hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৫৮২
অধ্যায়- ১০ : নবী ﷺ এর সাথে ভদ্র আচরণের প্রশিক্ষণ
ইয়াহুদিদের মতো সম্বোধন করতে নিষেধ করা হয়েছে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَقُوْلُوْا رَاعِنَا وَقُوْلُوا انْظُرْنَا وَاسْمَعُوْاؕ وَلِلْكَافِرِيْنَ عَذَابٌ اَلِيْمٌ

হে মুমিনগণ! তোমরা ‘রায়িনা’ বলো না, বরং ‘উনযুরনা’ বলো এবং (তিনি যা বলেন তা) শুনে নাও; আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরা বাক্বারা- ১০৪)

ব্যাখ্যা : ইয়াহুদিরা কখনো নবী ﷺ এর মজলিসে এলে কথাবার্তার মধ্য দিয়ে নিজেদের মনের ঝাল মিটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করত। ফলে রাসূল ﷺ যখন বক্তব্য দিতেন তখন তারা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে প্রশ্ন করার জন্য তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলত ‘রায়িনা’, যার বাহ্যিক অর্থ হলো- ‘‘আমাদের কথা শুনুন’’। কিন্তু এর আরো কয়েকটি অর্থ রয়েছে। যেমন হিব্রু ভাষায় তার অর্থ হলো- ‘শোন্, তুই বধির হয়ে যা।’ আর আরবি ভাষায় এর আরো একটি অর্থ হলো, ‘ওহে, আমাদের রাখাল।’ কাফিররা এসব ব্যঙ্গার্থক অর্থের দিকে ইশারা করেই ‘রায়িনা’ শব্দটি ব্যবহার করত। আবার তারা মুখটাকে একটু বড় করে তিরস্কার করেও ‘রায়িনা’ বলার চেষ্টা করত। তাই আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের এ হঠকারিতা বন্ধ করার জন্য মুসলিমদেরকে হুকুম দিয়েছেন যে, তোমরা এ শব্দটি ব্যবহার না করে ‘উন্যুরনা’ বলো। এর অর্থ হয়, ‘আমাদের প্রতি দৃষ্টি দিন।’

খুঁটিনাটি বিষয়ে প্রশ্ন করা হতে বারণ করা হয়েছে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَسْاَلُوْا عَنْ اَشْيَآءَ اِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْۚ وَاِنْ تَسْاَلُوْا عَنْهَا حِيْنَ يُنَزَّلُ الْقُرْاٰنُ تُبْدَ لَكُمْؕ عَفَا اللهُ عَنْهَا وَاللهُ غَفُوْرٌ حَلِيْمٌ

হে মুমিনগণ! তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা তোমাদের নিকট প্রকাশ হলে তা তোমাদেরকে কষ্ট দেবে। কুরআন নাযিলের সময় তোমরা যদি সেসব বিষয়ে প্রশ্ন কর তবে তা তোমাদের নিকট প্রকাশ করা হবে। (এ বিধান জারি হওয়ার পূর্বে যা কিছু গত হয়ে গেছে) আল্লাহ সেগুলো ক্ষমা করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও সহনশীল। (সূরা মায়েদা- ১০১)

ব্যাখ্যা : কোন কোন লোক নবী ﷺ কে বিভিন্ন অদ্ভূত প্রশ্ন করত, যার সাথে দ্বীনের কোন স্বার্থ জড়িত থাকত না। দুনিয়ার কোন প্রয়োজনের সাথেও এর সম্পর্ক থাকত না। যেমন, একবার এক ব্যক্তি প্রকাশ্য জনসমাবেশে তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘আমার আসল পিতা কে? এমনিভাবে অনেক লোক শরীয়াতের বিধানের ব্যাপারে অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করত; এমনকি এমনসব বিষয় নির্ধারণ করতে চাইত, যা সঙ্গত কারণেই শরীয়াতের বিধানদাতা নিজেই অনির্ধারিত করে রেখেছেন। এর কারণ এ নয় যে, বিধানদাতা সেগুলো বর্ণনা করতে ভুলে গেছেন অথবা এগুলো বিস্তারিত বর্ণনা করার প্রয়োজন ছিল কিন্তু তা করেননি। এর আসল কারণ হচ্ছে, বিধানদাতা এ বিষয়গুলোর বিস্তারিত রূপ সংকুচিত ও সীমাবদ্ধ করতে চান না; বরং এ বিধানগুলোর মধ্যে মানুষের জন্য প্রশস্ততা ও ব্যাপকতা রাখতে চান। এখন যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে অযথা প্রশ্ন উত্থাপন করে এর বিস্তারিত রূপ ও সীমাবদ্ধতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে এবং অনুমান করে কোন সংক্ষিপ্ত বিষয়কে বিস্তারিত, ব্যাপকতাকে সীমাবদ্ধ এবং অনির্দিষ্টকে নির্দিষ্ট করে, তবে সে আসলে মুসলিমদেরকে বিরাট বিপদের মুখে ঠেলে দেয়। কারণ প্রাকৃতিক বিষয়াদি যতবেশি বিস্তারিত আকারে সামনে আসবে, আল্লাহর বিধানের সাথে ততবেশি শর্ত জড়িত হবে এবং ঈমানদারদের জন্য জটিলতা বেড়ে যাবে। এগুলোকে যতবেশি সীমাবদ্ধ করে দেয়া হবে আনুগত্যকারীদের জন্য নির্দেশ অমান্য করার সম্ভাবনা ততবেশি দেখা দেবে।

اَمْ تُرِيْدُوْنَ اَنْ تَسْأَلُوْا رَسُوْلَكُمْ كَمَا سُئِلَ مُوْسٰى مِنْ قَبْلُؕ وَمَنْ يَّتَبَدَّلِ الْكُفْرَ بِالْاِيْمَانِ فَقَدْ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِيْلِ

তোমরা কি চাও যে, তোমাদের রাসূলকে সেভাবে প্রশ্ন করবে যেভাবে ইতোপূর্বে প্রশ্ন করা হয়েছিল মূসাকে? আর যে ব্যক্তি ঈমানের পরিবর্তে কুফরী অবলম্বন করে, নিশ্চয় সে সঠিক পথ হতে দূরে সরে পড়ে। (সূরা বাক্বারা- ১০৮)

ব্যাখ্যা : ইয়াহুদিরা তিলকে তাল করে সূক্ষ্ম বিষয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করত। তাই এ ব্যাপারে আল্লাহ মুসলিমদেরকে ইয়াহুদিদের নীতি অবলম্বন করা থেকে দূরে থাকার জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন। নবী ﷺও এ ব্যাপারে বলতেন, অনর্থক প্রশ্ন করা এবং তিলকে তাল করার কারণে পূর্ববর্তী অনেক উম্মত ধ্বংস হয়ে গেছে, কাজেই তোমরা এ পথে পা দিয়ো না। তোমাদেরকে যে নির্দেশ দেয়া হয় তা মেনে চলো এবং যে বিষয়গুলো থেকে নিষেধ করা হয় সেগুলো থেকে দূরে থাকো।

কথা বলার সময় সাদাকা দেয়ার নির্দেশ :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِذَا نَاجَيْتُمُ الرَّسُوْلَ فَقَدِّمُوْا بَيْنَ يَدَيْ نَجْوَاكُمْ صَدَقَةً-ؕ ذٰلِكَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَاَطْهَرُؕ فَاِنْ لَّمْ تَجِدُوْا فَاِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন রাসূলের সাথে চুপে চুপে কথা বলতে যাবে তখন তোমরা কথা বলার পূর্বে কিছু সাদাকা প্রদান করবে। এটা তোমাদের জন্য শ্রেয় এবং পবিত্র থাকার উত্তম উপায়। তবে যদি তোমরা তাতে সামর্থ্যবান না হও তাহলে আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু। (সূরা মুজাদালা- ১২)

ব্যাখ্যা : ইয়াহুদি ও মুনাফিকরা সাধারণ মুসলিমদের মনে কষ্ট প্রদান এবং নিজেদের প্রাধান্য বিস্তার করার উদ্দেশ্যে রাসূল ﷺ এর নিকট দীর্ঘালাপ জুড়ে দিত। কিন্তু তিনি এটা পছন্দ করতেন না। এতে সাধারণ মুসলিমদের মনেও কষ্ট অনুভূত হতো। আবার নবীর সাথে অনেকেই নির্জনে কথা বলতে চাইত, কিন্তু সবাইকে সময় দেয়া তার জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতটি নাযিল করে আলাপকারীদের উপর সাদাকা ধার্য করে দিলেন। একমাত্র আলী (রাঃ) এ বিধানের উপর আমল করেছিলেন। পরে এ বিধান মানসূখ (রহিত) করা হয়।

পরবর্তীতে এ আদেশ রহিত করা হয় :

اَ اَشْفَقْتُمْ اَنْ تُقَدِّمُوْا بَيْنَ يَدَيْ نَجْوَاكُمْ صَدَقَاتٍؕ فَاِذْ لَمْ تَفْعَلُوْا وَتَابَ اللهُ عَلَيْكُمْ فَاَقِيْمُوا الصَّلَاةَ وَاٰتُوا الزَّكَاةَ وَاَطِيْعُوا اللهَ وَرَسُوْلَهٗؕ وَاللهُ خَبِيْرٌ ۢبِمَا تَعْمَلُوْنَ

তোমরা কি চুপে চুপে কথা বলার পূর্বে সাদাকা প্রদান করতে ভয় পেয়েছ? অতএব যখন তোমরা সাদাকা দিতে পারলে না এবং আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিলেন, তখন তোমরা যথারীতি সালাত কায়েম করো, যাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো। আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত। (সূরা মুজাদালা- ১৩)

তাঁকে সাধারণ লোকের মতো আহবান করতে নিষেধ করা হয়েছে :

لَا تَجْعَلُوْا دُعَآءَ الرَّسُوْلِ بَيْنَكُمْ كَدُعَآءِ بَعْضِكُمْ بَعْضًا

রাসূলের আহবানকে তোমরা তোমাদের একে অপরের প্রতি আহবানের মতো গণ্য করো না।

(সূরা নূর- ৬৩)

ব্যাখ্যা : আয়াতের তিনটি অর্থ হতে পারে এবং তিনটিই যুক্তিসংগত। (এক) রাসূলের আহবানকে কোন সাধারণ মানুষের আহবানের মতো মনে করো না। অর্থাৎ রাসূলের আহবান অস্বাভাবিক গুরুত্বের অধিকারী। (দুই) রাসূলের দু‘আকে সাধারণ মানুষের দু‘আর মতো মনে করো না। তিনি খুশী হয়ে দু‘আ করলে তোমাদের জন্য এর চেয়ে বড় আর কোন নিয়ামত নেই। আর নারাজ হয়ে বদ্দু‘আ করলে তার চেয়ে বড় আর কোন দুর্ভাগ্য তোমাদের জন্য থাকবে না। (তিন) রাসূলকে ডাকা সাধারণ মানুষের একে অপরকে ডাকার মতো হওয়া উচিত নয়। অর্থাৎ তোমরা সাধারণ লোকদেরকে যেভাবে তাদের নাম ধরে উচ্চৈঃস্বরে ডাক সেভাবে রাসূল ﷺ কে ডেকো না; বরং তাঁর সম্মান বজায় রেখে ডাকো।

অনুমতি ছাড়া নবীর মজলিস থেকে উঠা নিষেধ করা হয়েছে :

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِه وَاِذَا كَانُوْا مَعَهٗ عَلٰۤى اَمْرٍ جَامِعٍ لَّمْ يَذْهَبُوْا حَتّٰى يَسْتَأْذِنُوْهُؕ اِنَّ الَّذِيْنَ يَسْتَأْذِنُوْنَكَ اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَرَسُوْلِه ۚ فَاِذَا اسْتَأْذَنُوْكَ لِبَعْضِ شَأْنِهِمْ فَأْذَنْ لِّمَنْ شِئْتَ مِنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمُ اللهَؕ اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

মুমিন তো তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনে এবং রাসূলের সাথে সমষ্টিগত ব্যাপারে একত্র হলে তাঁর অনুমতি ব্যতীত সরে পড়ে না। আর যারা তোমার নিকট অনুমতি প্রার্থনা করে তারাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাসী। অতএব তারা তাদের কোন কাজে বাইরে যাওয়ার জন্য তোমার অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা অনুমতি দিয়ো এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা নূর- ৬২)

নবী ﷺ এর সাথে উঁচু আওয়াজে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَرْفَعُوْاۤ اَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوْا لَهٗ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ اَنْ تَحْبَطَ اَعْمَالُكُمْ وَاَنْتُمْ لَا تَشْعُرُوْنَ

হে মুমিনগণ! তোমাদের আওয়াজ নবীর আওয়াজের চেয়ে উঁচু করো না এবং তোমরা নবীর সাথে সে রকম উঁচু আওয়াজে কথা বলো না, যেভাবে একে অপরের সাথে বলে থাক। (এ বিধান এজন্য যে) যাতে এমন যেন না হয়- তোমাদের আমল বরবাদ হয়ে গেল অথচ তোমরা টেরও পেলে না। (সূরা হুজুরাত- ২)

আওয়াজ নিচু করা তাক্বওয়ার পরিচয় :

اِنَّ الَّذِيْنَ يَغُضُّوْنَ اَصْوَاتَهُمْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ امْتَحَنَ اللهُ قُلُوْبَهُمْ لِلتَّقْوٰىؕ لَهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّاَجْرٌ عَظِيْمٌ

যারা আল্লাহর রাসূলের সাথে কথা বলার সময় নিজেদের আওয়াজ নিচু রাখে তারা আসলে ঐসব লোক, আল্লাহ যাদের অন্তর তাক্বওয়ার জন্য বাছাই করে নিয়েছেন। তাদের জন্য রয়েছে মাগফিরাত ও মহাপুরস্কার। (সূরা হুজুরাত- ৩)

ব্যাখ্যা : যারা রাসূল ﷺ এর মজলিসে ওঠাবসা ও যাতায়াত করতেন তাদেরকে এ আদব-কায়দা শিক্ষা দেয়া হয়েছিল যে, যেন তারা তাঁর সম্মান ও মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রাখেন এবং তাঁর সাথে উচ্চৈঃস্বরে কথা না বলেন। কেননা রাসূল ﷺ এর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সামান্য শিথিলতাও এত বড় গোনাহ যে, তাতে ব্যক্তির সারা জীবনের নেক আমল ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

বাহির থেকে ডাকাডাকি করতে নিষেধ করা হয়েছে :

اِنَّ الَّذِيْنَ يُنَادُوْنَكَ مِنْ وَّرَآءِ الْحُجُرَاتِ اَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُوْنَ

(হে রাসূল!) যারা আপনাকে ঘরের বাইরে থেকে ডাকাডাকি করে তাদের বেশির ভাগ লোকই বুঝে না।

(সূরা হুজুরাত- ৪)

ব্যাখ্যা : কিছু লোক নবী ﷺ এর সাথে সাক্ষাৎ করতে আসলে নবীর স্ত্রীদের ঘরের চারদিক দিয়ে ঘুরে বাহির থেকেই তাঁকে ডাকতে থাকত। লোকজনের এ আচরণে রাসূল ﷺ এর খুব কষ্ট হতো। কিন্তু স্বভাবগত কারণে তিনি এসব সহ্য করে যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা এ নির্দেশ দান করলেন যে, যখন তারা তাঁকে পাবে না, তখন ধৈর্যের সাথে বসে সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে, যখন তিনি নিজেই তাদেরকে সাক্ষাৎ দানের জন্য বেরিয়ে আসবেন।

নবী ﷺ এর উপর দরূদ পাঠের নির্দেশ :

اِنَّ اللهَ وَمَلَآئِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيِّؕ يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا

নিশ্চয় আল্লাহ নবীর প্রতি দরূদ (রহমত) প্রেরণ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারাও নবীর জন্য রহমত প্রার্থনা করে। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবীর জন্য রহমত প্রার্থনা করো এবং তার প্রতি প্রচুর পরিমাণে সালাম প্রেরণ করো। (সূরা আহযাব- ৫৬)

ব্যাখ্যা : এর অর্থ হচ্ছে, হে লোকেরা! মুহাম্মাদ ﷺ এর মাধ্যমে তোমরা সঠিক পথের সন্ধান পেয়েছো, তাই তাঁর মর্যাদা অনুধাবন করো এবং তাঁর মহা অনুগ্রহের হক আদায় করো। তোমরা মূর্খতার অন্ধকারে পথ ভুলে বিপথে চলছিলে। এ ব্যক্তি তোমাদেরকে জ্ঞানের আলোকবর্তিকা দান করেছেন, নৈতিক অধঃপতন থেকে উন্নত মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। তাই তোমাদের কৃতজ্ঞতার অনিবার্য দাবী হচ্ছে, শত্রুরা এ ব্যক্তির প্রতি যে পরিমাণ হিংসা ও বিদ্বেষ পোষণ করে, তোমরা তাঁর প্রতি তার চেয়ে বেশি ভালোবাসা পোষণ করো। তারা তাঁর যতটা নিন্দা করে তোমরা তার চেয়ে বেশি তাঁর প্রশংসা করো। তাঁর পক্ষে সেই একই দু‘আ করো, যা আল্লাহর ফেরেশতারা দিনরাত তাঁর জন্য করে যাচ্ছে, হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার নবী যেমন আমাদের প্রতি বিপুল অনুগ্রহ করেছেন তেমনি তুমিও তাঁর প্রতি অগণিত রহমত বর্ষণ করো এবং তাঁর মর্যাদা সবচেয়ে বেশি উন্নত করো।

এ আয়াতে মুসলিমদেরকে দু’টি বিষয়ের হুকুম দেয়া হয়েছে। একটি হচ্ছে, صَلُّوْا عَلَيْهِ (সাল্লূ আলাইহি) অর্থাৎ তাঁর প্রতি দরূদ পড়ো। অন্যটি হচ্ছে, وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا (ওয়া সাল্লিমূ তাসলীমা) অর্থাৎ তাঁর প্রতি সালাম ও প্রশান্তি প্রেরণ করো। صَلُّوْا عَلَيْهِ (সাল্লূ আলাইহি) এর অর্থ হচ্ছে, তোমরা তাঁর অনুরক্ত হয়ে যাও, তাঁর প্রশংসা করো এবং তাঁর জন্য দু‘আ করো। আর وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا (ওয়া সাল্লিমূ তাসলীমা) বলার অর্থ হচ্ছে, তোমরা তাঁর জন্য পূর্ণ নিরাপত্তার দু‘আ করো। তাঁর বিরোধিতা করা থেকে দূরে থাকো এবং তাঁর যথার্থ আদেশ পালনকারীতে পরিণত হও। এ হুকুমটি নাযিল হওয়ার পর বহু সাহাবী রাসূল ﷺ কে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি তো আমাদেরকে (সাধারণভাবে) সালামের পদ্ধতি সম্পর্কে বলে দিয়েছেন। কিন্তু আপনার প্রতি সালাম পাঠানোর পদ্ধতিটা কি? এর জবাবে নবী ﷺ দরূদে ইবরাহীম শিখিয়েছেন। (সহীহ বুখারী, হা/৬৩৫৭; সহীহ মুসলিম, হা/৯৩৫)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন