hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৮৩
অধ্যায়- ৭ : যিনার শাস্তি
যিনা প্রমাণ করার জন্য চারজন পুরুষ সাক্ষ্য দিতে হবে :

وَاللَّاتِيْ يَأْتِيْنَ الْفَاحِشَةَ مِنْ نِّسَآئِكُمْ فَاسْتَشْهِدُوْا عَلَيْهِنَّ اَرْبَعَةً مِّنْكُمْ

তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তাদের উপর তোমাদের মধ্য হতে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করবে। (সূরা নিসা- ১৫)

যিনার প্রাথমিক বিধান ছিল মহিলাদেরকে বন্দী করে রাখা :

فَاِنْ شَهِدُوْا فَاَمْسِكُوْهُنَّ فِى الْبُيُوْتِ حَتّٰى يَتَوَفَّاهُنَّ الْمَوْتُ اَوْ يَجْعَلَ اللهُ لَهُنَّ سَبِيْلًا

অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য দেয়, তবে তাদেরকে ঘরে আবদ্ধ রাখবে, যতক্ষণ না তাদের মৃত্যু হয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য কোন পথনির্দেশ দেন। (সূরা নিসা- ১৫)

নারী-পুরুষ উভয়েই শাস্তি পাবে :

وَاللَّذَانِ يَأْتِيَانِهَا مِنْكُمْ فَاٰذُوْهُمَاۚ فَاِنْ تَابَا وَاَصْلَحَا فَاَعْرِضُوْا عَنْهُمَاؕ اِنَّ اللهَ كَانَ تَوَّابًا رَّحِيْمًا

তোমাদের মধ্যে যে দু’জন এ কুকর্মে লিপ্ত হয় তাদেরকে শাস্তি দেবে, তবে যদি তারা তাওবা করে এবং সংশোধন হয়ে যায়, তবে তাদের বিষয়টি এড়িয়ে যাও। নিশ্চয় আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়াময়। (সূরা নিসা- ১৬)

বিবাহিত ক্রীতদাসীর শাস্তি স্বাধীন নারীর অর্ধেক :

فَاِذَاۤ اُحْصِنَّ فَاِنْ اَتَيْنَ بِفَاحِشَةٍ فَعَلَيْهِنَّ نِصْفُ مَا عَلَى الْمُحْصَنَاتِ مِنَ الْعَذَابِ

আর যদি তারা (ক্রীতদাসীরা) বিবাহিতা হওয়ার পরও ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তবে তাদের শাস্তি হবে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক। (সূরা নিসা- ২৫)

চূড়ান্ত বিধান হচ্ছে অবিবাহিত হলে উভয়কে একশ’ বেত্রাঘাত করতে হবে :

اَلزَّانِيَةُ وَالزَّانِيْ فَاجْلِدُوْا كُلَّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍ

ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী প্রত্যেককে একশ’ বেত্রাঘাত করবে। (সূরা নূর- ২)

ব্যাখ্যা : আর যিনাকারী নারী-পুরুষ যদি বিবাহিত হয় তবে তাদেরকে হত্যা করতে হবে।

শাস্তি প্রয়োগে কোন দয়া দেখানো যাবে না :

وَلَا تَأْخُذْكُمْ بِهِمَا رَأْفَةٌ فِيْ دِيْنِ اللهِ اِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ

আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হও। (সূরা নূর- ২)

জনসমাবেশে শাস্তি প্রয়োগ করতে হবে :

وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَآئِفَةٌ مِّنَ الْمُؤْمِنِيْنَ

মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। (সূরা নূর- ২)

ব্যাখ্যা : ঘোষণা দিয়ে সাধারণ লোকের সামনে শাস্তি দিতে হবে। এর ফলে একদিকে অপরাধী অপমানিত হবে এবং অন্যদিকে সাধারণ মানুষ শিক্ষা লাভ করবে। ইসলামী আইনে শাস্তির তিনটি উদ্দেশ্য থাকে। আর তা হলো : (এক) অপরাধী থেকে তার যুলুম ও বাড়াবাড়ির প্রতিশোধ নেয়া এবং সে অন্য ব্যক্তি বা সমাজের প্রতি যে অন্যায় করেছে তার কিছুটা স্বাদ আস্বাদন করানো। (দুই) তাকে পুনরায় অপরাধ করা থেকে বিরত রাখা। (তিন) তার শাস্তিকে শিক্ষণীয় করে তুলা, যাতে করে সমাজের খারাপ প্রবণতার অধিকারী অন্য লোকদের শিক্ষা হয়ে যায় এবং তারা যেন এ ধরনের কোন অপরাধ করার সাহস না পায়। এ ছাড়াও প্রকাশ্যে শাস্তি দেয়ার আরো একটি কল্যাণ হচ্ছে, এ অবস্থায় যেন শাসকরা শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে অহেতুক সুবিধা প্রদান বা অহেতুক কঠোরতা প্রদর্শন করার সাহস না দেখাতে পারে।

যিনাকারী পরকালে দ্বিগুণ শাস্তি ভোগ করবে :

وَمَنْ يَّفْعَلْ ذٰلِكَ يَلْقَ اَثَامًا يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيْهٖ مُهَانًا

যে এগুলো করে, সে শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে হীন অবস্থায় স্থায়ী হবে। (সূরা ফুরক্বান- ৬৮, ৬৯)

ব্যাখ্যা : ইসলাম মানবসমাজকে যিনার আশঙ্কা থেকে বাঁচানোর জন্য শুধুমাত্র দন্ডবিধি আইনের উপর নির্ভর করে না, বরং তার জন্য ব্যাপক আকারে সংস্কার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করে। আর এ দন্ডবিধি আইনকে নির্ধারণ করেছে সর্বশেষ উপায় হিসেবে। এর উদ্দেশ্য এ নয় যে, লোকেরা এ অপরাধ করে যেতেই থাকুক এবং তাদেরকে বেত্রাঘাত করার জন্য দিনরাত তাদের উপর নজর রাখা হোক। বরং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, লোকেরা যেন এ অপরাধ না করে এবং কাউকে শাস্তি দেয়ার সুযোগই না পাওয়া যায়। ইসলাম সবার আগে মানুষের প্রবৃত্তির সংশোধন করে। তার মনের মধ্যে বসিয়ে দেয় অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী এবং সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক আল্লাহর ভয়, যা তার মধ্যে আখিরাতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুভূতি জাগিয়ে তুলে। তার মধ্যে আল্লাহর আইনের আনুগত্য করার প্রেরণা সৃষ্টি করে। আর এগুলোই হচ্ছে ঈমানের অপরিহার্য দাবী। তারপর বার বার তাকে এ মর্মে সতর্ক করে দেয় যে, মহান আল্লাহর কাছে যিনা ও সতীত্বহীনতা এত মারাত্মক গোনাহের অন্তর্ভুক্ত, যেগুলো সম্পর্কে কিয়ামতের দিন কঠোরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং এর মাধ্যমে জাহান্নামের কঠিন শাস্তির মুখোমুখী হতে হবে। তারপর ইসলাম মানুষের জন্য সামর্থ্যানুযায়ী বিবাহ করা এবং বিবাহের যাবতীয় সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। এক স্ত্রীতে তৃপ্ত না হলে চারটি পর্যন্ত বৈধ স্ত্রী রাখার সুযোগ দেয়। স্বামী-স্ত্রীর মনের মিল না হলে স্বামীর জন্য তালাক ও স্ত্রীর জন্য ‘খুলা’ তালাকের সুযোগ দেয়। আর উভয়ের মাঝে মনোমালিন্যের সময় পারিবারিক সালিশ থেকে শুরু করে সরকারি আদালত পর্যন্ত আপীল করার সুযাগ থাকে। এর ফলে দু’জনের মধ্যে সমঝোতা হয়ে যেতে পারে; নতুবা উভয়ে বিবাহ বন্ধন হতে মুক্ত হয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো অন্য কোথাও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।

তারপর ইসলাম সমাজ থেকে এমনসব কার্যক্রম নির্মূল করে দেয়, যেগুলো যিনার আগ্রহ ও তার উদ্যোগ সৃষ্টি করে এবং এর জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। যিনার শাস্তি বর্ণনা করার একবছর আগে সূরা আহযাবে মেয়েদেরকে গৃহ থেকে বের হওয়ার সময় চাদর মুড়ি দিয়ে এবং ঘোমটা টেনে বের হওয়ার হুকুম দেয়া হয়েছিল। মুসলিম মেয়েদের জন্য যে নবীর গৃহ ছিল আদর্শ গৃহ সেখানে বসবাসকারী মহিলাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, তারা যেন নিজেদের সৌন্দর্য ও সাজসজ্জা প্রদর্শন করে বের না হয়। এমনকি বাইরের পুরুষরা যদি তাদের কাছ থেকে কোনকিছু নিতে চায়, তবে যেন পর্দার আড়াল থেকে নেয়। দেখতে দেখতে এ আদর্শ সমস্ত মুমিন মহিলাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কেননা তাদের কাছে জাহেলী যুগের নির্লজ্জ মহিলারা নয় বরং নবী ﷺ এর স্ত্রী ও কন্যাগণই ছিলেন অনুসরণযোগ্য। অনুরূপভাবে আইনের শাস্তি নির্ধারণ করার আগে নারী ও পুরুষের অবাধ মেলামেশা বন্ধ করা হয়, নারীদের সাজসজ্জা করে বাইরে বের হওয়া বন্ধ করা হয় এবং যে সমস্ত কার্যক্রম ও উপায়-উপকরণ যিনার পথ দেখিয়ে দেয়, সেগুলোর দরজাও বন্ধ করে দেয়া হয়। এসবের পর যিনার শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে দৃষ্টি বিনিময় এবং সৌন্দর্যের প্রতি আকর্ষণ যিনা পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারে। সাথে সাথে নারীদেরকে নিজেদের ঘরে মাহরাম ও গায়রে মাহরাম আত্মীয়দের মধ্যে পার্থক্য করার এবং গায়রে মাহরামদের সামনে সেজেগুজে না আসার হুকুম দেয়া হয়েছে। এসব কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের পরও যেসব দুষ্ট প্রকৃতির লোক বৈধ সুযোগ বাদ দিয়ে অবৈধ পথ অবলম্বন করে নিজেদের প্রবৃত্তির কামনা পূর্ণ করে, তাদেরকে চরম শাস্তি দেয়ার জন্যই এ শাস্তি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এ শাস্তি নিছক একজন অপরাধীর শাস্তি নয়, বরং এর মাধ্যমে এটিও প্রমাণিত হয় যে, মুসলিমসমাজ ব্যভিচারীদের অবাধ বিচরণস্থল নয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন