hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৬৯
অধ্যায়- ১০ : তালাকের বিধান
‘তালাক’ শব্দের অর্থ হচ্ছে বিচ্ছেদ। কোনভাবেই যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব না হয় তবে তালাকের মাধ্যমে তারা বিচ্ছেদ হয়ে যেতে পারে। তালাক তিন প্রকার। (এক) তালাকে রেজঈ। এটি দু’বার দেয়া যায়। এ তালাক দিলে কোন পুনর্বিবাহ ছাড়াই স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারবে। (দুই) বাইন তালাক। এ তালাক প্রদানের পর পুনরায় বিবাহবন্ধনের মাধ্যমে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনা যায়। (তিন) তালাকে মুগাল্লাযা। এ তালাক পতিত হওয়ার পর ঐ স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার কোন সুযোগ থাকে না, যতক্ষণ না অন্য কোথাও তার বিবাহ হয় এবং ঐ স্বামী তাকে স্বেচ্ছায় তালাক না দেয়।

কুরআন ও হাদীস থেকে তালাকের যে সঠিক পদ্ধতি জানা যায় তা হচ্ছে, স্ত্রীকে ‘তুহর’ (মাসিক থেকে পবিত্র) অবস্থায় তালাক দিতে হবে। যদি এমন সময় স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয় যখন তার মাসিক ঋতুস্রাব চলছে, তাহলে তখনই তালাক দেয়া সঙ্গত নয়; বরং ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তারপর এক তালাক দেয়ার পর চাইলে দ্বিতীয় ‘তুহরে’ আরেক তালাক দিতে পারে। অন্যথায় প্রথম তালাকটি দিয়ে ক্ষান্ত হওয়াই ভালো। দ্বিতীয় তালাক দেয়ার পর ইদ্দত শেষ হয়ে যাওয়ার পরও উভয়ের পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে পুনর্বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু তৃতীয় ‘তুহরে’ তৃতীয়বার তালাক দেয়ার পর স্বামী আর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার বা পুনরায় উভয়ের এক সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কোন সুযোগ থাকে না। তবে একই সময় তিন তালাক দেয়ার ব্যাপারটি যেমন অজ্ঞ লোকেরা আজকাল সাধারণভাবে করে থাকে, শরীয়াতের দৃষ্টিতেও তা কঠিন গোনাহ। নবী ﷺ কঠোরভাবে এর নিন্দা করেছেন। এমনকি ওমর (রাঃ) থেকে এ বিষয়টি প্রমাণিত যে, যে ব্যক্তি একই সময়ে স্ত্রীকে তিন তালাক দিত তাকে তিনি বেত্রাঘাত করতেন।

তালাক প্রদানে তাড়াহুড়া করা যাবে না :

يَاۤ اَيُّهَا النَّبِيُّ اِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَآءَ فَطَلِّقُوْهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَاَحْصُوا الْعِدَّةَ

হে নবী! তোমরা যদি তোমাদের স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও, তবে তাদেরকে ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে তালাক দিয়ো এবং ইদ্দতের হিসাব রেখো। (সূরা তালাক্ব- ১)

রেজঈ তালাক দু’বার দেয়া যায় :

اَلطَّلَاقُ مَرَّتَانِ۪ فَاِمْسَاكٌ ۢبِمَعْرُوْفٍ اَوْ تَسْرِيْحٌ ۢبِاِحْسَانٍ

(রেজঈ) তালাক দু’বার দেয়া যায়। এরপর হয়তো ন্যায়সঙ্গতভাবে স্ত্রীকে রাখবে অথবা সদয়ভাবে মুক্ত করে দেবে। (সূরা বাক্বারা- ২২৯)

ব্যাখ্যা : এ আয়াতটির মাধ্যমে জাহেলী যুগে আরবে প্রচলিত একটি বড় ধরনের সামাজিক ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছে। জাহেলী যুগে আরবে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে অসংখ্যবার তালাক দিতে পারত। স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি বিরূপ হয়ে গেলে তাকে বার বার তালাক দিত এবং আবার ফিরিয়ে নিত। এভাবে স্ত্রী না স্বামীর সাথে ঘর-সংসার করতে পারত আর না স্বাধীনভাবে অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারত। স্ত্রীর প্রতি তাদের এ ধরনের আচরণ ছিল এক ধরনের যুলুম। কুরআন মাজীদের এ আয়াতটি এ যুলুমের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এ আয়াতের দৃষ্টিতে স্বামী একটি বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে নিজের স্ত্রীকে বড়জোর দুইবার তালাক দিতে পারে। যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে দুইবার তালাক দেয়ার পর আবার তাকে ফিরিয়ে নিয়েছে এবং পরবর্তী জীবনকালে যখন তাকে তৃতীয়বার তালাক দেবে, তখন সে স্ত্রী তার থেকে স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

রেজঈ তালাক দিলে ইদ্দতের মধ্যেই ফিরিয়ে আনতে পারবে :

وَبُعُوْلَتُهُنَّ اَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِيْ ذٰلِكَ اِنْ اَرَادُوْاۤ اِصْلَاحًا

আর যদি তারা আপোষে মীমাংসা করে নিতে চায়, তবে তাদের স্বামীরা ঐ সময়ের মধ্যে (ইদ্দতের মধ্যে) তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে অধিক হকদার। (সূরা বাক্বারা- ২২৮)

স্ত্রীকে রাখলে ভালোভাবে রাখতে হবে, নতুবা বিদায় করে দেবে :

وَاِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَآءَ فَبَلَغْنَ اَجَلَهُنَّ فَاَمْسِكُوْهُنَّ بِمَعْرُوْفٍ اَوْ سَرِّحُوْهُنَّ بِمَعْرُوْفٍ

যখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও এবং তারা তাদের ‘ইদ্দত’ পূর্ণ করে, তখন তোমরা তাদেরকে হয় ন্যায়সঙ্গতভাবে রেখে দাও অথবা ভদ্রভাবে মুক্ত করে দাও। (সূরা বাক্বারা- ২৩১)

তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে নেয়ার সময় সাক্ষী রাখতে হবে :

فَاِذَا بَلَغْنَ اَجَلَهُنَّ فَاَمْسِكُوْهُنَّ بِمَعْرُوْفٍ اَوْ فَارِقُوْهُنَّ بِمَعْرُوْفٍ وَّاَشْهِدُوْا ذَوَيْ عَدْلٍ مِّنْكُمْ

যখন তারা তাদের ইদ্দতে পৌঁছে যায়, তখন হয় তোমরা তাদেরকে সম্মানজনক পন্থায় রেখে দেবে; না হয় বিচ্ছিন্ন করে দেবে এবং তোমাদের মধ্য হতে দু’জন ন্যায়পরায়ণ লোককে সাক্ষী রাখবে। (সূরা তালাক্ব- ২)

কষ্ট দেয়ার জন্য স্ত্রীকে আটকে রাখা জায়েয নয় :

وَلَا تُمْسِكُوْهُنَّ ضِرَارًا لِّتَعْتَدُوْاۚ وَمَنْ يَّفْعَلْ ذٰلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهٗ

তোমরা বাড়াবাড়ি করে কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্যে তাদেরকে আটকে রেখো না। আর যে এমনটা করল সে যেন তার নিজের উপর অত্যাচার করল। (সূরা বাক্বারা- ২৩১)

তৃতীয় তালাকের পর অন্য বিয়ে না হলে ঐ স্ত্রী হালাল হবে না :

فَاِنْ طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهٗ مِنْ ۢبَعْدُ حَتّٰى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهٗؕ فَاِنْ طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَاۤ اَنْ يَّتَرَاجَعَاۤ اِنْ ظَنَّاۤ اَنْ يُّقِيْمَا حُدُوْدَ اللّٰهِؕ وَتِلْكَ حُدُوْدُ اللّٰهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَّعْلَمُوْنَ

তারপরও যদি স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেয় (তৃতীয় বার), তবে ঐ স্ত্রী তার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত হালাল হবে না, যতক্ষণ না সে অন্য স্বামীকে বিয়ে করে। অতঃপর যদি (দ্বিতীয়) স্বামী তাকে তালাক দেয় এবং ধারণা করে যে, আল্লাহর সীমারেখা মেনে চলতে পারবে, তবে পুনরায় সংসার করাতে তাদের কোন গোনাহ হবে না। এটা হলো আল্লাহর বিধানের সীমারেখা। জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য তিনি তা বর্ণনা করেন। (সূরা বাক্বারা- ২৩০)

ব্যাখ্যা : সহীহ হাদীস থেকে জানা যায়, যদি কোন ব্যক্তি নিজের তালাক দেয়া স্ত্রীকে নিছক নিজের জন্য হালাল করার উদ্দেশ্যে কারো সাথে বিয়ে দেয় এবং প্রথম থেকে তার সাথে এ চুক্তি করে নেয় যে, বিয়ে করার পর সে তাকে তালাক দিয়ে দেবে, তাহলে এটা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ কাজ। এ ধরনের বিয়ে প্রকৃতপক্ষে বিয়ে বলে গণ্য হবে না; বরং এটি হবে নিছক একটি ব্যভিচার। আর এ ধরনের বিয়ে ও তালাকের মাধ্যমে কোন ক্রমেই কোন মহিলা তার পূর্ব স্বামীর জন্য হালাল হবে না। আলী (রাঃ) সহ আরো অন্যান্য সাহাবীগণ নবী ﷺ থেকে একযোগে বর্ণনা করেছেন যে, যারা এভাবে তালাক দেয়া স্ত্রীদেরকে হালাল করে এবং যাদের মাধ্যমে হালাল করা হয়, তাদের উভয়ের উপর আল্লাহ লানত বর্ষণ করেছেন। (আবু দাউদ, হা/২০৭৮)

তালাক দেয়ার সময় মোহরানা ফিরিয়ে নেয়া যাবে না :

وَاِنْ اَرَدْتُّمُ اسْتِبْدَالَ زَوْجٍ مَّكَانَ زَوْجٍ وَّاٰتَيْتُمْ اِحْدَاهُنَّ قِنْطَارًا فَلَا تَأْخُذُوْا مِنْهُ شَيْئًاؕ اَتَأْخُذُوْنَهٗ بُهْتَانًا وَّاِثْمًا مُّبِيْنًا

আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করতে চাও এবং তাদের কাউকে অঢেল সম্পদও দিয়ে থাক, তবুও তা থেকে কিছুই গ্রহণ করবে না। তোমরা কি তা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপাচারের মাধ্যমে গ্রহণ করতে চাও? (সূরা নিসা- ২০)

وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ اَنْ تَأْخُذُوْا مِمَّاۤ اٰتَيْتُمُوْهُنَّ شَيْئًا

তোমরা যে মোহরানা তাদেরকে দিয়েছ, তা থেকে কোনকিছু গ্রহণ করা তোমাদের জন্য হালাল নয়।

(সূরা বাক্বারা- ২২৯)

ব্যাখ্যা : মোহরানা, গহনাপত্র ও কাপড়-চোপড় ইত্যাদি যেগুলো স্বামী ইতোপূর্বে স্ত্রীকে দিয়েছিল, সেগুলোর কোন একটি ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার তার নেই। এমনিতে কোন ব্যক্তিকে কোন দান বা উপহার হিসেবে কোন জিনিস দিয়ে দেয়ার পর তার কাছ থেকে আবার তা ফিরিয়ে নেয়া ইসলামী নৈতিকতার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এ ঘৃণ্য কাজকে হাদীসে এমন কুকুরের কাজের সাথে তুলনা করা হয়েছে, যে নিজে বমি করে আবার তা খেয়ে ফেলে।

তালাকপ্রাপ্তা নারীকে কিছু দিয়ে বিদায় দেয়া উচিৎ :

وَلِلْمُطَلَّقَاتِ مَتَاعٌ ۢبِالْمَعْرُوْفِؕ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِيْنَ

তালাকপ্রাপ্তাদের জন্য ন্যায়সঙ্গতভাবে ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা মুত্তাক্বীদের কর্তব্য। (সূরা বাক্বারা- ২৪১)

সহবাসের আগে তালাক দিলেও অর্ধেক মোহর দিতে হবে :

وَاِنْ طَلَّقْتُمُوْهُنَّ مِنْ قَبْلِ اَنْ تَمَسُّوْهُنَّ وَقَدْ فَرَضْتُمْ لَهُنَّ فَرِيْضَةً فَنِصْفُ مَا فَرَضْتُمْ

যদি তোমরা তাদের মোহর ধার্য করার পর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বেই তালাক দিয়ে দাও, তবে যা (মোহরানা) নির্ধারণ করেছ (স্ত্রী) তার অর্ধেক পাবে। (সূরা বাক্বারা- ২৩৭)

তবে নারীপক্ষ ক্ষমা করে দেয়াই উত্তম হবে :

اِلَّاۤ اَنْ يَّعْفُوْنَ اَوْ يَعْفُوَ الَّذِيْ بِيَدِهٖ عُقْدَةُ النِّكَاحِ وَاَنْ تَعْفُوْاۤ اَقْرَبُ لِلتَّقْوٰى وَلَا تَنْسَوُا الْفَضْلَ بَيْنَكُمْ اِنَّ اللهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ

তবে যদি তারা ক্ষমা করে দেয় অথবা যার হাতে বিয়ের চুক্তি করা হয়েছে সে ক্ষমা করে দেয়, তবে ক্ষমা করাই তোমাদের জন্য তাক্বওয়ার অধিক নিকটবর্তী। আর তোমরা পরস্পরের উপকারকে ভুলে যেও না। নিশ্চয় তোমরা যা কর আল্লাহ তা পর্যবেক্ষণ করেন। (সূরা বাক্বারা- ২৩৭)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন