hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৩১
পর্ব- ১৪ : মুসলিমদের জামা‘আত অধ্যায়- ১ : ঐক্যবদ্ধ হওয়ার গুরুত্ব
ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আল্লাহর আহবান :

وَاعْتَصِمُوْا بِحَبْلِ اللهِ جَمِيْعًا وَّلَا تَفَرَّقُوْا

আর তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রশিকে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। (সূরা আলে ইমরান- ১০৩)

ব্যাখ্যা : আল্লাহর রশি বলতে তাঁর দ্বীনকে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহর দ্বীনকে রশির সাথে তুলনা করার কারণ হচ্ছে- এটি এমন একটি সম্পর্ক, যা একদিকে আল্লাহর সাথে ঈমানদারদের সম্পর্ক জুড়ে দেয়। অন্যদিকে সমস্ত ঈমানদারদেরকে পরস্পরের সাথে মিলিয়ে জামায়াতবদ্ধ করে। এ রশিকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরার তাৎপর্য হচ্ছে, মুসলিমরা দ্বীনকেই প্রকৃত গুরুত্বের অধিকারী মনে করবে, সে ব্যাপারেই আগ্রহ পোষণ করবে, তা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাবে এবং পরস্পরের সাথে সহযোগিতা করবে। যেখানেই মুসলিমরা দ্বীনের মৌলিক শিক্ষা ও দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়বে এবং তাদের সমগ্র দৃষ্টি খুঁটিনাটি বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে সেখানেই অনিবার্যভাবে তাদের মধ্যে সে একই প্রকারে দলাদলি ও মতবিরোধ দেখা দেবে, যা ইতোপূর্বে বিভিন্ন নবীর উম্মতকে জীবনের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে দুনিয়া ও আখিরাতে লাঞ্ছনার গর্তে নিক্ষেপ করেছিল।

আল্লাহ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হতে নিষেধ করেছেন :

وَلَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ تَفَرَّقُوْا وَاخْتَلَفُوْا مِنْ ۢبَعْدِ مَا جَآءَهُمُ الْبَيِّنَاتُؕ وَاُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ عَظِيْمٌ

তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ আসার পরও মতভেদে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। (সূরা আলে ইমরান- ১০৫)

ব্যাখ্যা : এখানে পূর্ববর্তী নবীদের এমনসব উম্মতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, যারা সত্য দ্বীনের সরল ও সুস্পষ্ট শিক্ষা লাভ করেছিল; কিন্তু কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর দ্বীনের মূল বিষয়গুলো পরিত্যাগ করে দ্বীনের সাথে সম্পর্কহীন অপ্রয়োজনীয় খুঁটিনাটি বিষয়াবলির ভিত্তিতে নিজেদেরকে একটি আলাদা ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসেবে গড়ে তুলতে শুরু করে দিয়েছিল। তারপর অবান্তর ও অহেতুক কথা নিয়ে এমনভাবে কলহে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল যে, আল্লাহ তাদের উপর যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তার কথা তারা ভুলেই গিয়েছিল এবং বিশ্বাস ও নৈতিকতার যেসব মূলনীতির উপর মানুষের সাফল্য ও কল্যাণের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে, তার প্রতি কোন আগ্রহই তাদের ছিল না।

وَلَا تَكُوْنُوْا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ مِنَ الَّذِيْنَ فَرَّقُوْا دِيْنَهُمْ وَكَانُوْا شِيَعًاؕ كُلُّ حِزْبٍ ۢبِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُوْنَ

অতএব তুমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা তাদের দ্বীনকে খন্ড-বিখন্ড করে নিয়েছে এবং ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আর প্রত্যেক দলই নিজ নিজ অনুসৃত নিয়ম নিয়েই উল্লাসিত। (সূরা রূম- ৩১, ৩২)

পারস্পরিক বিদ্বেষের কারণেই বিভেদ সৃষ্টি হয় :

وَمَا تَفَرَّقُوْاۤ اِلَّا مِنْ ۢبَعْدِ مَا جَآءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا ۢبَيْنَهُمْ

তাদের নিকট (তাওহীদের জ্ঞান) আসার পরও শুধুমাত্র পারস্পরিক বাড়াবাড়ির কারণে তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়। (সূরা শূরা- ১৪)

ব্যাখ্যা : অর্থাৎ বিভেদের কারণ এ ছিল না যে, আল্লাহ নবী-রাসূল পাঠাননি এবং কিতাবও নাযিল করেননি। তাই সঠিক পথ না জানার কারণে মানুষ নিজেদের জন্য আলাদা-আলাদা ধর্ম ও জীবনাদর্শ আবিষ্কার করে নিয়েছে। বরং তাদের মধ্যে এই বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে জ্ঞান আসার পর। তাই সেজন্য আল্লাহ দায়ী নন, বরং সেসব লোক নিজেরাই দায়ী, যারা দ্বীনের সুস্পষ্ট নীতিমালা এবং শরীয়াতের সুস্পষ্ট বিধি-নিষেধ থেকে দূরে সরে গিয়ে নতুন নতুন ধর্ম ও পথ বানিয়ে নিয়েছে। কোন প্রকার সদিচ্ছা এই মতভেদ সৃষ্টির চালিকা শক্তি ছিল না। এটা ছিল অভিনব ধারণা প্রকাশের আকাঙ্ক্ষা মাত্র। নিজেদের নাম ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চিন্তা, পারস্পরিক জেদ, একে অপরকে পরাস্ত করার প্রচেষ্টা এবং সম্পদ ও মর্যাদা অর্জনের প্রচেষ্টা- এসবই ছিল সেই নতুন নতুন আকীদা, ইবাদাত এবং জীবনাদর্শ উদ্ভাবনের পথে উৎসাহ যোগানোর মূল কারণ। এই মতভেদ আল্লাহর বান্দাদের একটি বড় অংশকে দ্বীনের সুস্পষ্ট রাজপথ থেকে সরিয়ে বিভিন্নভাবে বিক্ষিপ্ত করে দিয়েছে। এমনকি এর ফলে রক্তপাতও ঘটছে।

দ্বীনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের থেকে দূরে থাকতে হবে :

اِنَّ الَّذِيْنَ فَرَّقُوْا دِيْنَهُمْ وَكَانُوْا شِيَعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِيْ شَيْءٍؕ اِنَّمَاۤ اَمْرُهُمْ اِلَى اللهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوْا يَفْعَلُوْنَ

নিশ্চয় যারা দ্বীনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের উপর তোমার কোন দায়িত্ব নেই; তাদের বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করবেন। (সূরা আন‘আম- ১৫৯)

ব্যাখ্যা : এখানে নবী ﷺ এর মাধ্যমে আল্লাহর সত্য দ্বীনের সকল অনুসারীকে সম্বোধন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বক্তব্যের সারনির্যাস হচ্ছে, এক আল্লাহকে ইলাহ্ ও রব বলে মেনে নাও। আল্লাহর সত্তা, গুণাবলি, ক্ষমতা ও অধিকারে কাউকে শরীক করো না। আল্লাহর সামনে নিজেকে জবাবদিহি করতে হবে মনে করে আখিরাতের প্রতি ঈমান আনো। আল্লাহ তাঁর রাসূলদের ও কিতাবসমূহের মাধ্যমে যে মূলনীতি শিক্ষা দিয়েছেন সে অনুযায়ী জীবন-যাপন করো। এগুলোই চিরকাল আসল দ্বীন হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে এবং এখনো যথার্থ দ্বীন বলতে এগুলোকেই বুঝায়। জন্মের প্রথম দিন থেকে প্রত্যেক মানুষকে এ দ্বীনই দেয়া হয়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন যুগের লোকেরা তাদের নিজস্ব চিন্তা ও মানসিকতার ভ্রান্ত উদ্ভাবনী ক্ষমতার সাহায্যে অথবা নিজেদের প্রবৃত্তির প্রভাবে এ আসল দ্বীনকে বিকৃত করে বিভিন্ন প্রকার মতবাদ গড়ে তুলেছে। এ দ্বীনের মধ্যে তারা নতুন নতুন কথা মিশিয়ে দিয়েছে। নিজেদের কুসংস্কার, বিলাসিতা, আন্দাজ-অনুমান ও নিজেদের দার্শনিক চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে এর আকীদা বিশ্বাসে ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করেছে এবং কাট-ছাঁট করে তাকে পুরোপুরি বিকৃত করে দিয়েছে। অনেক নতুন বিষয় উদ্ভাবন করে তার বিধানসমূহের সাথে জুড়ে দিয়েছে। মনগড়া আইন রচনা করেছে। আইনের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নিয়ে অযথা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছে। ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে মতবিরোধ করার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করেছে। গুরুত্বপূর্ণকে গুরুত্বহীন ও গুরুত্বহীনকে গুরুত্বপূর্ণ বানিয়ে দিয়েছে। যেসব নবী-রাসূল এ দ্বীন প্রচার করেছেন এবং যেসব মনীষীগণ এ দ্বীন প্রতিষ্ঠায় জীবনপাত করে গেছেন, তাদের কারো কারো প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রকাশের ক্ষেত্রে অধিক বাড়াবাড়ি করেছে; আবার কারো কারো প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষের প্রকাশ ঘটিয়েছে এবং তাদের বিরোধিতা করেছে। এভাবে অসংখ্য ধর্ম ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটেই চলছে। এদের প্রত্যেকটি ধর্ম ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উদ্ভব মানবসমাজকে কলহ, বিবাদ ও পারস্পরিক সংঘর্ষে লিপ্ত করেছে। এভাবে মানবসমাজ বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে চলেছে। কাজেই বর্তমানে যে ব্যক্তিই আসল দ্বীনের অনুসারী হবে, তার জন্য এসব বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় ও দলাদলি থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া এবং তাদের থেকে নিজেদের পথকে আলাদা করে নেয়াই অপরিহার্য হবে।

সংগঠিত হতে হবে ঈমানের ভিত্তিতে, আত্মীয়তার ভিত্তিতে নয় :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوْاۤ اٰبَآءَكُمْ وَاِخْوَانَكُمْ اَوْلِيَآءَ اِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَى الْاِيْمَانِ

হে মুমিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভ্রাতা যদি ঈমানের বিপরীতে কুফরীকে ভালোবাসে, তবে তাদেরকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করো না। (সূরা তাওবা- ২৩)

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ اِخْوَةٌ فَاَصْلِحُوْا بَيْنَ اَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ

নিশ্চয় মুমিনরা একে অপরের ভাই। সুতরাং তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে সুসম্পর্ক বহাল রাখো এবং আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায়, তোমাদের উপর দয়া করা হবে। (সূরা হুজুরাত- ১০)

وَاذْكُرُوْا نِعْمَةَ اللهِ عَلَيْكُمْ اِذْ كُنْتُمْ اَعْدَآءً فَاَلَّفَ بَيْنَ قُلُوْبِكُمْ فَاَصْبَحْتُمْ بِنِعْمَتِهٖۤ اِخْوَانًا

তোমাদের উপর আল্লাহর দেয়া নিয়ামতকে স্মরণ করো। যখন তোমরা একে অপরের শত্রু ছিলে; এমতাবস্থায় তিনি তোমাদের অন্তরে ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। ফলে তোমরা তার অনুগ্রহে পরস্পর ভাই ভাই হয়ে গেলে। (সূরা আলে ইমরান- ১০৩)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন