hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২০৬
অধ্যায়- ১০ : সামাজিক শান্তি বজায় রাখার উপায়
বংশ ও জাতীয়তার সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত থাকতে হবে :

يَا اَيُّهَا النَّاسُ اِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِّنْ ذَكَرٍ وَّاُنْثٰى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوْبًا وَّقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوْاؕ اِنَّ اَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ اَتْقَاكُمْؕ اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ

হে মানবজাতি! আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি। তারপর আমি তোমাদের জন্য জাতি ও গোত্র বানিয়েছি, যাতে করে (এর মাধ্যমে) তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। কিন্তু আল্লাহর কাছে সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি হচ্ছে সে, যে (আল্লাহকে) বেশি ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং সবকিছুর খবর রাখেন। (সূরা হুজুরাত- ১৩)

ব্যাখ্যা : এ আয়াতে গোটা মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করে একটি বিরাট গোমরাহীর সংশোধন করা হচ্ছে, যা যুগ যুগ ধরে বিশ্বব্যাপী বিপর্যয় সৃষ্টির কারণ হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে। বংশ, বর্ণ, ভাষা, দেশ এবং জাতীয়তার সংকীর্ণতা প্রাচীনতম যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের চারপাশে ছোট ছোট বৃত্ত টেনেছে। এ বৃত্তের মধ্যে জন্মগ্রহণকারীদেরকে সে তার আপনজন এবং বাইরে জন্মগ্রহণকারীদেরকে পর মনে করেছে। এর ফলে মানবসমাজ ঘৃণা, শত্রুতা, অবমাননা এবং নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ আয়াতটিতে আল্লাহ তা‘আলা সকল মানুষকে সম্বোধন করে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক সত্য বর্ণনা করেছেন :

(এক) তোমাদের সবার মূল উৎস এক। মাত্র একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে তোমাদের গোটা জাতি অস্তিত্ব লাভ করেছে। বর্তমানে পৃথিবীতে তোমাদের যত বংশধারা দেখা যায়, প্রকৃতপক্ষে তা একটিমাত্র প্রাথমিক বংশধারার বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা। এক আল্লাহই তোমাদের স্রষ্টা। তোমরা একই উপকরণ দ্বারা সৃষ্টি হয়েছ, একই নিয়মে জন্মলাভ করেছ। তাছাড়া তোমরা একই পিতামাতার সন্তান। এ সৃষ্টি ধারার মধ্যে কোথাও এ বিভেদ এবং উঁচু-নীচুর কোন ভিত্তি বর্তমান নেই; অথচ তোমরা এ ভ্রান্ত ধারণায় নিমজ্জিত রয়েছ।

(দুই) মূল উৎসের দিক দিয়ে এক হওয়া সত্ত্বেও তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত হওয়া ছিল একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। এ কথা স্পষ্ট যে, সমগ্র বিশ্বে গোটা মানবসমাজের একটিমাত্র বংশধারা আদৌ হতে পারত না। বংশ বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন বংশধারার সৃষ্টি হওয়া অপরিহার্য ছিল। অনুরূপ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বসতি স্থাপনের পর বর্ণ, দেহাকৃতি, ভাষা এবং জীবন-যাপন রীতিও অবশ্যম্ভাবীরূপে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু প্রকৃতিগত এ পার্থক্য ও ভিন্নতার দাবী এ নয় যে, এর ভিত্তিতে উঁচু-নীচু, ইতর-ভদ্র এবং শ্রেষ্ঠ ও নিকৃষ্ট হওয়ার ভেদাভেদ সৃষ্টি করা হবে, এক বর্ণের লোক অন্য বর্ণের লোকদের হেয় মনে করবে, এক জাতি অন্য জাতির উপর নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব কায়েম করবে এবং মানবাধিকারের ক্ষেত্রে এক জাতি অন্য জাতির উপর অগ্রাধিকার লাভ করবে। যে কারণে সৃষ্টিকর্তা মানব গোষ্ঠীসমূহকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিন্যস্ত করেছিলেন তা হচ্ছে, তাদের মধ্যে পারস্পরিক পরিচয় জানা। এ পদ্ধতিতে একটি পরিবার, একটি গোত্র এবং একটি জাতির লোক মিলে একটি সম্মিলিত সমাজ গড়তে এবং জীবনের বিভিন্ন ব্যাপারে একে অপরের সাহায্যকারী হতে পারবে। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা যাকে পারস্পরিক পরিচয়ের উপায় বানিয়েছেন মানুষ তাকে গর্ব ও ঘৃণার উপকরণ বানিয়ে নিয়েছে এবং এ বিষয়টিকে অত্যাচার ও সীমালঙ্ঘনের পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে।

(তিন) মানুষের মধ্যে মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের বুনিয়াদ যদি কিছু থেকে থাকে, তাহলে তা হচ্ছে নৈতিক মর্যাদা। জন্মগতভাবে সমস্ত মানুষ সমান। যে মূল জিনিসের ভিত্তিতে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির উপর মর্যাদা লাভ করতে পারে তা হচ্ছে, সে অন্য সবার তুলনায় অধিক আল্লাহভীরু, মন্দ থেকে দূরে অবস্থানকারী এবং নেকীর পথ অবলম্বনকারী। এরূপ ব্যক্তি যে কোন বংশ, যে কোন জাতি এবং যে কোন দেশেরই হোক না কেন সে সম্মান ও মর্যাদার পাত্র। যার অবস্থা এর বিপরীত, সর্বাবস্থায়ই সে একজন নিকৃষ্টতর মানুষ। সে সাদা হোক বা কালো হোক এবং প্রাচ্যে জন্মলাভ করুক বা পাশ্চাত্যে তাতে কিছু আসে যায় না।

এ সত্য কথাগুলোই কুরআনের একটি ছোট্ট আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। রাসূল ﷺ তাঁর বিভিন্ন উক্তিতেও এটা বর্ণনা করেছেন। মক্কা বিজয়ের সময় কা‘বাঘর তাওয়াফের পর তিনি যে বক্তৃতা করেছিলেন, তাতে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর, যিনি তোমাদের থেকে জাহেলিয়াতের দোষ-ত্রুটি ও অহংকার দূর করে দিয়েছেন। হে লোকেরা! সমস্ত মানুষ দু’ভাগে বিভক্ত। (এক) নেককার ও পরহেযগার, যারা আল্লাহর দৃষ্টিতে মর্যাদার অধিকারী। (দুই) পাপী ও দূরাচারী, যারা আল্লাহর দৃষ্টিতে নিকৃষ্ট। অন্যথায় সমস্ত মানুষই আদমের সন্তান। আর আদম মাটির সৃষ্টি। (তিরমিযী, হা/৩৯৫৬)

প্রকৃতপক্ষে গুণাবলির দিক দিয়ে কে উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ আর কে নীচু মর্যাদার মানুষ তা আল্লাহই ভালো জানেন। মানুষ নিজেরা যে মানদন্ড বানিয়ে রেখেছে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। হতে পারে দুনিয়াতে যাকে অনেক উচ্চমর্যাদার মানুষ মনে করা হয় আল্লাহর চূড়ান্ত ফায়সালায় সে অতি নীচু স্তরের মানুষ হিসেবে সাব্যস্ত হবে এবং যাকে অতি নগণ্য মনে করা হয় সে সেখানে অনেক উচ্চমর্যাদা লাভ করবে। দুনিয়ার সম্মান ও লাঞ্ছনা আসল বিষয় নয়, বরং আল্লাহর কাছে কে সম্মানী আর কে লাঞ্ছিত সেটাই আসল বিষয়। তাই যেসব গুণাবলি মানুষকে আল্লাহর কাছে মর্যাদা লাভের উপযুক্ত বানাতে পারে, সেসব গুণাবলি অর্জনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত।

হিংসা, শত্রুতা ও সংঘাত থেকে দূরে থাকতে হবে :

وَلَا تَتَمَنَّوْا مَا فَضَّلَ اللهُ بِه بَعْضَكُمْ عَلٰى بَعْضٍؕ لِلرِّجَالِ نَصِيْبٌ مِّمَّا اكْتَسَبُوْاؕ وَلِلنِّسَآءِ نَصِيْبٌ مِّمَّا اكْتَسَبْنَؕ وَاسْاَلُوا اللهَ مِنْ فَضْلِه ؕ اِنَّ اللهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمًا

আল্লাহ যা দ্বারা তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন তোমরা তার লালসা করো না। পুরুষরা যা অর্জন করে তাতে তাদের প্রাপ্য অংশ রয়েছে এবং নারীরা যা অর্জন করে তাতে তাদেরও প্রাপ্য অংশ রয়েছে। সুতরাং তোমরা আল্লাহর নিকট তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো, নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সূরা নিসা- ৩২)

ব্যাখ্যা : এ আয়াতে একটি বিরাট গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক বিধান দেয়া হয়েছে। এটি যথাযথভাবে কার্যকর করা হলে সমাজ জীবনে মানুষ বিপুল শান্তি ও নিরাপত্তা লাভে সক্ষম হবে। আল্লাহ সব মানুষকে সমান করে সৃষ্টি করেননি। তাদের মধ্যে অসংখ্য দিক দিয়ে পার্থক্য সৃষ্টি করে রেখেছেন। কেউ সুশ্রী, কেউ কুশ্রী। কেউ সুকণ্ঠের অধিকারী, কেউ কর্কশভাষী। কেউ শক্তিশালী, কেউ দুর্বল। কেউ পূর্ণাঙ্গ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অধিকারী, আবার কেউ পঙ্গু। কাউকে শারীরিক ও মানসিক শক্তির মধ্যে কোন একটি শক্তি বেশি দেয়া হয়েছে, আবার কাউকে দেয়া হয়েছে অন্য কোন শক্তি। কাউকে অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থায় সৃষ্টি করা হয়েছে, আবার কাউকে খারাপ অবস্থায়। কাউকে বেশি উপায় উপকরণ দেয়া হয়েছে, কাউকে দেয়া হয়েছে কম। এ তারতম্যের ভিত্তিতেই মানুষের সমাজ-সংস্কৃতি বৈচিত্র্যমন্ডিত হয়েছে। কিন্তু যেখানেই এ পার্থক্যের স্বাভাবিক সীমানা ছাড়িয়ে মানুষ তার উপর নিজের কৃত্রিম পার্থক্যের বোঝা চাপিয়ে দেয়, সেখানেই এক ধরনের বিপর্যয় দেখা দেয়। আর যেখানে এ পার্থক্যকে বিলুপ্ত করে দেয়ার জন্য প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালানো হয়, সেখানে আরো বেশি বিপর্যয় দেখা দেয়। মানুষের মধ্যে একটি বিশেষ মানসিকতা দেখা যায় যে, নিজের চেয়ে কাউকে অগ্রসর দেখতে পেলে সে অস্থির হয়ে পড়ে। তাই সমাজ জীবনে হিংসা-বিদ্বেষ, শত্রুতা, দ্বন্দ্ব ও সংঘাত ইত্যাদি সৃষ্টি হয়। এরই ফলে যে বস্তু সে পায়নি বা বৈধ পথে অর্জন করতে পারে না, তাকে অবৈধ পথে লাভ করার জন্য ওঠেপড়ে লাগে। আল্লাহ এ আয়াতে মানুষদেরকে এ মানসিকতা থেকে দূরে থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহর বক্তব্যের উদ্দেশ্য হচ্ছে, অন্যদের প্রতি তিনি যে অনুগ্রহ করেছেন তুমি তার আকাঙ্ক্ষা করো না। তবে আল্লাহর কাছে অনুগ্রহের জন্য দু‘আ করো। তিনি নিজের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী তোমার জন্য যে অনুগ্রহটি উপযোগী মনে করবেন, সেটিই তোমাকে দান করবেন। পুরুষ ও মেয়েদের মধ্য থেকে আল্লাহ যাকে যা কিছু দিয়েছেন তা ব্যবহার করে যে যেরকম নেকী বা গোনাহ অর্জন করবে, সে আল্লাহর কাছে ঐ অনুযায়ী শাস্তি বা পুরস্কার লাভ করবে।

খারাপ কাজের বিস্তার হতে দেয়া যাবে না :

اِنَّ الَّذِيْنَ يُحِبُّوْنَ اَنْ تَشِيْعَ الْفَاحِشَةُ فِى الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ فِى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِؕ وَاللهُ يَعْلَمُ وَاَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ

যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মান্তিক শাস্তি। আল্লাহ সবকিছুই জানেন, তোমরা জান না। (সূরা নূর- ১৯)

ব্যাখ্যা : فَاحِشَةٌ (ফাহিশা) তথা অশ্লীলতা হলো, যা চরিত্রহীনতাকে উৎসাহিত করে। যেমন- উত্তেজনামূলক কিসসা-কাহিনী, কবিতা, গান, ছবি ও খেলাধূলা ইত্যাদি। তাছাড়া এমন ধরনের ক্লাব, হোটেল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এর আওতায় এসে যায়, যেখানে নারী-পুরুষের মিলিত নৃত্য ও আমোদফূর্তির ব্যবস্থা করা হয়। কুরআনে এদের সবাইকে অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করেছে এবং প্রত্যেকের জন্য তাদের অপরাধের পরিমাপ অনুযায়ী শাস্তিও নির্ধারণ করে দিয়েছে। এইডস, নানা ধরনের যৌন রোগ, যুবক-যুবতীদের চারিত্রিক বিপর্যয়, ইভটিজিং, ধর্ষণ, হত্যা ইত্যাদি অশ্লীলতার ফলল। অশ্লীলতার কারণে ব্যক্তি নিজে তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেই, তদুপরি দেশ ও জাতিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কাজেই অশ্লীলতার এসব উপায়-উপকরণের পথ রোধ করা একটি ইসলামী রাষ্ট্রের অপরিহার্য কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন যেসব কাজকে অপরাধ বলে গণ্য করেছে এবং তা সম্পাদনকারীকে শাস্তিলাভের যোগ্য বলে ফায়সালা দিয়েছে, ইসলামী রাষ্ট্রের দন্ডবিধি আইনে সেসব কাজকে শাস্তিযোগ্য কাজ বলে আখ্যায়িত করতে হবে এবং পুলিশের হস্তক্ষেপের ব্যবস্থা করতে হবে। অতঃপর কুরআনে যে অপরাধের যে শাস্তি যেভাবে প্রয়োগ করতে বলেছে, সে অপরাধের শাস্তি সেভাবেই প্রয়োগ করতে হবে।

একদল আরেক দলের বিদ্রূপ করবে না :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّنْ قَوْمٍ عَسٰۤى اَنْ يَّكُوْنُوْا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَآءٌ مِّنْ نِّسَآءٍ عَسٰۤى اَنْ يَّكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ

হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কোন সম্প্রদায় যেন অপর কোন সম্প্রদায়কে নিয়ে ঠাট্টা না করে। হতে পারে, তারাই এদের চেয়ে উত্তম আবার কোন মহিলা সম্প্রদায়ও যেন অপর কোন মহিলা সম্প্রদায়কে নিয়ে ঠাট্টা না করে। হতে পারে, তারাই এদের চেয়ে বেশি উত্তম। (সূরা হুজুরাত- ১১)

ব্যাখ্যা : এ আয়াতে এমনসব বড় বড় অন্যায়ের পথ রুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে, যা সাধারণত লোকদের পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়। পারস্পরিক শত্রুতা সৃষ্টির মূল কারণ হলো- একে অপরের ইজ্জতের উপর হামলা করা, মনোকষ্ট দেয়া, অপরের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা এবং একে অপরের দোষ-ত্রুটি তালাশ করা। এসব কারণ অন্যান্য কারণের সাথে মিশে বড় বড় ফিতনা সৃষ্টি করে। ইসলামী আইন প্রত্যেক ব্যক্তির এমন একটি মৌলিক মর্যাদার স্বীকৃতি দেয়, যার উপর কোন আক্রমণ চালানোর অধিকার নেই। এক্ষেত্রে হামলা বাস্তবতাভিত্তিক হোক বা না হোক এবং যার উপর আক্রমণ করা হয়, জনসমক্ষে তার কোন সুপরিচিত মর্যাদা থাক বা না থাক তাতে কিছু যায় আসে না। একজন ব্যক্তি অপর একজন ব্যক্তিকে অপমান করেছে শুধু এতটুকু বিষয়ই তাকে অপরাধী প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট। তবে এ অপমান করার যদি কোন শরীয়াতসম্মত বৈধতা থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।

বিদ্রূপ করার অর্থ কেবল হাসি-তামাশা করাই নয়। বরং কারো কোন কাজের অভিনয় করা, তার প্রতি ইঙ্গিত করা, তার কথা, কাজ বা পোশাক নিয়ে হাসাহাসি করা অথবা তার কোন দোষের দিকে এমনভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করা, যাতে অন্যরা হাসাহাসি করে। এ ধরনের হাসি-তামাশা ও ঠাট্টা-বিদ্রূপের পেছনে নিশ্চিতভাবে নিজের বড়ত্ব প্রদর্শন এবং অন্যকে অপমান করা ও হেয় করে দেখানোর মনোবৃত্তি কাজ করে। যা নৈতিকভাবে অত্যন্ত দোষণীয়। তাছাড়া এভাবে অন্যের মনে কষ্ট হয়, যার কারণে সমাজে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ কারণেই এ কাজকে হারাম করে দেয়া হয়েছে। যে কারণে নারী ও পুরুষদের বিষয় আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে তা হচ্ছে, ইসলাম এমন সমাজ আদৌ সমর্থন করে না, যেখানে নারী-পুরুষ অবাধে মেলামেশা করতে পারে অথবা মাহরাম নয় এমন নারী-পুরুষ কোন মজলিসে একত্র হয়ে পরস্পর হাসি-তামাশা করবে। তাই মুসলিম সমাজের একটি মজলিসে পুরুষ কোন নারীকে উপহাস করবে কিংবা নারী কোন পুরুষকে উপহাস করবে এমন বিষয় কল্পনার যোগ্যও মনে করা হয়নি।

একে অপরকে খারাপ নামে ডাকবে না :

وَلَا تَلْمِزُوْاۤ اَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوْا بِالْاَلْقَابِؕ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوْقُ بَعْدَ الْاِيْمَانِۚ وَمَنْ لَّمْ يَتُبْ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظَّالِمُوْنَ

তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে খারাপ নাম নিয়েও সম্বোধন করো না; ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা কতই না জঘন্য কাজ! যারা এ ধরনের আচরণ থেকে ফিরে না আসে, (প্রকৃতপক্ষে) তারাই যালিম। (সূরা হুজুরাত- ১১)

ব্যাখ্যা : لَمْزٌ (লামযুন) শব্দটির মধ্যে বিদ্রূপ ও কুৎসা ছাড়াও আরো অর্থ রয়েছে। যেমন- উপহাস করা, অপবাদ আরোপ করা, দোষ বের করা এবং খোলাখুলি বা গোপনে অথবা ইশারা-ইঙ্গিত করে কাউকে তিরস্কারের লক্ষ্যস্থল বানানো। এসব কাজও যেহেতু পারস্পরিক সুসম্পর্ক নষ্ট করে এবং সমাজে বিপর্যয় সৃষ্টি করে তাই এসব হারাম করে দেয়া হয়েছে। ‘নিজেকে নিজে বিদ্রূপ করো না’ কথাটি দ্বারা এ কথার ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, অন্যদের বিদ্রূপ ও উপহাসকারীরা প্রকৃতপক্ষে নিজেকেই বিদ্রূপ ও উপহাস করে। কেননা যতক্ষণ কারো মনে কারো সম্পর্কে কুধারণা না জন্মাবে ততক্ষণ তার মুখ অন্যদের কুৎসা রটনার জন্য খুলবে না। এভাবে এ মানসিকতা লালনকারী অন্যদের আগে নিজেকেই কুকর্মের আস্তানা বানিয়ে ফেলে। তারপর যখন সে অন্যদের উপর আঘাত করে তখন তার অর্থ দাঁড়ায়, সে তার নিজের উপর আঘাত করার জন্য অন্যদেরকে আহবান করছে। ভদ্রতার কারণে কেউ যদি তার আক্রমণ এড়িয়ে চলে তাহলে তা ভিন্ন কথা। কিন্তু সে যার দুর্ণাম করল সেও পাল্টা তার উপর আক্রমণ করুক এ দরজা সে নিজেই খুলে দিয়েছে। এ নির্দেশের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কাউকে যেন এমন নামে ডাকা না হয় অথবা এমন উপাধি না দেয়া হয়, যা তার অপছন্দ এবং যা দ্বারা তার অমর্যাদা হয়। যেমন কাউকে ফাসিক বা মুনাফিক বলা। কাউকে খোঁড়া, অন্ধ অথবা কানা বলা। কাউকে তার নিজের কিংবা মা-বাপের অথবা বংশের কোন দোষ-ত্রুটির সাথে সম্পর্কিত করে উপাধি দেয়া। কোন ব্যক্তি, বংশ, আত্মীয়তা অথবা গোষ্ঠীর এমন নাম দেয়া, যার মধ্যে তার নিন্দা ও অপমানের দিকটি বিদ্যমান। তবে যেসব উপাধি পরিচয়ের সহায়ক এমনসব উপাধি এ নির্দেশের মধ্যে পড়ে না। ঈমানদার হওয়া সত্ত্বেও কটুভাষী হওয়া এবং অসৎ ও অন্যায় কাজের জন্য বিখ্যাত হওয়া এটা একজন ঈমানদারের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ব্যাপার। কেউ আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস করা সত্ত্বেও যদি এরূপ হীন বিশেষণে ভূষিত হয়, তাহলে তা তার জন্য অতি দুঃখজনক বিষয়।

বেশি বেশি ধারণা করবে না :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اجْتَنِبُوْا كَثِيْرًا مِّنَ الظَّنِّ اِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ اِثْمٌ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা বেশি বেশি ধারণা করা থেকে বিরত থাকো। কারণ, কতক ধারণা গোনাহের কাজ। (সূরা হুজুরাত- ১২)

ব্যাখ্যা : একেবারেই ধারণা করতে নিষেধ করা হয়নি। বরং খুব বেশি ধারণার ভিত্তিতে কাজ করতে এবং সবরকম ধারণার অনুসরণ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অনেক ধারণা গোনাহের পর্যায়ে পড়ে। যেমন- বিনা কারণে কারো প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা কিংবা এমন লোকদের ব্যাপারে খারাপ ধারণা পোষণ করা, যাদের বাহ্যিক অবস্থা তাদের সৎ হওয়ার প্রমাণ দেয়। অনুরূপভাবে কোন ব্যক্তির কোন কথা বা কাজে যদি ভালো ও মন্দের সমান সম্ভাবনা থাকে; কিন্তু ভালো সম্ভাবনার দিকটি বাদ দিয়ে খারাপ সম্ভাবনার দিকটি গ্রহণ করার কারণ খারাপ ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। এ সতর্কীকরণ দ্বারা বুঝা যায় যে, যখনই কোন ব্যক্তি ধারণার ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত নিতে যায় তখন তার ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে দেখা উচিত যে, সে যে ধারণা করছে তা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত কি না। যারা আল্লাহকে ভয় করে তারা এতটুকু সাবধানতা অবশ্যই অবলম্বন করবে। লাগামহীন ধারণা পোষণ কেবল তাদেরই কাজ যারা আল্লাহর ভয় থেকে মুক্ত এবং আখিরাতের জবাবদিহি সম্পর্কে উদাসীন।

একে অপরের দোষ না খোঁজা :

وَلَا تَجَسَّسُوْا

আর তোমরা একে অপরের গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না। (সূরা হুজুরাত- ১২)

ব্যাখ্যা : মানুষের গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না। একজন আরেকজনের দোষ খুঁজো না। খারাপ ধারণার বশবর্তী হয়ে এ আচরণ করা হোক কিংবা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য হোক অথবা শুধু নিজের কৌতুহল নিবারণের জন্য করা হোক শরীয়াতের দৃষ্টিতে তা সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ। অন্যদের যেসব বিষয় লোকচক্ষুর অন্তরালে আছে তা খোঁজাখুজি করা এবং কার কী দোষ-ত্রুটি আছে ও কার কী কী দুর্বলতা গোপন আছে কোন বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া জানার চেষ্টা করা কোন মুমিনের কাজ নয়। মানুষের ব্যক্তিগত চিঠিপত্র পড়া, দু’জনের কথোপকথন কান পেতে শোনা, প্রতিবেশীর ঘরে উঁকি দেয়া এবং বিভিন্ন পন্থায় অন্যদের ব্যক্তিগত বিষয়াদি খোঁজ করা- এসব অনৈতিক কাজ। এর দ্বারা নানা রকম ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি হয়। এ কারণে একবার নবী ﷺ তাঁর খুতবায় দোষ অন্বেষণকারীদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘হে ঐ সব লোক! যারা মুখে ঈমান এনেছ; কিন্তু এখনো ঈমান তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি, তোমরা মুসলিমদের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না। যে ব্যক্তি মুসলিমদের দোষ-ত্রুটি অনুসন্ধান করে বেড়াবে, আল্লাহও তার দোষ-ত্রুটির প্রকাশ করে দেবেন। আর আল্লাহ যার দোষ-ত্রুটি তালাশ করেন, তাকে তার ঘরের মধ্যেও লাঞ্ছিত করে ছাড়েন।’’ (আবু দাউদ, হা/৪৮৮২)

তবে কোন বিশেষ পরিস্থিতিতে যদি খোঁজখবর নেয়া ও অনুসন্ধান করা একান্তই প্রয়োজন হয়ে পড়ে, তাহলে সেটা এ নির্দেশের আওতাভুক্ত নয়। যেমন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর আচার-আচরণে বিদ্রোহের কিছুটা লক্ষণ সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে তারা কোন অপরাধ সংঘটিত করতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা সৃষ্টি হলে তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালাতে হবে। অথবা যদি কোন ব্যক্তিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয় বা তার সাথে ব্যবসায়িক লেনদেন করতে চায় তাহলে তার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার সম্পর্কে অনুসন্ধান করা ও খোঁজখবর নেয়া দোষণীয় নয়।

পরনিন্দা বা গীবত না করা :

وَلَا يَغْتَبْ بَّعْضُكُمْ بَعْضًاؕ اَيُحِبُّ اَحَدُكُمْ اَنْ يَّاْكُلَ لَحْمَ اَخِيْهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوْهُؕ وَاتَّقُوا اللهَؕ اِنَّ اللهَ تَوَّابٌ رَّحِيْمٌ

তোমরা কেউ কারো গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে, যে তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করে? তোমরা তো তা ঘৃণা করে থাক। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয় আল্লাহ বড়ই তাওবা কবুলকারী ও মেহেরবান। (সূরা হুজুরাত- ১২)

ব্যাখ্যা : এ আয়াতাংশে আল্লাহ তা‘আলা গীবতকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করে এ কাজ চরম ঘৃণিত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। মৃতের গোশত খাওয়া এমনিতেই ঘৃণ্য ব্যাপার। সে গোশতও যখন অন্য কোন জন্তুর না হয়ে মানুষের হয় এবং সে মানুষটিও যদি নিজের আপন ভাই হয়, তাহলে তো কোন কথাই নেই। তারপর এ উপমাকে প্রশ্নের আকারে পেশ করে আরো অধিক গুরুতর অপরাধ ও ঘৃণ্যবস্তু হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে- যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে নিজেই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে যে, সে কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে প্রস্তুত? সে যদি তা খেতে রাজি না হয় এবং তার প্রবৃত্তি এতে ঘৃণাবোধ করে, তাহলে সে কীভাবে এ কাজ পছন্দ করতে পারে যে, সে তার কোন মুমিন ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার মান-মর্যাদার উপর হামলা চালাবে।

গীবতের সংজ্ঞা হচ্ছে, ‘‘কারো অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে এমন কোন কথা বলা, যা শুনলে সে অপছন্দ করবে।’’ কারো বিরুদ্ধে তার অনুপস্থিতিতে মিথ্যা অভিযোগ করা অপবাদ। আর তার সত্যিকার দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা গীবত। এ কাজ স্পষ্ট বক্তব্যের মাধ্যমে করা হোক বা ইশারা ইঙ্গিতের মাধ্যমে করা হোক সর্বাবস্থায় তা হারাম। অনুরূপভাবে এ কাজ ব্যক্তির জীবদ্দশায় করা হোক বা মৃত্যুর পরে করা হোক উভয় অবস্থায় হারাম। একদা নবী ﷺ কে জিজ্ঞেস করা হয়, গীবত কী? জবাবে তিনি বলেন,

ذِكْرُكَ اَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ

‘‘তোমার ভাইয়ের আলোচনা এমনভাবে করা, যা সে অপছন্দ করে।’’ তারপর আবারো জিজ্ঞেস করা হয় যে, যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে সত্যিই সে দোষ থেকে থাকে? তিনি জবাব দেন :

اِنْ كَانَ فِيْهِ مَا تَقُوْلُ فَقَدِ اغْتَبْتَهٗ وَاِنْ لَّمْ يَكُنْ فِيْهِ مَا تَقُوْلُ فَقَدْ بَهَتَّهٗ

‘‘তুমি যে দোষের কথা বলছ তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলে তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তার উপর অপবাদ দিলে (যা আরো গুরুতর অপরাধ)।’’ (সহীহ মুসলিম, হা/৬৭৫৮; আবু দাউদ, হা/৪৮৭৬)

যেসব ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বা তার মৃত্যুর পর তার মন্দ দিকগুলো বর্ণনা করার এমন কোন প্রয়োজন দেখা দেয় আর ঐ প্রয়োজন পূরণের জন্য গীবত না করা হলে তার চেয়েও অধিক মন্দকাজ অপরিহার্য হয়ে পড়ে- এমন ক্ষেত্রসমূহে গীবত করা হারাম নয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন আমাদের বই- গীবত থেকে বাঁচার উপায় ও তাওবা করার পদ্ধতি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন