hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১২২
অধ্যায়- ২ : ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার গুরুত্ব
আল্লাহর জমিনে তাঁর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা ফরয :

شَرَعَ لَكُمْ مِّنَ الدِّيْنِ مَا وَصّٰى بِهٖ نُوْحًا وَّالَّذِيْۤ اَوْحَيْنَاۤ اِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهٖۤ اِبْرَاهِيْمَ وَمُوْسٰى وَعِيْسٰۤى اَنْ اَقِيْمُوا الدِّيْنَ وَلَا تَتَفَرَّقُوْا فِيْهِ

তিনি তোমাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন ঐ দ্বীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন নূহকে এবং যে ব্যাপারে আমি তোমাকে ওহী করেছিলাম। আর যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই বলে যে, তোমরা এ দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করো এবং তাতে মতভেদ করো না। (সূরা শূরা- ১৩)

এ আয়াত থেকে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ জানা যায় তা হলো :

(১) নবী ও রাসূলদের মধ্যে কেউই কোন নতুন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন না। প্রথম থেকেই সকল নবী-রাসূল আল্লাহর পক্ষ থেকে একই দ্বীন পেশ করে আসছেন। মুহাম্মাদ ﷺ তিনিও একই দ্বীন পেশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে সর্বপ্রথম নূহ (আঃ) এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মহাপ্লাবনের পর তিনিই ছিলেন বর্তমান মানবজাতির সর্বপ্রথম নবী। তারপর নবী ﷺ এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি শেষ নবী।

(২) আল্লাহই সারা বিশ্বের সবকিছুর মালিক, তিনিই মানুষের প্রকৃত অভিভাবক। মানুষের মধ্যে যে বিষয়েই মতভেদ হোক না কেন তার ফায়সালা করা তাঁরই কাজ। এখন মৌলিকভাবে যেহেতু আল্লাহই মালিক, অভিভাবক ও শাসক, তাই মানুষের জন্য আইন ও বিধিবিধান রচনার অধিকারও একমাত্র তাঁরই। আর এভাবেই তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন।

(৩) সকল নবী-রাসূলকে দ্বীনের বিধান দেয়ার সাথে সাথে এ নির্দেশও দেয়া হয়েছিল যে, اَقِيْمُوا الدِّيْنَ (আক্বীমুদ দ্বীন) অর্থাৎ ‘‘তোমরা দ্বীনকে কায়েম করো’’ বা ‘‘দ্বীনকে কায়েম রাখো’’ এ দু’টি অর্থই সঠিক। اِقَامَةٌ (ইকামাতুন) শব্দের অর্থ কায়েম করা ও কায়েম রাখা উভয়টিই হয়। নবী-রাসূলগণ এ দু’টি কাজ করতেই আদিষ্ট হয়েছিলেন। তাঁদের প্রথম দায়িত্ব ও কর্তব্য ছিল, যেখানে দ্বীন কায়েম নেই সেখানে তা কায়েম করা। আর দ্বিতীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য ছিল, যেখানে তা কায়েম আছে সেখানে তা কায়েম রাখা। এ কথা সুস্পষ্ট যে, কোন জিনিসকে কায়েম রাখার প্রশ্ন তখনই আসে যখন তা কায়েম থাকে। অন্যথায় প্রথমে তা কায়েম করতে হবে, তারপর তা যাতে কায়েম থাকে সেজন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কায়েম করা কথাটির অর্থ শুধু কোন জিনিসের প্রচার করাই নয়, বরং তা যথাযথভাবে কার্যে পরিণত করা, তার প্রচলন ঘটানো এবং কার্যত চালু করা। যেমন- অমুক ব্যক্তি তার রাজত্ব কায়েম করেছে এর অর্থ এ হয় না যে, সে তার রাজত্বের দিকে আহবান জানিয়েছে। বরং তার অর্থ হয়, সে দেশের লোকদেরকে নিজের অনুগত করে নিয়েছে এবং সরকারের সকল বিভাগে এমন শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেছে যে, দেশের সমস্ত ব্যবস্থাপনা তার নির্দেশানুসারে চলতে শুরু করেছে।

(৪) নবী-রাসূলদেরকে যখন এ দ্বীন কায়েম করা ও রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, তখন তার অর্থ শুধু এতটুকুই ছিল না যে, তাঁরা নিজেরাই কেবল এ দ্বীনের বিধান মেনে চলবেন এবং অন্যদের কাছে তার তাবলীগ বা প্রচার করবেন। বরং তার অর্থ এটাও যে, মানুষ যখন তা মেনে নেবে তখন আরো অগ্রসর হয়ে তাদের মাঝে পুরো দ্বীনের প্রচলন ঘটাবেন। দাওয়াত ও তাবলীগ হলো এ কাজের প্রাথমিক স্তর। এ স্তর ছাড়া দ্বিতীয় স্তর আসতেই পারে না। আরো লক্ষণীয় বিষয় এই যে, এ নির্দেশের মধ্যে দ্বীনের দাওয়াত ও তাবলীগকে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বানানো হয়নি বরং দ্বীনকে কায়েম করা ও কায়েম রাখাকেই উদ্দেশ্য বানানো হয়েছে। দাওয়াত ও তাবলীগ অবশ্যই এ উদ্দেশ্য সাধনের মাধ্যম, কিন্তু এটা তার মূল উদ্দেশ্য নয়।

(৫) শরীয়াতের আদেশ-নিষেধ ও বিধিবিধানকে সুস্পষ্ট ভাষায় দ্বীন বলা হয়েছে। আল্লাহ যেসব গোনাহের কারণে জাহান্নামের ভয় দেখিয়েছেন, যেসব অপরাধকে শাস্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তার পথ রুদ্ধ করার কাজও অবশ্যই দ্বীন হিসেবে গণ্য। কুরআন মুসলিম জাতিকে কুফরী শাসনব্যবস্থার অধীনে থেকে দ্বীনের কিছু বিধান মেনে চলতে শেখায় না। বরং প্রকাশ্যে নিজের শাসন ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান পালন করা কেবল তখনই সম্ভব হতে পারে, যখন সরকারের ক্ষমতা ইসলামপন্থীদের হাতে থাকে। কুরআনে যাকাত আদায় ও বণ্টনের যে নির্দেশাবলি দেয়া হয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে এমন একটি সরকারের প্রয়োজনিয়তা পেশ করেছে, যে একটি নির্দিষ্ট নিয়মানুসারে যাকাত আদায় করে হকদারদের কাছে পৌঁছানোর দায়িত্ব নেবে। কুরআনে সুদ বন্ধ করার যে আদেশ দেয়া হয়েছে এবং সুদী কারবারে তৎপর লোকদের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তা তখনই বাস্তব রূপ লাভ করতে পারে, যখন দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ইসলামের বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হবে। কুরআনে হত্যাকারী থেকে কিসাস গ্রহণের নির্দেশ, চুরির জন্য হাত কাটার নির্দেশ এবং ব্যভিচার ও ব্যভিচারের অপবাদ আরোপের জন্য হদ (শাস্তি) জারী করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশ এজন্য দেয়া হয়নি যে, যারা এগুলো বাস্তবায়ন করবে তাদেরকে পুলিশ ও বিচারালয়ের অধীনে থাকতে হবে।

আল্লাহর এ বিধানটি বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি তাবলীগ ও তলোয়ার উভয়টির সাহায্যেই গোটা আরবকে বশীভূত করেছিলেন এবং বিস্তারিত শরীয়াত বা বিধিবিধানসহ এমন একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় আদর্শ কায়েম করেছিলেন, যা আকীদা-বিশ্বাস ও ইবাদাত থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত কর্মকান্ড, সামাজিক বিষয়াদি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতি, ন্যায়বিচার, যুদ্ধ ও সন্ধিসহ জীবনের সকল বিভাগে পরিব্যাপ্ত ছিল।

(৬) দ্বীন প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেয়ার পর আল্লাহ এ আয়াতে সর্বশেষ যে কথা বলেছেন তা হচ্ছে وَلَا تَتَفَرَّقُوْا فِيْهِ অর্থাৎ দ্বীনের মধ্যে কোন বিভেদ সৃষ্টি করো না কিংবা তাতে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ো না। দ্বীনের অকাট্য উক্তিসমূহের বিকৃত ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে নতুন কিছু আবিষ্কার করা, আবার দ্বীনের উক্তি ও বক্তব্যসমূহ রদবদল করে তা বিকৃত করা- এ ধরনের আচরণের কারণেই নবী-রাসূলদের উম্মতদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। অতঃপর এসব ছোট ছোট দলের অনুসৃত পথই ক্রমান্বয়ে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। যার অনুসারীদের মধ্যে বর্তমানে এ ধারণাটুকু পর্যন্তও বর্তমান নেই যে, এক সময় তাদের মূল ছিল একই। দ্বীনের মাসআলা উদ্ভাবন করার ক্ষেত্রে জ্ঞানী ও পন্ডিতদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে যে মতভেদ সৃষ্টি হয় এবং আল্লাহর কিতাবের ভাষার মধ্যে আভিধানিক ও ব্যাকরণের নিয়মানুসারে যেসব মতভেদ সৃষ্টি হয় তার সাথে এই বিভেদের কোন সম্পর্ক নেই।

(৭) নবীদেরকে দুনিয়ায় পাঠানো হয়েছিল دِيْنُ اللهِ (আল্লাহর আইন) জারী করার জন্য। যারা ধারণা করে যে, নবীদের দাওয়াত শুধুমাত্র সাধারণ ধর্মীয় অর্থে আল্লাহর উপাসনা করা এবং নিছক কতিপয় ধর্মীয় আকীদা-বিশ্বাস ও রীতিনীতি মেনে চলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। মানুষের সমাজ-সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন-আদালত এবং এ ধরনের অন্যান্য পার্থিব বিষয়াদির সাথে দ্বীনের কোন সম্পর্ক নেই। আর যদি সম্পর্ক থেকেও থাকে, তাহলে উল্লেখিত বিষয়াদি সম্পর্কে দ্বীনের নির্দেশাবলি নিছক ঐচ্ছিক পর্যায়ভুক্ত। এগুলো কার্যকর করতে পারলে ভালো, অন্যথায় মানুষের নিজ হাতে গড়া বিধান মেনে চলাতে কোন ক্ষতি নেই- এটা দ্বীন সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত চিন্তা ছাড়া আর কিছুই নয়। দীর্ঘদিন যাবৎ মুসলিমদের মধ্যে এর অনুশীলন চলছে। মুসলিমদেরকে ইসলামী জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম থেকে বিমুখ করে দেয়ার ক্ষেত্রে এ ধারণাটিই বেশি দায়ী। এ ভুলের কারণে মুসলিমরা কুফরী ও জাহেলী জীবনব্যবস্থায় কেবল সন্তুষ্টই হয়নি; বরং এ ব্যবস্থার কলকব্জায় পরিণত হতে এবং নিজেরাই তাকে পরিচালিত করতে উদ্যোগী হয়েছে। যেভাবে নামায, রোযা ও হজ্জ দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত, ঠিক তেমনি যে আইনের ভিত্তিতে দেশ ও সমাজব্যবস্থা পরিচালনা করা হয় তাও দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই اِنَّ الدِّيْنَ عِنْدَ اللهِ الْاِسْلَامُ আয়াতে যে দ্বীনের প্রতি আনুগত্যের দাবী জানানো হয়েছে তার অর্থ শুধু নামায-রোযাই নয়; বরং সমগ্র সমাজব্যবস্থা এর আওতায় এসে যায়।

দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্যই আল্লাহ রাসূল পাঠিয়েছিলেন :

هُوَ الَّذِيْۤ اَرْسَلَ رَسُوْلَهٗ بِالْهُدٰى وَدِيْنِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهٗ عَلَى الدِّيْنِ كُلِّهٖؕ وَكَفٰى بِاللهِ شَهِيْدًا

তিনিই ঐ সত্তা, যিনি তাঁর রাসূলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, যাতে তিনি ঐ দ্বীনকে অন্যান্য সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করতে পারেন। আর এ বিষয়ে সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। (সূরা ফাতহ- ২৮)

ব্যাখ্যা : আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসূল এজন্য আসেন না যে, কেবল তাঁর রিসালাতের প্রতি ঈমান আনতে হবে এবং ইচ্ছেমতো যে কারো আনুগত্য করা যাবে। রাসূল আগমনের উদ্দেশ্যই এই যে, তিনি জীবন-যাপনের জন্য যে আইনকানুন নিয়ে এসেছেন, দুনিয়ার সমস্ত আইনকানুন বাদ দিয়ে কেবল তাঁরই আইনের অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে তিনি যে বিধান দেন অন্যান্য সকল বিধান ত্যাগ করে শুধুমাত্র সে বিধানকেই কার্যকর করতে হবে। যদি কেউ এ কাজে আগ্রহী না হয়, তাহলে তাঁর রাসূলকে রাসূল হিসেবে মেনে নেয়া অর্থহীন হয়ে পড়ে। নবী ﷺ আল্লাহর কাছ থেকে যে দ্বীন এনেছেন এবং আল্লাহর পথপ্রদর্শনের ভিত্তিতে যে পদ্ধতি অনুযায়ী কাজ করেছেন, তা চিরস্থায়ীভাবে মুসলিমদের জন্য চূড়ান্ত সনদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা মুসলিমদের দায়িত্ব :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا كُوْنُوْا قَوَّامِيْنَ لِلّٰهِ شُهَدَآءَ بِالْقِسْطِ وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَاٰنُ قَوْمٍ عَلٰۤى اَلَّا تَعْدِلُوْاؕ اِعْدِلُوْا هُوَ اَقْرَبُ لِلتَّقْوٰى وَاتَّقُوا اللهَؕ اِنَّ اللهَ خَبِيْرٌ ۢبِمَا تَعْمَلُوْنَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর জন্য সত্য ও ন্যায়ের উপর সাক্ষী হিসেবে অবিচল থাকো। মনে রেখো, বিশেষ কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদেরকে এমনভাবে প্ররোচিত না করে যে, এর ফলে তোমরা ন্যায় ও ইনসাফের পথ থেকে সরে আসবে। তোমরা ইনসাফ করো, কারণ এ কাজটি আল্লাহকে ভয় করে চলার অধিক নিকটতর পন্থা। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গভাবে অবহিত। (সূরা মায়েদা- ৮)

যালিমরা ইসলামী নেতৃত্বের উপযুক্ত হতে পারে না :

وَاِذِ ابْتَلٰۤى اِبْرَاهِيْمَ رَبُّهٗ بِكَلِمَاتٍ فَاَتَمَّهُنَّؕ قَالَ اِنِّيْ جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ اِمَامًاؕ قَالَ وَمِنْ ذُرِّيَّتِيْؕ قَالَ لَا يَنَالُ عَهْدِى الظَّالِمِيْنَ

স্মরণ করো, যখন তোমার প্রতিপালক ইবরাহীমকে কতিপয় বাক্য দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে তিনি তা পূর্ণ করেছিলেন এবং বলেছিলেন, নিশ্চয় আমি তোমাকে মানবজাতির নেতা বানাব। অতঃপর তিনি (ইবরাহীম আঃ) বলেছিলেন, আমার বংশধরদের হতেও (মানুষের নেতা মনোনীত করুন)। আল্লাহ বললেন, আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। (সূরা বাক্বারা- ১২৪)

আল্লাহ মানবরচিত মতবাদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন :

وَاَنَّ هٰذَا صِرَاطِيْ مُسْتَقِيْمًا فَاتَّبِعُوْهُۚ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيْلِهٖؕ ذٰلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهٖ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ

এ পথই আমার সরল পথ। সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ করো এবং অন্য কোন পথের অনুসরণ করো না, নতুবা তোমরা তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দেন, যেন তোমরা সাবধান হও। (সূরা আন‘আম- ১৫৩)

ثُمَّ جَعَلْنَاكَ عَلٰى شَرِيْعَةٍ مِّنَ الْاَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ اَهْوَآءَ الَّذِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ

এরপর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দ্বীনের বিশেষ শরীয়াতের উপর; সুতরাং তুমি তার অনুসরণ করো এবং অজ্ঞদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। (সূরা জাসিয়া- ১৮)

আল্লাহর দ্বীন বাস্তবায়ন ছাড়া সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা যায় না :

قُلْ يَاۤ اَهْلَ الْكِتَابِ لَسْتُمْ عَلٰى شَيْءٍ حَتّٰى تُقِيْمُوا التَّوْرَاةَ وَالْاِنْجِيْلَ وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْكُمْ مِّنْ رَّبِّكُمْ

বলো, হে আহলে কিতাব! যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তাওরাত, ইঞ্জিল ও তোমাদের প্রতি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা নাযিল হয়েছে তা প্রতিষ্ঠিত না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত (মনে করতে হবে যে) তোমরা কোনকিছুর উপরই প্রতিষ্ঠিত নও। (সূরা মায়েদা- ৬৮)

আল্লাহর দ্বীন বাস্তবায়নের মাধ্যমেই জাতীয় উন্নতি সম্ভব :

وَلَوْ اَنَّهُمْ اَقَامُوا التَّوْرَاةَ وَالْاِنْجِيْلَ وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْهِمْ مِّنْ رَّبِّهِمْ لَاَكَلُوْا مِنْ فَوْقِهِمْ وَمِنْ تَحْتِ اَرْجُلِهِمْؕ مِنْهُمْ اُمَّةٌ مُّقْتَصِدَةٌؕ وَكَثِيْرٌ مِّنْهُمْ سَآءَ مَا يَعْمَلُوْنَ

যদি তারা তাওরাত, ইঞ্জিল ও তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রতিষ্ঠিত করত, তাহলে তারা তাদের উপর থেকে ও পায়ের নীচ হতে খাদ্য লাভ করত। তাদের মধ্যে একদল রয়েছে যারা মধ্যমপন্থী; কিন্তু তাদের অধিকাংশ যা করে, তা কতই না নিকৃষ্ট। (সূরা মায়েদা- ৬৬)

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অর্জনের জন্য আল্লাহ দু‘আ শিখিয়েছেন :

وَقُلْ رَّبِّ اَدْخِلْنِيْ مُدْخَلَ صِدْقٍ وَّاَخْرِجْنِيْ مُخْرَجَ صِدْقٍ وَّاجْعَلْ لِّيْ مِنْ لَّدُنْكَ سُلْطَانًا نَّصِيْرًا

বলো, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে কল্যাণের সাথে প্রবেশ করাও এবং কল্যাণের সাথে বের করাও। আর তোমার নিকট হতে আমাকে সাহায্যকারী শক্তি দান করো। (সূরা বনী ইসরাঈল- ৮০)

ব্যাখ্যা : এ আয়াত থেকে জানা যায় যে, ইসলাম দুনিয়ায় যে সংশোধন চায় তা শুধুমাত্র ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমে হতে পারে না, বরং তাকে কার্যকর করার জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতারও প্রয়োজন হয়। তারপর আল্লাহ নিজেই যখন তাঁর নবীকে এ দু‘আ শিখিয়েছেন তখন এ থেকে এ কথাও প্রমাণিত হয় যে, দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও শরীয়াতের আইন প্রবর্তন করা এবং আল্লাহ প্রদত্ত দন্ডবিধি জারী করার জন্য রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের প্রত্যাশা করা এবং এজন্য প্রচেষ্টা চালানো শুধু জায়েযই নয় বরং কাঙ্ক্ষিত ও প্রশংসিত। অন্যদিকে যারা এ প্রচেষ্টা ও প্রত্যাশাকে বৈষয়িক স্বার্থপূজা ও দুনিয়াদারী বলে আখ্যায়িত করে তারা ভুলের মধ্যে অবস্থান করছে। কোন ব্যক্তি যদি নিজের জন্য রাষ্ট্রক্ষমতা লাভ করতে চায়, তাহলে তাকে বৈষয়িক স্বার্থপূজা বলা যায়। কিন্তু আল্লাহর দ্বীনের জন্য রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের প্রত্যাশা করা বৈষয়িক স্বার্থপূজা নয় বরং আল্লাহর আনুগত্যের প্রত্যক্ষ দাবী।

যালিমরা ইসলামী নেতৃত্বের উপযুক্ত হতে পারে না :

وَاِذِ ابْتَلٰۤى اِبْرَاهِيْمَ رَبُّهٗ بِكَلِمَاتٍ فَاَتَمَّهُنَّؕ قَالَ اِنِّيْ جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ اِمَامًاؕ قَالَ وَمِنْ ذُرِّيَّتِيْؕ قَالَ لَا يَنَالُ عَهْدِى الظَّالِمِيْنَ

স্মরণ করো, যখন তোমার প্রতিপালক ইবরাহীমকে কতিপয় বাক্য দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে তিনি তা পূর্ণ করেছিলেন এবং বলেছিলেন, নিশ্চয় আমি তোমাকে মানবজাতির নেতা বানাব। অতঃপর তিনি (ইবরাহীম আঃ) বলেছিলেন, আমার বংশধরদের হতেও (মানুষের নেতা মনোনীত করুন)। আল্লাহ বললেন, আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। (সূরা বাক্বারা- ১২৪)

আল্লাহ মানবরচিত মতবাদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন :

وَاَنَّ هٰذَا صِرَاطِيْ مُسْتَقِيْمًا فَاتَّبِعُوْهُۚ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيْلِهٖؕ ذٰلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهٖ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ

এ পথই আমার সরল পথ। সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ করো এবং অন্য কোন পথের অনুসরণ করো না, নতুবা তোমরা তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দেন, যেন তোমরা সাবধান হও। (সূরা আন‘আম- ১৫৩)

ثُمَّ جَعَلْنَاكَ عَلٰى شَرِيْعَةٍ مِّنَ الْاَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ اَهْوَآءَ الَّذِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ

এরপর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দ্বীনের বিশেষ শরীয়াতের উপর; সুতরাং তুমি তার অনুসরণ করো এবং অজ্ঞদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। (সূরা জাসিয়া- ১৮)

আল্লাহর দ্বীন বাস্তবায়ন ছাড়া সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা যায় না :

قُلْ يَاۤ اَهْلَ الْكِتَابِ لَسْتُمْ عَلٰى شَيْءٍ حَتّٰى تُقِيْمُوا التَّوْرَاةَ وَالْاِنْجِيْلَ وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْكُمْ مِّنْ رَّبِّكُمْ

বলো, হে আহলে কিতাব! যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তাওরাত, ইঞ্জিল ও তোমাদের প্রতি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা নাযিল হয়েছে তা প্রতিষ্ঠিত না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত (মনে করতে হবে যে) তোমরা কোনকিছুর উপরই প্রতিষ্ঠিত নও। (সূরা মায়েদা- ৬৮)

আল্লাহর দ্বীন বাস্তবায়নের মাধ্যমেই জাতীয় উন্নতি সম্ভব :

وَلَوْ اَنَّهُمْ اَقَامُوا التَّوْرَاةَ وَالْاِنْجِيْلَ وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْهِمْ مِّنْ رَّبِّهِمْ لَاَكَلُوْا مِنْ فَوْقِهِمْ وَمِنْ تَحْتِ اَرْجُلِهِمْؕ مِنْهُمْ اُمَّةٌ مُّقْتَصِدَةٌؕ وَكَثِيْرٌ مِّنْهُمْ سَآءَ مَا يَعْمَلُوْنَ

যদি তারা তাওরাত, ইঞ্জিল ও তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রতিষ্ঠিত করত, তাহলে তারা তাদের উপর থেকে ও পায়ের নীচ হতে খাদ্য লাভ করত। তাদের মধ্যে একদল রয়েছে যারা মধ্যমপন্থী; কিন্তু তাদের অধিকাংশ যা করে, তা কতই না নিকৃষ্ট। (সূরা মায়েদা- ৬৬)

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অর্জনের জন্য আল্লাহ দু‘আ শিখিয়েছেন :

وَقُلْ رَّبِّ اَدْخِلْنِيْ مُدْخَلَ صِدْقٍ وَّاَخْرِجْنِيْ مُخْرَجَ صِدْقٍ وَّاجْعَلْ لِّيْ مِنْ لَّدُنْكَ سُلْطَانًا نَّصِيْرًا

বলো, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে কল্যাণের সাথে প্রবেশ করাও এবং কল্যাণের সাথে বের করো। আর তোমার নিকট হতে আমাকে সাহায্যকারী শক্তি দান করো। (সূরা বনী ইসরাঈল- ৮০)

ব্যাখ্যা : এ আয়াত থেকে জানা যায় যে, ইসলাম দুনিয়ায় যে সংশোধন চায় তা শুধুমাত্র ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমে হতে পারে না, বরং তাকে কার্যকর করার জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতারও প্রয়োজন হয়। তারপর আল্লাহ নিজেই যখন তাঁর নবীকে এ দু‘আ শিখিয়েছেন তখন এ থেকে এ কথাও প্রমাণিত হয় যে, দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও শরীয়াতের আইন প্রবর্তন করা এবং আল্লাহ প্রদত্ত দন্ডবিধি জারী করার জন্য রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের প্রত্যাশা করা এবং এজন্য প্রচেষ্টা চালানো শুধু জায়েযই নয় বরং জরুরি ও প্রশংসিত। অন্যদিকে যারা এ প্রচেষ্টা ও প্রত্যাশাকে বৈষয়িক স্বার্থপূজা ও দুনিয়াদারী বলে আখ্যায়িত করে তারা ভুলের মধ্যে অবস্থান করছে। কোন ব্যক্তি যদি নিজের জন্য রাষ্ট্রক্ষমতা লাভ করতে চায়, তাহলে তাকে বৈষয়িক স্বার্থপূজা বলা যায়। কিন্তু আল্লাহর দ্বীনের জন্য রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের প্রত্যাশা করা বৈষয়িক স্বার্থপূজা নয়; বরং আল্লাহর আনুগত্যের প্রত্যক্ষ দাবী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন