনি। হয় আল্লাহর আযাব তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে অথবা কোন শত্রুভাবাপন্ন জাতিকে তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে কিংবা সে নবীর অনুসারীদের দ্বারা তাদেরকে বিপর্যস্ত করা হয়েছে।

নবী ﷺ এর উপর যাদু করা হয়েছে :

قُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ اِذَا وَقَبَ وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِى الْعُقَدِ وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ

(হে নবী) আপনি বলুন, আমি উজ্জ্বল প্রভাতের মালিকের কাছে আশ্রয় চাই। (আশ্রয় চাই) তাঁর সৃষ্টি করা প্রতিটি জিনিসের অনিষ্ট থেকে। (আশ্রয় চাই) রাতের অন্ধকারে সংঘটিত অনিষ্ট থেকে, (বিশেষ করে) যখন রাত তার অন্ধকার বিছিয়ে দেয়। (আশ্রয় চাই) গিরায় ফুঁক দিয়ে যাদুটোনাকারিণীদের অনিষ্ট থেকে। (আমি আশ্রয় চাই) হিংসুকের অনিষ্ট থেকেও, যখন সে হিংসা করে। (সূরা ফালাক)

قُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ مَلِكِ النَّاسِ اِلٰهِ النَّاسِ مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ اَلَّذِيْ يُوَسْوِسُ فِيْ صُدُوْرِ النَّاسِ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ

(হে নবী) আপনি বলুন, আমি আশ্রয় চাই মানুষের প্রতিপালকের কাছে। (আশ্রয় চাই) মানুষের মালিকের কাছে। (আশ্রয় চাই) মানুষের একমাত্র ইলাহের কাছে। (আশ্রয় চাই) কুমন্ত্রণাকারীর অনিষ্ট থেকে, যে প্ররোচনা দিয়েই শরীর ঢাকা দেয়। যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। জ্বিনের মধ্য থেকে হোক বা মানুষের মধ্য থেকে হোক। (সূরা নাস)

ব্যাখ্যা : নবী ﷺ যখন ইসলামের দাওয়াত দেয়া আরম্ভ করলেন, তখন কাফির-মুশরিক সবাই তাঁর শত্রুতে পরিণত হয়ে গেল। এ কাজ বন্ধ করার জন্য প্রথমে তারা নবীর সাথে সন্ধির প্রস্তাব জানাল। তখন সূরা কাফিরূন নাযিল করে জানিয়ে দেয়া হলো যে, শিরক ও তাওহীদ, ইসলাম ও কুফর একসাথে চলতে পারে না। এতে তারা ব্যর্থ হওয়ায় নবী ﷺ কে হত্যা করার জন্য গোপনে পরামর্শ করতে লাগল। নবীর বংশের মুসলিমরা যাতে হত্যাকারীকে চিনতে না পারে সেজন্য তারা রাত্রে নবীকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিল। এ সময় তারা নবী ﷺ এর উপর যাদু করারও চেষ্টা করল- যাতে তিনি যাদুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান অথবা অসুস্থ হয়ে যান অথবা পাগল হয়ে যান। কীভাবে তাঁকে এবং তাঁর আদর্শকে উৎখাত করা যায় এজন্য মানুষ শয়তান ও জিন শয়তান চতুর্দিক হতে উঠে পড়ে তার বিরুদ্ধে লাগল। এ সঙ্কটময় মুহূর্তে আল্লাহ তা‘আলা এ দু’টি সূরা নাযিল করে নবী ﷺ কে বলে দিলেন যে, এ অবস্থায় আপনি একমাত্র আল্লাহর সাহায্য কামনা করুন, তারই কাছে আশ্রয় চান। তিনিই আপনার হেফাজতকারী।

হুদায়বিয়া সন্ধির পর মহানবী ﷺ যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন ৭ম হিজরীর মুহাররম মাসে খায়বার হতে একদল ইয়াহুদি মদিনায় আগমন করে বিখ্যাত যাদুকর লাবীদের সাথে সাক্ষাৎ করল। তারা বলল, আমরা মুহাম্মাদকে ধ্বংস করার জন্য বহুবার যাদু করার চেষ্টা করেছি; কিন্তু তাতে সফল হতে পারিনি। আমরা তোমাকে তিনটি আশরাফি (স্বর্ণমূদ্রা) দিচ্ছি, তুমি তাঁর উপর খুব শক্ত আকারের যাদু করো। এ সময় এক ইয়াহুদি ছেলে মহানবীর খাদিম ছিল। তারা তার সাথে যোগাযোগ করে নবীর চিরুনির একটি অংশ সংগ্রহ করে নিল, যার সাথে নবী ﷺ এর চুলও লাগানো ছিল। লাবীদ বা অন্য বর্ণনানুযায়ী তার যাদুকর বোন এ চিরুনি ও চুলের সঙ্গে এগার গিরা বিশিষ্ট এক গাছি সূতা ও সূঁচ বিশিষ্ট একটি মোমের পুতলিসহ খেজুর গাছের ছড়ার আবরণে রেখে যারওয়ান কূপের নিচে একটি পাথরের তলায় চাপা দিয়ে রেখেছিল। নবী ﷺ এর উপর এ যাদুর প্রভাব পড়ল, তিনি শারীরিক দিক দিয়ে দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়লেন। মুসনাদে আহমদে বর্ণিত আছে, নবীর এ অসুস্থতা ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। অবশেষে নবী ﷺ আয়েশা (রাঃ) এর ঘরে অবস্থান করে আল্লাহর নিকট পর পর দু‘আ করলেন। এক সময় তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। জেগে উঠে আয়েশা (রাঃ) কে বললেন, আমি আল্লাহর কাছে যা জানতে চেয়েছিলাম তা আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। আয়েশা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, সেটা কী? নবী ﷺ বললেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম- দু’জন ফেরেশতা মানুষের আকৃতি ধারণ করে একজন আমার মাথার দিকে ও অপরজন পায়ের দিকে বসলেন। একজন জিজ্ঞেস করলেন, এর কী হয়েছে? অপরজন উত্তর দিলেন, তাঁর উপর যাদু করা হয়েছে। আবার জিজ্ঞেস করলেন, কে যাদু করেছে? বলা হলো লাবীদ। জিজ্ঞেস করা হলো, কিসে? বলা হলো- চিরুনি ও চুলে একটি পুরুষ খেজুর গাছের আবরণের মধ্যে। বলা হলো কোথায়? উত্তর হল, যারওয়ান কূপের তলায় পাথরের নিচে। বলা হলো, এখন কী করা যায়? উত্তর হলো, পানি শুকিয়ে তা বের করতে হবে। অতঃপর নবী ﷺ কয়েকজন সাহাবীকে সাথে নিয়ে কূপের কাছে গেলেন এবং পানি শুকিয়ে জিনিসটা বের করলেন। তারপর জিবরাঈল (আঃ) এসে নবী ﷺ কে বললেন, আপনি ফালাক ও নাস সূরা দু’টি পড়ুন। নবী ﷺ একটি করে আয়াত পড়তে লাগলেন- এতে একেকটি গিরা খুলতে লাগল, এভাবে এগারটি আয়াত পড়া শেষ করলেন এতে এগারটি গিরা খুলে গেল এবং সকল সূঁচ পুতলি হতে বের হয়ে গেল। এবার নবী ﷺ এর শরীরে শক্তি ফিরে আসল, তিনি সুস্থ হয়ে গেলেন। নবী ﷺ লাবীদকে ডেকে এনে কৈফিয়ত চাইলে সে তার দোষ স্বীকার করে নিল। তিনি তাকে ক্ষমা করে দিলেন। কারণ ব্যক্তিগত কারণে তিনি কখনো কারো কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতেন না। কোন কোন সাহাবী আরজ করলেন, হে আল্লাহর নবী! আমরা এ খবীসকে হত্যা করব না কেন? তিনি বললেন, আল্লাহ আমাকে রোগমুক্ত করে দিয়েছেন- আমি কারো কষ্টের কারণ হতে চাই না। (ইবনে কাসীর, ৮ম খন্ড ৫৩৯ পৃঃ)

নবী ﷺ কে দাওয়াত দিয়ে হত্যা করতে চেয়েছে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اذْكُرُوْا نِعْمَتَ اللهِ عَلَيْكُمْ اِذْ هَمَّ قَوْمٌ اَنْ يَّبْسُطُوْاۤ اِلَيْكُمْ اَيْدِيَهُمْ فَكَفَّ اَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْۚ وَاتَّقُوا اللهَؕ وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ

হে মুমিনগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো, যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের বিরুদ্ধে হাত উত্তোলন করতে চেয়েছিল, তখন আল্লাহ তাদের হাত তোমাদের দিক হতে নিবৃত্ত করেছিলেন। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, আর মুমিনদের তো আল্লাহর উপরই নির্ভর করা উচিত। (সূরা মায়েদা- ১১)

নবী ﷺ কে গ্রেফতার এবং হত্যা করার চেষ্টা করেছে :

وَاِذْ يَمْكُرُ بِكَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لِيُثْبِتُوْكَ اَوْ يَقْتُلُوْكَ اَوْ يُخْرِجُوْكَؕ وَيَمْكُرُوْنَ وَيَمْكُرُ اللهُؕ وَاللهُ خَيْرُ الْمَاكِرِيْنَ

স্মরণ করো, যখন কাফিররা তোমাকে বন্দী করা বা হত্যা করা অথবা নির্বাসিত করার জন্য তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। আর তারা ষড়যন্ত্র করে, অপরদিকে আল্লাহও ষড়যন্ত্র করেন; কিন্তু আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ ষড়যন্ত্রকারী। (সূরা আনফাল- ৩০)

ব্যাখ্যা : এটা এমন সময়ের কথা যখন কুরাইশদের এ আশঙ্কা নিশ্চিত বিশ্বাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিল যে, এখন মুহাম্মাদ ﷺ মদিনায় চলে যাবেন। তখন তারা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল যে, এ ব্যক্তি মক্কা থেকে বের হয়ে গেলে বিপদ আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। কাজেই তারা তাঁর ব্যাপারে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছার জন্য দারুন নাদওয়ায় জাতীয় নেতৃবৃন্দের একটি সভা ডাকল। কীভাবে এ বিপদের পথ রোধ করা যায়, এ ব্যাপারে তারা পরামর্শ করল। এক দলের মতামত ছিল, এ ব্যক্তির হাতে ও পায়ে লোহার বেড়ি পরিয়ে এক জায়গায় বন্দী করে রাখা হোক। মৃত্যুর পূর্বে আর তাকে মুক্তি দেয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এ মত গৃহীত হলো না। কারণ তারা বলল, আমরা তাকে বন্দী করে রাখলেও তার যেসব সাথি কারাগারের বাইরে থাকবে, তারা কাজ করে যেতে থাকবে এবং সামান্য একটু শক্তি অর্জন করতে পারলেই তাঁকে মুক্ত করার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করবে না। দ্বিতীয় দলের মত ছিল, একে আমাদের এখান থেকে বের করে দাও। তারপর যখন সে আমাদের মধ্যে থাকবে না তখন সে কোথায় থাকে ও কী করে তা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই? কিন্তু এ মতটিও গৃহিত হলো না। তারা বলল, এ ব্যক্তি হচ্ছে কথার যাদুকর। কথার মাধ্যমে মানুষের মন গলিয়ে ফেলার ব্যাপারে তার জুড়ি নেই। সে এখান থেকে বের হয়ে গেলে না জানি আরবের অন্যান্য গোত্রকে নিজের অনুসারী বানিয়ে নেবে। তারপর প্রচুর পরিমাণ ক্ষমতা অর্জন করে আরবের কেন্দ্রস্থলে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তোমাদের উপর আক্রমণ করে বসবে। সবশেষে আবু জেহেল মত প্রকাশ করল যে, আমাদের প্রত্যেক গোত্র থেকে একজন করে উচ্চ বংশীয় তরবারি চালনায় পারদর্শী যুবক বাছাই করে নিতে হবে। তারা সবাই মিলে একই সঙ্গে মুহাম্মাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে এবং তাকে হত্যা করবে। এভাবে মুহাম্মাদকে হত্যা করার দায়িত্বটি সকল গোত্রের উপর ভাগাভাগি হয়ে যাবে। আর সবার সঙ্গে লড়াই করা বনু আবদে মানাফের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়বে। কাজেই বাধ্য হয়ে তারা রক্তমূল্য গ্রহণ করতে রাজী হয়ে যাবে। এ মতটি সবাই পছন্দ করল। হত্যা করার জন্য লোকদের নাম নির্ধারিত হলো। হত্যা করার সময়ও নির্ধারিত হলো। এমনকি যে রাতটি হত্যার জন্য নির্ধারিত করা হয়েছিল সে রাতে ঠিক সময়ে হত্যাকারীরাও যথাস্থানে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু তার আগেই নবী ﷺ বের হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আলী (রাঃ) কে নিজের বিছানায় শুইয়ে আবু বকর (রাঃ) কে সঙ্গে নিয়ে ‘‘সাওর’’ নামক গুহায় গিয়ে আশ্রয় নিলেন। এরপর মদিনায় চলে যান। ফলে একেবারে শেষ সময় তাদের পরিকল্পিত কৌশল বানচাল হয়ে যায়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন