hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৮৪
অধ্যায়- ৮ : সুদ খাওয়া
আল্লাহ সুদ খেতে নিষেধ করেছেন :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَاۤ اَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً۪ وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা দ্বিগুণের উপর দ্বিগুণ সুদ (চক্র বৃদ্ধিহারে) ভক্ষণ করো না এবং আল্লাহকে ভয় করো, যেন তোমরা সুফলপ্রাপ্ত হও। (সূরা আলে ইমরান- ১৩০)

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَذَرُوْا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَاۤ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের বকেয়া অংশ বর্জন করো, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক। (সূরা বাক্বারা- ২৭৮)

ব্যাখ্যা : আরবি ভাষায় رِبَا (রিবা) শব্দের অর্থ বৃদ্ধি পাওয়া। পারিভাষিক অর্থে আরবরা এ শব্দটি ব্যবহার করে ঐ অতিরিক্ত অর্থের জন্য, যা ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে মূলধনের উপর নির্ধারিত হার অনুযায়ী আদায় করা হয়। আমাদের ভাষায় একেই বলা হয় সুদ। কুরআন নাযিলের সময় যেসব সুদী লেনদেনের প্রচলন ছিল সেগুলো হলো : ১. একজন অপরজনের কাছে কোন জিনিস বিক্রি করত এবং দাম আদায়ের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দিত। সময়সীমার মধ্যে যদি দাম আদায় করা না হতো, তাহলে তাকে অতিরিক্ত সময় দিত এবং ঐ পণ্যের দাম আরো বৃদ্ধি করে দিত। ২. একজন অপরজনকে ঋণ দিত। অতঃপর ঋণদাতার সাথে এ মর্মে চুক্তি হতো যে, অমুক সময়ের মধ্যে সুদসহ আসল টাকা ফেরত দিতে হবে। যদি ঋণগ্রহিতা ঐ সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে না পারত, তাহলে সুদের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি করে দিত।

সুদের মাধ্যমে মূলত সম্পদ বৃদ্ধি পায় না :

وَمَاۤ اٰتَيْتُمْ مِّنْ رِّبًا لِّيَرْبُوَاْ فِۤيْ اَمْوَالِ النَّاسِ فَلَا يَرْبُوْا عِنْدَ اللهِۚ وَمَاۤ اٰتَيْتُمْ مِّنْ زَكَاةٍ تُرِيْدُوْنَ وَجْهَ اللهِ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُضْعِفُوْنَ

মানুষের ধনসম্পদে তোমাদের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এ আশায় তোমরা যা কিছু সুদ হিসেবে দিয়ে থাক, আল্লাহর কাছে তা বৃদ্ধি পায় না। পক্ষান্তরে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তোমরা যা কিছু যাকাত হিসেবে দিয়ে থাক (তাই বৃদ্ধি পায়), আর তারা দ্বিগুণ প্রতিদান লাভ করে। (সূরা রূম- ৩৯)

يَمْحَقُ اللهُ الرِّبَا وَيُرْبِى الصَّدَقَاتِؕ وَاللهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ اَثِيْمٍ

আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করেন এবং দানকে বৃদ্ধি করেন। আর আল্লাহ প্রত্যেক অকৃতজ্ঞ পাপীকে পছন্দ করেন না। (সূরা বাক্বারা- ২৭৬)

ব্যাখ্যা : যদিও আপাতদৃষ্টিতে দেখা যায়, সুদের মাধ্যমে অর্থ বৃদ্ধি হচ্ছে এবং দান-খয়রাতের মাধ্যমে অর্থ-সম্পদ কমে যাচ্ছে, তবুও প্রকৃত ব্যাপারটি এর সম্পূর্ণ বিপরীত। আল্লাহর প্রাকৃতিক বিধান হচ্ছে, সুদ নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও অর্থনৈতিক উন্নতির কেবল প্রতিবন্ধকতাই নয় বরং অবনতিরও সহায়ক। অপরপক্ষে দান-খয়রাত, করযে হাসানা বা উত্তম ঋণ- এসবের মাধ্যমে নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও অর্থনৈতিক সর্বক্ষেত্রে উন্নতি লাভ করা যায়। সুদ মূলত স্বার্থপরতা, কৃপণতা, সংকীর্ণতা, নির্মমতা ইত্যাদি অসৎ চরিত্রের ফল। সুদের ফলে এ চরিত্রগুলোই মানুষের মধ্যে বিকশিত হয়। অন্যদিকে সহানুভূতি, উদারতা ও মহানুভবতা ইত্যাদি গুণাবলিই দান-খয়রাতের জন্ম দেয়। আর নিয়মিত দান-খয়রাত করতে থাকলে এ গুণগুলো মানুষের মধ্যে বিকশিত হতেই থাকে। যে সমাজের লোকেরা পরস্পরের সাথে স্বার্থবাদী আচরণ করে, নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়া নিঃস্বার্থভাবে অন্যের কোন উপকার করে না, একজনের প্রয়োজন ও অভাবকে অন্যজন নিজের মুনাফা লাভের সুযোগ মনে করে তা থেকে পুরোপুরি লাভবান হয় এবং ধনীদের স্বার্থ সাধারণ মানুষের স্বার্থের বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে, সে সমাজ কখনো শক্তিশালী হতে পারে না। সে সমাজের লোকদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসার পরিবর্তে হিংসা-বিদ্বেষ ও নিষ্ঠুরতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সে সমাজ সর্বদা বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের দিকে এগিয়ে যায়।

আল্লাহ সুদকে চূড়ান্তভাবে হারাম করেছেন :

وَاَحَلَّ اللهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا

আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর সুদকে হারাম করেছেন। (সূরা বাক্বারা- ২৭৫)

মানুষ যুক্তি দেখিয়ে সুদ খায় :

ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْاۤ اِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا

এটা এজন্য যে তারা বলে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদের মতোই। (সূরা বাক্বারা- ২৭৫)

ব্যাখ্যা : তাদের মতামতের ভুল হচ্ছে, তারা ব্যবসায় যে মূলধন খাটায় এবং তার উপর যে মুনাফা আসে, সে মুনাফালব্ধ অর্থ ও সুদের মধ্যে কোন পার্থক্য করে না। এ উভয় অর্থকে একই পর্যায়ভুক্ত মনে করে তারা যুক্তি পেশ করে থাকে যে, ব্যবসায় খাটানো অর্থের মুনাফা যখন বৈধ, তখন ঋণবাবদ প্রদত্ত অর্থের মুনাফা বৈধ হবে না কেন? বর্তমান যুগের সুদখোররাও সুদের স্বপক্ষে এই একই যুক্তি পেশ করে থাকে। কিন্তু তারা এ কথাটি চিন্তা করে না যে, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, কারিগরি, কৃষি- যাই হোক না কেন, যেখানে মানুষ শ্রম খাটায় অথবা শ্রম ও অর্থ উভয়টিই খাটায়, সেখানে কোন একটি কারবারও এমন নেই যাতে মানুষকে ক্ষতির ঝুঁকি নিতে হয় না। মুনাফা বাবদ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ অর্জিত হওয়ার গ্যারান্টিও থাকে না। তাহলে দুনিয়ার সমস্ত ব্যবসায় একমাত্র ঋণদাতা পুঁজিপতিরা কেন ক্ষতির ঝুঁকিমুক্ত থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা লাভের হকদার হবে? যারা রাত-দিন নিজেদের কারবারে সময়, মেধা, শ্রম ও পুঁজি খাটিয়ে চলছে এবং যাদের প্রচেষ্টা ও সাধনার উপরই এ কারবার ফলপ্রসূ হওয়া নির্ভর করছে, তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট মুনাফার নিশ্চয়তা নেই বরং ক্ষতির সমস্ত ঝুঁকিই থাকছে তাদের মাথার উপর। কিন্তু যে ব্যক্তি শুধুমাত্র নিজের টাকা ঋণ দিয়েছে, সে নিশ্চিন্তে বসে বসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের মুনাফা অর্জন করতে থাকবে- এটা কোন যুক্তিসম্মত কথা হতে পারে না।



এখন বিরত হলে আগে যা খেয়েছে তার ফায়সালা আল্লাহই করবেন :

فَمَنْ جَآءَهٗ مَوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّهٖ فَانْتَهٰى فَلَهٗ مَا سَلَفَؕ وَاَمْرُهٗۤ اِلَى اللهِ

সুতরাং যার কাছে তার রবের পক্ষ থেকে (সুদ সংক্রান্ত) উপদেশবাণী পৌঁছবে, অতঃপর সে সুদ খাওয়া থেকে বিরত থাকবে, তবে ইতোপূর্বে যা হয়ে গেছে তা তারই থাকবে। আর তার বিষয়টি (ফায়সালার দায়িত্ব) আল্লাহর কাছে ন্যস্ত। (সূরা বাক্বারা- ২৭৫)

ব্যাখ্যা : এখানে এ কথা বলা হয়নি যে, যা কিছু সে খেয়ে ফেলেছে, আল্লাহ তা ÿমা করে দেবেন। বরং বলা হচ্ছে, তার ব্যাপারটি আল্লাহর হাতে থাকছে। এখানে শুধুমাত্র আইনগত সুবিধার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ ইতোপূর্বে যে সুদ সে খেয়ে ফেলেছে আইনগতভাবে তা ফেরত দেয়ার দাবী করা হবে না। কারণ তা ফেরত দেয়ার দাবী করা হলে মামলা-মোকাদ্দমার এমন একটা ধারাবাহিকতা শুরু হয়ে যাবে, যা আর শেষ হবে না। তবে সুদী কারবারের মাধ্যমে যে ব্যক্তি অর্থ-সম্পদ সংগ্রহ করেছে, নৈতিক দিক দিয়ে তার অপবিত্রতা প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যদি তার মনে যথার্থই আল্লাহভীতি স্থান লাভ করে থাকে এবং ইসলাম গ্রহণ করার পর তার নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী সত্যিই পরিবর্তন হয়ে থাকে, তাহলে সে নিজেই এ হারাম পথে উপার্জিত ধনসম্পদ নিজের জন্য ব্যয় করা থেকে বিরত থাকবে এবং যাদের অর্থ-সম্পদ তার কাছে আছে, তাদের সন্ধান লাভ করার জন্য যথাসাথ্য প্রচেষ্টা চালাতে থাকবে। অতঃপর যেসব হকদারদের সন্ধান পাওয়া যাবে, তাদের হক ফিরিয়ে দেবে এবং যেসব হকদারদের সন্ধান পাওয়া যাবে না, তাদের সম্পদগুলো সমাজসেবা ও জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করার ব্যবস্থা করবে। এ কার্যক্রম তাকে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে।

তাওবা করলে সুদখোর তার মূলধন ফেরত আনতে পারবে :

وَاِنْ تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوْسُ اَمْوَالِكُمْۚ لَا تَظْلِمُوْنَ وَلَا تُظْلَمُوْنَ

আর যদি তোমরা সুদ থেকে ফিরে আস, তাহলে মূলধন তোমাদের প্রাপ্য। তোমরা কারো উপর যুলুম করবে না এবং তোমাদের উপরও কোন যুলুম করা হবে না। (সূরা বাক্বারা- ২৭৯)

ঋণগ্রহীতা গরীব হলে তাকে সময় দিতে হবে :

وَاِنْ كَانَ ذُوْ عُسْرَةٍ فَنَظِرَةٌ اِلٰى مَيْسَرَةٍ

ঋণগ্রহীতা যদি অভাবগ্রস্ত হয়, তবে সচ্ছলতা না আসা পর্যন্ত তাকে অবকাশ দাও। (সূরা বাক্বারা- ২৮০)

তবে ক্ষমা করে দেয়াই উত্তম :

وَاَنْ تَصَدَّقُوْا خَيْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ

আর যদি তোমরা সাদাকা করে দাও, তাহলে তোমাদের জন্য সেটাই উত্তম হবে; যদি তোমরা বুঝ। (সূরা বাক্বারা- ২৮০)

সুদ খাওয়া ছিল ইয়াহুদিদের অভ্যাস :

وَاَخْذِهِمُ الرِّبَا وَقَدْ نُهُوْا عَنْهُ وَاَكْلِهِمْ اَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِؕ وَاَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِيْنَ مِنْهُمْ عَذَابًا اَلِيْمًا

যেহেতু তারা সুদ গ্রহণ করত, অথচ তাদেরকে তা থেকে সুস্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছিল এবং তারা অন্যের ধনসম্পদ ধোঁকা ও প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাস করে নিত। সুতরাং আমি এসব কাফিরদের জন্য মর্মান্তিক শাস্তি নির্দিষ্ট করে রেখেছি। (সূরা নিসা- ১৬১)

ব্যাখ্যা : তাওরাতে সুস্পষ্ট ভাষায় এ নির্দেশটি লিখিত রয়েছে যে, ‘‘যদি তুমি আমার লোকদের মধ্য থেকে কোন অভাবীকে ঋণ দাও, তাহলে তার কাছ থেকে সুদ নিয়ো না। যদি তুমি কখনো নিজের প্রতিবেশীর কাপড় বন্ধকও রাখো, তাহলে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগেই তা ফেরত দাও। কারণ সেটিই তার একমাত্র পরার কাপড়। সেটিই তার শরীর ঢাকার জন্য একমাত্র পোশাক। তা না হলে সে কি গায়ে দিয়ে ঘুমাবে? কাজেই সে ফরিয়াদ করলে আমি তার কথা শুনব। কারণ আমি করুণাময়’’ (যাত্রা পুস্তক ২২ :২৫-২৭)।

এছাড়াও তাওরাতের আরো কয়েক স্থানে সুদ হারাম হওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এর পরও এ তাওরাতের প্রতি ঈমানের দাবীদার ইয়াহুদিসমাজ আজকের দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় সুদখোর জাতি হিসেবে পরিচিত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন