hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৪৭
অধ্যায়- ২৫ : কুরআন পড়ার গুরুত্ব ও নিয়ম
কুরআন পড়ার নির্দেশ :

وَاتْلُ مَاۤ اُوْحِيَ اِلَيْكَ مِنْ كِتَابِ رَبِّكَ لَا مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِهٖ

তোমার প্রতিপালকের কিতাব হতে যা তোমার প্রতি ওহী করা হয়েছে তা পাঠ করো। (জেনে রেখো) তাঁর বাক্য পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারো নেই। (সূরা কাহফ- ২৭)

ব্যাখ্যা : কুরআন জানার জন্য সাহাবীদের আগ্রহ ছিল অত্যধিক। মাসরূক (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! যিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই, আল্লাহর কিতাবে এমন কোন সূরা নেই যার সম্পর্কে আমি জানি না যে, তা কখন এবং কোথায় নাযিল হয়েছে। আর আল্লাহর কিতাবে এমন কোন আয়াতও নেই যা আমি জানি না যে, তা কার সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। তারপরও আমি যদি জানতাম যে, এমন কোন ব্যক্তি রয়েছে, যে আমার চেয়ে কুরআন ভালো জানে এবং সেখানে উট পৌঁছতে পারে, তবে আমি উটে আরোহণ করে হলেও সেখানে গিয়ে পৌঁছতাম। (সহীহ বুখারী, হা/৫০০২)

কুরআনের সাথে লেগে থাকতে হবে। ইবনে ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি কুরআন মুখস্থ করে হৃদয়ে রাখে, তার দৃষ্টান্ত ঐ উট মালিকের ন্যায়, যে উট বেঁধে রাখে। যদি সে উট বেঁধে রাখে তবে তার নিয়ন্ত্রণে থাকে, কিন্তু যদি বন্ধন খুলে দেয় তবে তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। (সহীহ বুখারী, হা/৫০৩১)

কুরআন পাঠকারীর মর্যাদা অনেক। আয়েশা (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, কুরআন পাঠকারী হাফেয উচ্চমর্যাদার অধিকারী ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। আর যে কুরআন পাঠ করে আর তা হিফয করা তার জন্য অতীব কষ্টকর হলেও তা হিফয করতে চেষ্টা করে, সে দ্বিগুণ পুরস্কার লাভ করবে। (সহীহ বুখারী, হা/৪৯৩৭)

কুরআন পাঠ করলে বা শুনলে ঈমান বৃদ্ধি পায় :

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِيْنَ اِذَا ذُكِرَ اللهُ وَجِلَتْ قُلُوْبُهُمْ وَاِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ اٰيَاتُهٗ زَادَتْهُمْ اِيْمَانًا وَّعَلٰى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ

মুমিন তো তারাই, যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয় তখন তাদের হৃদয় কম্পিত হয়। আর যখন তাঁর আয়াতসমূহ তাদের নিকট পাঠ করা হয়, তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা করে। (সূরা আনফাল- ২)

ব্যাখ্যা : যখনই মানুষের সামনে আল্লাহর কোন হুকুম আসে এবং সে তার সত্যতা মেনে নিয়ে আনুগত্যের শির নত করে দেয়, তখনই তার ঈমান বৃদ্ধি পেয়ে যায়। এ ধরনের প্রত্যেকটি অবস্থায় এমনটিই হয়ে থাকে। যখনই আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের হেদায়াতের মধ্যে মানুষ এমন কোন জিনিস দেখে, যা তার ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা ও চিন্তা-ভাবনার বিরোধী হয় এবং সে তা মেনে নিয়ে আল্লাহ ও রাসূলের বিধান পরিবর্তন করার পরিবর্তে নিজেকে পরিবর্তিত করে ফেলে এবং তা গ্রহণ করতে গিয়ে প্রয়োজনে কষ্ট স্বীকার করতেও প্রস্তুত হয়ে যায়, তখন মানুষের ঈমান তরতাজা হয়। পক্ষান্তরে এমনটি করতে অস্বীকৃতি জানালে মানুষের ঈমানের প্রাণশক্তি নিস্তেজ হতে থাকে।

কুরআন পড়া একটি লাভজনক ব্যবসা :

اِنَّ الَّذِيْنَ يَتْلُوْنَ كِتَابَ اللهِ وَاَقَامُوا الصَّلَاةَ وَاَنْفَقُوْا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً يَّرْجُوْنَ تِجَارَةً لَّنْ تَبُوْرَ

যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যা কিছু রিযিক হিসেবে দান করেছি তা থেকে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করে, যাতে কখনো ক্ষতি হবে না। (সূরা ফাতির- ২৯)

ব্যাখ্যা : ঈমানদারদের এ কাজকে ব্যবসার সাথে তুলনা করা হয়েছে। কারণ মানুষ ব্যবসায় নিজের অর্থ, শ্রম ও মেধা নিয়োগ করে কেবলমাত্র মূলধন ফেরত পাওয়ার এবং শ্রমের পারিশ্রমিক লাভ করার জন্য নয়; বরং বাড়তি কিছু মুনাফা অর্জন করার জন্য। অনুরূপভাবে একজন মুমিনও আল্লাহর হুকুম পালন, তাঁর ইবাদাত-বন্দেগী এবং তাঁর দ্বীনের জন্য সংগ্রাম-সাধনায় নিজের ধনসম্পদ, সময়, শ্রম ও যোগ্যতা নিয়োগ করে শুধুমাত্র এসবের পুরোপুরি প্রতিদান লাভ করার জন্য নয়; বরং এই সংগে আল্লাহ তাঁর নিজ অনুগ্রহে বাড়তি অনেক কিছু দান করবেন- এ আশায়। কিন্তু উভয় ব্যবসার মধ্যে অনেক বড় পার্থক্য রয়েছে। পার্থিব ব্যবসায়ে নিছক মুনাফা লাভেরই আশা থাকে না, লোকসান এবং দেউলিয়া হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। কিন্তু একজন একনিষ্ঠ বান্দা আল্লাহর সাথে যে ব্যবসা করে তাতে লোকসানের কোন আশঙ্কাই নেই।

কুরআন পড়ার শুরুতে শয়তান থেকে আশ্রয় চাইতে হবে :

فَاِذَا قَرَاْتَ الْقُرْاٰنَ فَاسْتَعِذْ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ

যখন কুরআন পাঠ করবে তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে। (সূরা নাহল- ৯৮)

ব্যাখ্যা : শুধুমাত্র মুখে اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (আউযু বিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম) উচ্চারণ করলেই হয় না। বরং কুরআন পাঠের সময় যথার্থই শয়তানের বিভ্রান্তিকর প্ররোচনা থেকে মুক্ত থাকার বাসনা পোষণ করতে হবে এবং তার প্ররোচনা থেকে নিষ্কৃতি লাভের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। অনর্থক সন্দেহ-সংশয়ে লিপ্ত হওয়া যাবে না। কুরআনের প্রত্যেকটি কথাকে তার সঠিক অর্থের আলোকে দেখতে হবে এবং নিজের মনগড়া মতবাদ বা চিন্তার মিশ্রণে কুরআনের শব্দাবলির এমন অর্থ করা হতে বিরত থাকতে হবে, যা আল্লাহর ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থী। সেই সঙ্গে এ চেতনাও জাগ্রত থাকতে হবে যে, মানুষ যাতে কুরআন থেকে কোন পথনির্দেশনা লাভ করতে না পারে সে জন্যই শয়তান সবচেয়ে বেশি তৎপর থাকে। এ কারণে মানুষ যখনই এ কিতাবটির দিকে ফিরে যায় তখনই শয়তান তাকে বিভ্রান্ত করার এবং ভুল পথে পরিচালিত করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। তাই এ কিতাবটি অধ্যয়ন করার সময় মানুষকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে, যাতে শয়তানের প্ররোচনার কারণে সে এ হেদায়াতের উৎসটির কল্যাণ থেকে বঞ্চিত না হয়ে যায়। কারণ যে ব্যক্তি এখান থেকে সঠিক পথের সন্ধান লাভ করতে পারে না, সে অন্য কোথাও থেকে সৎপথের সন্ধান পাবে না। আর যে ব্যক্তি এ কিতাব পড়েও ভ্রষ্টতা ও বিভ্রান্তির শিকার হয়, দুনিয়ায় অন্য কোনকিছুই তাকে ভ্রষ্টতার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না। কুরআনকে যথার্থ অর্থে একমাত্র সে ব্যক্তিই দেখতে পারে, যে শয়তানের প্ররোচনা থেকে সতর্ক থাকে এবং তা থেকে নিজেকে সংরক্ষিত রাখার জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়। অন্যথায় শয়তান সাধারণত কুরআনের বক্তব্যসমূহ অনুধাবন করার সুযোগ মানুষকে দেয় না।

আল্লাহর নামে শুরু করতে হবে :

اِقْرَاْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ

পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার নামে যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। (সূরা আলাক্ব- ১)

সুন্দর করে ধীরস্থিরভাবে পড়তে হবে :

وَرَتِّلِ الْقُرْاٰنَ تَرْتِيْلًا

আর তুমি কুরআন পাঠ করো ধীরে ধীরে (থেমে থেমে সুন্দরভাবে)। (সূরা মুয্যাম্মিল- ৪)

ব্যাখ্যা : কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) কে নবী ﷺ এর কিরাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, নবী ﷺ কোন কোন ক্ষেত্রে দীর্ঘায়িত করে (টেনে টেনে) পাঠ করতেন। (সহীহ বুখারী, হা/৫০৪৬, ৫০৪৫)

সামর্থ্যানুযায়ী পড়তে হবে :

فَاقْرَءُوْا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ

কুরআন হতে যতটুকু সহজসাধ্য হয়, তা-ই পাঠ করো। (সূরা মুয্যাম্মিল- ২০)

মধ্যম আওয়াজে পড়তে হবে :

وَلَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَلَا تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذٰلِكَ سَبِيْلًا

তোমরা সালাতে স্বর উঁচুও করো না এবং অতিশয় ক্ষীণও করো না; বরং মধ্যমপন্থা অবলম্বন করো।

(সূরা বনী ইসরাঈল- ১১০)

কুরআন পড়ার উপযুক্ত সময় রাতের বেলা ও ফজরের সময় :

لَيْسُوْا سَوَآءًؕ مِنْ اَهْلِ الْكِتَابِ اُمَّةٌ قَآئِمَةٌ يَّتْلُوْنَ اٰيَاتِ اللهِ اٰنَآءَ اللَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُوْنَ

তারা সবাই সমান নয়। আহলে কিতাবদের মধ্যে একটি দল রয়েছে অটল। তারা রাতের বেলা আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে এবং সিজদা করে। (সূরা আলে ইমরান- ১১৩)

অর্থ বুঝে কুরআন পড়তে হবে :

كِتَابٌ اَنْزَلْنَاهُ اِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِّيَدَّبَّرُوْاۤ اٰيَاتِهٖ وَلِيَتَذَكَّرَ اُولُو الْاَ لْبَابِ

(এ কুরআন) একটি বরকতময় কিতাব, আমি তা আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি যেন মানুষ এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং জ্ঞানবান লোকেরা উপদেশ গ্রহণ করে। (সূরা সোয়াদ- ২৯)

ব্যাখ্যা : ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার জন্য যেসব কঠিন সমস্যা ও সংকটের মুখোমুখি হতে হয় সেসব কিছুর মুকাবিলা করার জন্য বাস্তব ব্যবস্থা হিসেবে কুরআন তিলাওয়াত করার কথা বলা হচ্ছে। এ জিনিসই মুমিনকে এমন সুসংগঠিত চরিত্র ও উন্নত যোগ্যতার অধিকারী করে তুলে, যার সাহায্যে সে বাতিলের প্রবল বন্যার মুকাবিলায় শুধু টিকে থাকতেই নয় বরং তার গতি ফিরিয়ে দিতেও সক্ষম হয়। কিন্তু এ শক্তি মানুষ তখনই অর্জন করতে পারে, যখন সে শুধুমাত্র কুরআনের শব্দগুলো পাঠ করেই ক্ষান্ত হয় না বরং তার শিক্ষাগুলোও সঠিকভাবে অনুধাবন করে। কুরআন তিলাওয়াতের ব্যাপারে এতটুকু জানা উচিত যে, যে তিলাওয়াত কণ্ঠনালী অতিক্রম করে অন্তরে আঘাত হানতে পারে না, তা তাকে কুফরীর বন্যার মুকাবিলায় শক্তি যোগানো তো দূরের কথা, তার ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার সাহসও যোগাতে পারে না। যে তিলাওয়াতের পর মানুষের চিন্তা, চরিত্র ও কর্মনীতিতে কোন পরিবর্তন আসে না তা কোন মুমিনের কুরআন তিলাওয়াত হতে পারে না। কেননা কুরআনের উপর আমল করা প্রতিটি মুমিনের উপর ওয়াজিব। কুরআন যা হালাল বলেছে তা হালাল হিসেবে সাব্যস্ত করা, যা হারাম বলেছে তা হারাম হিসেবে মেনে নেয়া, যা আদেশ করেছে তা পালন করা এবং যা নিষেধ করেছে তা থেকে বিরত থাকা একজন ঈমানদার ব্যক্তির অন্যতম দায়িত্ব। এ কারণে নবী ﷺ স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন, ‘‘কুরআনের হারামকৃত জিনিসকে যে হালাল করে নিয়েছে সে কুরআনের প্রতি ঈমান আনেনি’’ (তিরমিযী, হা/২৯১৮)। এ ধরনের তিলাওয়াত মানুষের আত্মিক সংশোধন এবং তার আত্মায় শক্তি সঞ্চার করতে পারে না। কারণ যে ব্যক্তি কুরআনকে আল্লাহর কিতাব হিসেবে মেনে নেয়, তারপর তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে চলে, তার ব্যাপারটা তার চেয়েও ঘৃণিত যে আইন না জানার কারণে নয় বরং জেনে শুনে আইন ভঙ্গ করার কারণে দন্ডপ্রাপ্ত হয়।

কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে :

كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللهُ لَكُمُ الْاٰيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُوْنَ

অনুরূপভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তার আয়াতসমূহ বর্ণনা করে থাকেন, যেন তোমরা চিন্তা-ভাবনা করতে পার। (সূরা বাক্বারা- ২৬৬)

اَفَلَا يَتَدَبَّرُوْنَ الْقُرْاٰنَ اَمْ عَلٰى قُلُوْبٍ اَقْفَالُهَا

তবে কি তারা কুরআন সম্বন্ধে চিন্তা-ভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তরে তালা লেগে গেছে? (সূরা মুহাম্মাদ- ২৪)

ব্যাখ্যা : হয় এসব লোক কুরআন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে না, কিংবা চিন্তা-ভাবনা করার চেষ্টা করে কিন্তু তার শিক্ষা ও তাৎপর্য তাদের মনের গভীরে প্রবেশ করে না। কারণ তাদের হৃদয়-মনে তালা লাগানো আছে। এ কথার অর্থ হচ্ছে, তাদের মনে এমন তালা লাগানো আছে, যা ন্যায় ও সত্যকে চিনে না এমন লোকদের জন্যই নির্দিষ্ট। নাফে (রাঃ) বলেছেন, আমি একদিন আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) এর নিকট গেলাম। তিনি তখন সূরা বাক্বারা পাঠ করছিলেন। পাঠ করতে করতে তিনি এক জায়গায় থেমে গেলেন। অতঃপর আমাকে প্রশ্ন করলেন, কী বিষয়ে আয়াতটি নাযিল হয়েছে জান? আমি বললাম, না। তখন তিনি বললেন, অমুক অমুক বিষয়ে নাযিল হয়েছে। তারপর তিনি আবার পাঠ করতে শুরু করলেন। (সহীহ বুখারী, হা/৪৫২৬)

উপদেশ গ্রহণের জন্য কুরআনকে সহজ করা হয়েছে :

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْاٰنَ لِلذَّكْرِ فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ

আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি? (সূরা ক্বামার- ৩২)

কুরআন পড়া হলে নীরবে শুনতে হবে :

وَاِذَا قُرِئَ الْقُرْاٰنُ فَاسْتَمِعُوْا لَهٗ وَاَنْصِتُوْا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ

যখন কুরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগের সাথে শ্রবণ করবে এবং নিরব হয়ে থাকবে, যেন তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়। (সূরা আ‘রাফ- ২০৪)

ব্যাখ্যা : নবী ﷺ অন্যের নিকট থেকে কুরআন শুনতেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ আমাকে বললেন, আমার সম্মুখে কুরআন পাঠ করো। আমি বললাম, আমি আপনার নিকট কুরআন পাঠ করব, অথচ তা আপনার উপর অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বললেন, আমি অন্যের পাঠ শুনতে পছন্দ করি। (সহীহ বুখারী, হা/৫০৫৬)

কুরআন শুনে নবী ﷺ এর কান্না করতেন। আমর ইবনে মুর্রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ আমাকে বললেন, তুমি আমাকে কুরআন পাঠ করে শুনাও। আমি বললাম, আমি আপনাকে কুরআন পাঠ করে শুনাব? অথচ কুরআন তো আপনার উপরই নাযিল হয়েছে। তখন নবী ﷺ বললেন, আমি অন্যের কাছ থেকে কুরআন শুনতে পছন্দ করি। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তখন তাঁকে সূরা নিসা পাঠ করে শুনাতে আরম্ভ করলাম। যখন এ আয়াতে পৌঁছলাম - فَكَيْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ اُمَّةٍ ۢبِشَهِيْدٍ وَّجِئْنَا بِكَ عَلٰى هٰۤؤُلَآءِ شَهِيْدًا ‘‘তখন কেমন হবে, যখন আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে একজন করে সাক্ষী উপস্থিত করব। (হে নবী!) তাদের ব্যাপারে আপনাকেই সাক্ষী হিসাবে হাজির করব?’’ এ সময় নবী ﷺ বললেন, থামো। তখন আমি দেখতে পেলাম, তাঁর দু’চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। (সহীহ বুখারী, হা/৪৫৮২)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন