hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৩
অধ্যায়- ৮ : আল্লাহ অসীম দয়ালু ও অনুগ্রহশীল
আল্লাহ দানশীল :

رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ اِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَةًۚ اِنَّكَ اَنْتَ الْوَهَّابُ

হে আমাদের রব! হেদায়াত দানের পর আমাদের অন্তরকে বক্র করে দেবেন না। আর আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন; নিশ্চয় আপনি মহান দাতা। (সূরা আলে ইমরান- ৮)

তিনি অসীম অনুগ্রহের মালিক :

وَاللهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيْمِ

আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল। (সূরা আলে ইমরান- ৭৪)

وَرَبُّكَ الْغَفُوْرُ ذُو الرَّحْمَةِ

আর তোমার প্রতিপালক পরম ক্ষমাশীল ও দয়াবান। (সূরা কাহফ- ৫৮)

ব্যাখ্যা : আল্লাহর রহমতের শেষ নেই। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল ﷺ এর নিকট থেকে শুনেছি যে, আল্লাহ যেদিন রহমত সৃষ্টি করেছেন সেদিন রহমতকে একশত ভাগে ভাগ করে একভাগ সমস্ত সৃষ্টিকে দিয়েছেন, আর বাকী নিরানববই ভাগ নিজের কাছে রেখেছেন। যদি কোন কাফির আল্লাহর নিকট যে রহমত আছে তার পরিমাণ সম্পর্কে জানত, তাহলে সে জান্নাতের ব্যাপারে নিরাশ হতো না। (অপরপক্ষে) কোন মুমিন যদি আল্লাহর কাছে যে শাস্তি রয়েছে তার পরিমাণ সম্পর্কে জানত, তবে (জাহান্নামের) আগুন থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করত না। (সহীহ বুখারী, হা/৬৪৬৯)

সকল অনুগ্রহই আল্লাহর হাতে :

قُلْ اِنَّ الْفَضْلَ بِيَدِ اللهِۚ يُؤْتِيْهِ مَنْ يَّشَآءُؕ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِيْمٌ

বলো, সকল অনুগ্রহ আল্লাহর হাতে; তিনি যাকে চান তাকে অনুগ্রহ করেন। আর আল্লাহ প্রশস্ত ও মহাজ্ঞানী। (সূরা আলে ইমরান- ৭৩)

মুমিনদের ব্যাপারে আল্লাহ খুবই অনুগ্রহশীল:

وَاللهُ ذُوْ فَضْلٍ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ

নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বাসীদের প্রতি অনুগ্রহশীল। (সূরা আলে ইমরান- ১৫২)

আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক :

وَاللهُ وَلِيُّ الْمُؤْمِنِيْنَ

আর আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক। (সূরা আলে ইমরান- ৬৮)

আল্লাহ মুত্তাক্বীদের অভিভাবক :

وَاللهُ وَلِيُّ الْمُتَّقِيْنَ

আর আল্লাহ মুত্তাক্বীদের অভিভাবক । (সূরা জাসিয়া- ১৯)

আল্লাহর রহমত সবকিছুর উপর বিস্তৃত :

وَرَحْمَتِيْ وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍؕ فَسَاَكْتُبُهَا لِلَّذِيْنَ يَتَّقُوْنَ وَيُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ وَالَّذِيْنَ هُمْ بِاٰيَاتِنَا يُؤْمِنُوْنَ

আমার অনুগ্রহ প্রত্যেক বস্তুর উপর বিস্তৃত। সুতরাং আমি সেটা তাদের জন্য নির্ধারণ করব যারা তাক্বওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় এবং আমার নিদর্শনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। (সূরা আ‘রাফ- ১৫৬)

আল্লাহ অনুগ্রহ করাকে নিজ কর্তব্য করে নিয়েছেন :

قُلْ لِّمَنْ مَّا فِى السَّمَاوَاتِ وَالْاَ رْضِؕ قُلْ لِّلّٰهِؕ كَتَبَ عَلٰى نَفْسِهِ الرَّحْمَةَ

বলো, আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে তা কার? বলো, ‘আল্লাহরই’। (জেনে রেখো) দয়া করা তিনি তাঁর কর্তব্য হিসেবে স্থির করে নিয়েছেন। (সূরা আন‘আম- ১২)

তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে নিজ অনুগ্রহে আপন করে নেন :

يَخْتَصُّ بِرَحْمَتِهٖ مَنْ يَّشَآءُؕ وَاللهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيْمِ

তিনি যাকে ইচ্ছা নিজ অনুগ্রহে বিশেষিত করেন; আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল। (সূরা আলে ইমরান- ৭৪)

আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী থাকে :

اِنَّ رَحْمَةَ اللهِ قَرِيْبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِيْنَ

নিশ্চয় আল্লাহর অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী। (সূরা আ‘রাফ- ৫৬)

ব্যাখ্যা : আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা যখন সকল মাখলুককে সৃষ্টি করেন, তখন তাঁর কাছে আরশে রক্ষিত কিতাবে লিখলেন, ‘‘আমার রহমত আমার গযবের উপর সর্বদা বিজয়ী।’’ (সহীহ বুখারী, হা/৭৪০৪)

আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি মেহেরবান :

وَاللهُ رَءُوْفٌ ۢبِالْعِبَادِ

আর আল্লাহ বান্দাদের প্রতি খুবই স্নেহপরায়ণ। (সূরা বাক্বারা- ২০৭)

اِنَّ اللهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيْمًا

নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। (সূরা নিসা- ২৯)

আল্লাহ বান্দাদের প্রতি অনুগ্রহ বর্ষণ করেন :

هُوَ الَّذِيْ يُصَلِّيْ عَلَيْكُمْ وَمَلَآئِكَتُهٗ لِيُخْرِجَكُمْ مِّنَ الظُّلُمَاتِ اِلَى النُّوْرِؕ وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَحِيْمًا

তিনিই তোমাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারাও তোমাদের জন্য রহমত প্রার্থনা করে। যেন আল্লাহ তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে বের করে আনেন। আর তিনি মুমিনদের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল। (সূরা আহযাব- ৪৩)

আল্লাহ পৃথিবীকে মানুষের জন্য বসবাসের উপযোগী করে দিয়েছেন :

اَللهُ الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمُ الْاَ رْضَ قَرَارًا وَّالسَّمَآءَ بِنَآءً وَّصَوَّرَكُمْ فَاَحْسَنَ صُوَرَكُمْ وَرَزَقَكُمْ مِّنَ الطَّيِّبَاتِؕ ذٰلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمْۚ فَتَبَارَكَ اللهُ رَبُّ الْعَالَمِيْنَ

আল্লাহই তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন বসবাসের উপযোগী, আকাশকে করেছেন ছাদ, তোমাদের আকৃতিকে করেছেন উৎকৃষ্ট এবং তোমাদেরকে দান করেছেন পবিত্র রিযিক। তিনিই আল্লাহ, তোমাদের প্রতিপালক। আল্লাহ কতই না মহান, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। (সূরা মু’মিন- ৬৪)

ব্যাখ্যা : আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করার পূর্বেই একটি সুরক্ষিত ও নিরাপদ আবাসস্থল প্রস্তুত করেছেন। তারপর তাদেরকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে, একটি সর্বোত্তম দেহ কাঠামো, উপযুক্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং উন্নত দেহ ও চিন্তাশক্তি দিয়েছেন। এ দেহ কাঠামো, হাত, পা, চোখ, নাক, কান, বাকশক্তিসম্পন্ন এ জিহবা এবং সর্বোত্তম যোগ্যতার ভান্ডার এ মস্তিষ্ক কেউ নিজে তৈরি করেনি, কারো বাবা-মাও তৈরি করেনি, কোন দেবতার মধ্যেও তা তৈরি করার ক্ষমতা নেই। এসব যোগ্যতা ও ক্ষমতার সৃষ্টিকারী হলেন সে মহাজ্ঞানী, দয়ালু ও সর্বশক্তিমান সত্তা, যিনি মানুষকে সৃষ্টি করার সময় পৃথিবীতে কাজ করার জন্য তাকে এ নজীরবিহীন দেহ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর জন্মলাভ করার সাথে সাথে তাঁর দয়ায় তোমরা প্রচুর পবিত্র খাদ্য পেয়েছ এবং পানাহারের এমনসব পবিত্র উপকরণ লাভ করেছ- যা নোংরা বা বিস্বাদ নয় বরং সুস্বাদু, আবার পঁচা-গলা ও দুর্গন্ধময়ও নয় বরং সুবাসিত। পানি, খাদ্য, শস্য, তরকারী, ফলমূল, দুধ, মধু, গোশত, লবণ, মরিচ ও মসলা মানুষের পুষ্টি সাধন এবং জীবনের পরিপূর্ণ আস্বাদন লাভের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ভূমি থেকে এ অগণিত খাদ্যভান্ডার উৎপাদনের এ ব্যবস্থা কে করেছে যে তার যোগান বন্ধ হয় না? চিন্তা করে দেখো, রিযিকের এ ব্যবস্থা না করেই যদি তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হতো তাহলে তোমাদের জীবনের পরিস্থিতি কী দাঁড়াত? সুতরাং এটা কি এ বিষয়ের সুস্পষ্ট প্রমাণ নয় যে, তোমাদের স্রষ্টা শুধু স্রষ্টাই নন, বরং মহাজ্ঞানী স্রষ্টা এবং অত্যন্ত দয়ালু প্রভু।

আল্লাহ বিশ্রামের জন্য রাতকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছেন :

اَللهُ الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِتَسْكُنُوْا فِيْهِ وَالنَّهَارَ مُبْصِرًاؕ اِنَّ اللهَ لَذُوْ فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلٰكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَشْكُرُوْنَ

আল্লাহই তোমাদের বিশ্রামের জন্য সৃষ্টি করেছেন রাত্রি এবং আলোকিত করেছেন দিবসকে। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। (সূরা মু’মিন- ৬১)

আল্লাহ বৃষ্টি দিয়ে বান্দার প্রতি রহমত বর্ষণ করেন :

وَهُوَ الَّذِيْ يُنَزِّلُ الْغَيْثَ مِنْ ۢبَعْدِ مَا قَنَطُوْا وَيَنْشُرُ رَحْمَتَهٗؕ وَهُوَ الْوَلِيُّ الْحَمِيْدُ

তারা যখন নিরাশ হয়ে পড়ে তখনই তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তাঁর করুণা বিস্তার করেন। আর তিনিই তো প্রশংসিত অভিভাবক। (সূরা শূরা- ২৮)

আল্লাহ আসমানকে স্থির রেখেছেন :

وَيُمْسِكُ السَّمَآءَ اَنْ تَقَعَ عَلَى الْاَ رْضِ اِلَّا بِاِذْنِهٖؕ اِنَّ اللهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ

আর তিনিই আকাশকে স্থির রাখেন, যাতে সেটা তাঁর অনুমতি ব্যতীত পৃথিবীর উপর পতিত না হয়। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। (সূরা হজ্জ- ৬৫)

আল্লাহ তাঁর বিধানকে সহজ করেছেন :

مَا يُرِيْدُ اللهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُمْ مِّنْ حَرَجٍ وَّلٰكِنْ يُّرِيْدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهٗ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ

আল্লাহ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না; বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করতে চান; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। (সূরা মায়েদা- ৬)

আল্লাহ মানুষকে ক্ষমা করতে চান :

يُرِيْدُ اللهُ لِيُبَيِّنَ لَكُمْ وَيَهْدِيَكُمْ سُنَنَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَيَتُوْبَ عَلَيْكُمْؕ وَاللهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ

আল্লাহ ইচ্ছা করেন তোমাদের নিকট বিশদভাবে বর্ণনা করতে আর তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি তোমাদেরকে অবহিত করতে এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করতে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়। (সূরা নিসা- ২৬)

আল্লাহ উত্তম উপদেশ প্রদানকারী :

اِنَّ اللهَ نِعِمَّا يَعِظُكُمْ بِهٖؕ اِنَّ اللهَ كَانَ سَمِيْعًا ۢبَصِيْراً

আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন তা কতই না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। (সূরা নিসা- ৫৮)

আল্লাহ বান্দাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে ডাকেন :

هُوَ الَّذِيْ يُنَزِّلُ عَلٰى عَبْدِهٖۤ اٰيَاتٍ ۢبَيِّنَاتٍ لِّيُخْرِجَكُمْ مِّنَ الظُّلُمَاتِ اِلَى النُّوْرِؕ وَاِنَّ اللهَ بِكُمْ لَرَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ

তিনিই তাঁর বানদাদের প্রতি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ অবতীর্ণ করেন, যাতে করে তিনি তোমাদেরকে সকল প্রকার অন্ধকার হতে আলোর দিকে বের করে নিয়ে আসতে পারেন; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি করুণাময় ও পরম দয়ালু। (সূরা হাদীদ- ৯)

আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে জান্নাতের দিকে আহবান করেন :

وَاللهُ يَدْعُوْاۤ اِلٰى دَارِ السَّلَامِ ؕ وَيَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ

আল্লাহ শান্তির আবাসের দিকে আহবান করেন এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন। (সূরা ইউনুস- ২৫)

আল্লাহ মুমিনের আমল নষ্ট করেন না :

اِنَّهٗ مَنْ يَّتَّقِ وَيَصْبِرْ فَاِنَّ اللهَ لَا يُضِيْعُ اَجْرَ الْمُحْسِنِيْنَ

নিশ্চয় যে ব্যক্তি মুত্তাক্বী এবং ধৈর্যশীল, আর আল্লাহ সেরূপ সৎকর্মশীলদের শ্রমফল নষ্ট করেন না। (সূরা ইউসুফ- ৯০)

وَاَنَّ اللهَ لَا يُضِيْعُ اَجْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ

নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না। (সূরা আলে ইমরান- ১৭১)

আল্লাহ আমলের চেয়েও বেশি সওয়াব দেন :

مَنْ جَآءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهٗ عَشْرُ اَمْثَالِهَاۚ وَمَنْ جَآءَ بِالسَّيِّئَةِ فَلَا يُجْزٰۤى اِلَّا مِثْلَهَا وَهُمْ لَا يُظْلَمُوْنَ

কেউ কোন সৎকাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে এবং কেউ কোন অসৎকাজ করলে তাকে শুধু তারই প্রতিফল দেয়া হবে; আর তাদের প্রতি কোন যুলুম করা হবে না। (সূরা আন‘আম- ১৬০)

ব্যাখ্যা : বান্দা আল্লাহ সম্পর্কে যেরকম ধারণা করবে তাঁকে সেরকমই পাবে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘আমার বান্দা আমার সম্পর্কে যেরকম ধারণা পোষণ করে, আমি তার জন্য সেরকমই। যখন সে আমাকে স্মরণ করে আমিও তাকে স্মরণ করি। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে আমিও মনে মনে তাকে স্মরণ করি। যদি সে লোকজনের মধ্যে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও এমন জামা‘আতে তাকে স্মরণ করে থাকি, যা তার জামা‘আত থেকে উত্তম। আর যে আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয় আমি তার দিকে এক গজ অগ্রসর হই। আর যে আমার দিকে এক গজ অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে দু’গজ অগ্রসর হই। আর যে আমার দিকে হেঁটে অগ্রসর হয় আমি তার দিকে দৌড়ে অগ্রসর হই। (সহীহ বুখারী, হা/৭৪০৫)

আল্লাহ বান্দাদের পাপ ক্ষমা করেন :

وَاِنَّ رَبَّكَ لَذُوْ مَغْفِرَةٍ لِّلنَّاسِ عَلٰى ظُلْمِهِمْۚ وَاِنَّ رَبَّكَ لَشَدِيْدُ الْعِقَابِ

মানুষের সীমালঙ্ঘন সত্ত্বেও তোমার প্রতিপালক মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল এবং তোমার প্রতিপালক শাসিত্ম দানে খুবই কঠোর। (সূরা রা‘দ- ৬)

اِنْ تَجْتَنِبُوْا كَبَآئِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنْكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَنُدْخِلْكُمْ مُّدْخَلًا كَرِيْمًا

তোমাদেরকে যা নিষেধ করা হয়েছে তার মধ্যে যা গুরুতর তা হতে বিরত থাকলে তোমাদের ছোট গোনাহসমূহ ক্ষমা করব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব। (সূরা নিসা- ৩১)

ব্যাখ্যা : আল্লাহ সংকীর্ণমনা নন। ছোটখাটো ভুল-ভ্রান্তি ধরে তিনি তাঁর বান্দাদেরকে শাস্তি দেন না। আমাদের আমলনামায় যদি বড় বড় অপরাধ না থাকে তাহলে ছোটখাটো অপরাধগুলোকে তিনি উপেক্ষা করেন। তবে যদি আমরা বড় বড় অপরাধ করে থাকি, তাহলে তিনি আমাদের ছোটখাটো অপরাধগুলোও হিসাবের মধ্যে গণ্য করবেন এবং সেজন্য পাকড়াও করবেন।

আল্লাহ বান্দাদেরকে অযথা শাস্তি দিতে চান না :

مَا يَفْعَلُ اللهُ بِعَذَابِكُمْ اِنْ شَكَرْتُمْ وَاٰمَنْتُمْؕ وَكَانَ اللهُ شَاكِرًا عَلِيْمًا

তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর ও ঈমান আনয়ন কর, তবে তোমাদেরকে শাস্তি দিয়ে আল্লাহর কী লাভ? আর আল্লাহ তো পুরস্কারদাতা ও সর্বজ্ঞ। (সূরা নিসা- ১৪৭)

আল্লাহ বান্দাদেরকে সংশোধনের সুযোগ দেন :

قَالَتْ رُسُلُهُمْ اَفِى اللهِ شَكٌّ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْاَ رْضِؕ يَدْعُوْكُمْ لِيَغْفِرَ لَكُمْ مِّنْ ذُنُوْبِكُمْ وَيُؤَخِّرَكُمْ اِلٰۤى اَجَلٍ مُّسَمًّى

তাদের রাসূলগণ বলেছিলেন, আল্লাহ সম্বন্ধে কি কোন সন্দেহ আছে, যিনি আসমান ও জমিনের সৃষ্টিকর্তা? তিনি তোমাদেরকে আহবান করেন তোমাদের পাপ মার্জনা করার জন্য এবং নির্দিষ্টকাল পর্যমত্ম তোমাদেরকে অবকাশ দেয়ার জন্য। (সূরা ইবরাহীম- ১০)

আল্লাহ বান্দাদের পরকালীন মঙ্গল চান :

تُرِيْدُوْنَ عَرَضَ الدُّنْيَا ۚ وَاللهُ يُرِيْدُ الْاٰخِرَةَؕ وَاللهُ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ

তোমরা পার্থিব সম্পদ কামনা কর এবং আল্লাহ চান আখিরাতের কল্যাণ; আর আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। (সূরা আনফাল- ৬৭)

আল্লাহ তাওবা কবুল করেন :

اَلَمْ يَعْلَمُوْاۤ اَنَّ اللهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهٖ وَيَاْخُذُ الصَّدَقَاتِ وَاَنَّ اللهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ

তারা কি জানে না যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন এবং ‘সাদাকা’ গ্রহণ করেন; নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা তাওবা- ১০৪)

وَهُوَ الَّذِيْ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهٖ وَيَعْفُوْا عَنِ السَّيِّئَاتِ وَيَعْلَمُ مَا تَفْعَلُوْنَ

তিনিই তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন এবং পাপসমূহ মোচন করেন; আর তোমরা যা কর তিনি তা জানেন। (সূরা শূরা- ২৫)

ব্যাখ্যা : কোন কোন ক্ষেত্রে উন্নত পর্যায়ের ঈমানদাররাও ভুল করতে পারে এবং তাদেরও ভুল হয়েছে। যতদিন মানুষ দুনিয়ায় মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকবে, ততদিন তার আমলনামায় শুধুমাত্র উৎকৃষ্ট মানের কার্যাবলি থাকবে এবং দোষ-ত্রুটি ও ভুল-ভ্রান্তি থাকবে না- এমনটি হতে পারে না। কিন্তু মহান আল্লাহর একটি বড় রহমত হচ্ছে, যতদিন মানুষ দাসত্বের অনিবার্য শর্তসমূহ পূর্ণ করবে, ততদিন আল্লাহ তার ভুল-ত্রুটি উপেক্ষা করতে থাকেন এবং তার কার্যাবলি যে ধরনের প্রতিদান লাভের যোগ্যতাসম্পন্ন হয়, নিজ অনুগ্রহে তার চেয়ে বেশি প্রতিদান দান করেন। অন্যথায় যদি প্রত্যেকটি ভুলের শাস্তি ও প্রত্যেকটি ভালো কাজের পুরস্কার আলাদাভাবে দেয়ার নিয়ম করা হতো, তাহলে কোন উন্নত পর্যায়ের সৎলোকও শাস্তি থেকে রেহাই পেত না। ক্ষমার দরজা আল্লাহ তা‘আলা সবসময় খোলা রাখেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি নবী ﷺ কে বলতে শুনেছি, আল্লাহর এক বান্দা গোনাহ করল। তারপর দু‘আ করল, হে রব! আমি গোনাহ করে ফেলেছি। অতঃপর বলল, আমার গোনাহ মাফ করে দাও। তখন তার প্রতিপালক বলেন, আমার বান্দা কি জানে যে তার এমন একজন প্রতিপালক আছেন, যিনি গোনাহ মাফ করে থাকেন আর উক্ত গোনাহের কারণে পাকড়াও ও করে থাকেন। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম। এরপর যতদিন আল্লাহর ইচ্ছা ততদিন সে এ অবস্থায় থাকল এবং আবার গোনাহ করল, এবারও সে বলল, হে প্রতিপালক! আমি গোনাহ করে ফেলেছি, আমার এ গোনাহ তুমি মাফ করে দাও। তখন আল্লাহ বললেন, আমার বান্দা কি জানে যে, তার এমন একজন রব আছেন, যিনি গোনাহ মাফ করেন আবার গোনাহের কারণে শাস্তিও দেন। আমি আমার বান্দাকে মাফ করে দিলাম। এরপর সে আল্লাহর ইচ্ছামত কিছুদিন এ অবস্থায় থাকল এবং পুনরায় গোনাহে লিপ্ত হলো। এবার সে বলল, হে রব! আমি আরেকটি গোনাহ করে ফেলেছি আমার এ গোনাহ মাফ করে দাও। তখন আল্লাহ বললেন, আমার বান্দা কি জানে যে, তার এমন একজন রব আছেন, যিনি গোনাহ মাফ করেন আবার গোনাহের কারণে শাস্তিও দেন। আচ্ছা আমি আমার বান্দাকে মাফ করে দিলাম। তিনবার এভাবে বললেন। (সহীহ বুখারী, হা/৭৫০৭)

غَافِرِ الذَّۢ نْبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيْدِ الْعِقَابِ ذِى الطَّوْلِ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ اِلَيْهِ الْمَصِيْرُ

যিনি পাপ ক্ষমাকারী, তাওবা কবুলকারী, যিনি শাস্তিদানে কঠোর ও শক্তিশালী। তিনি ব্যতীত (সত্য) কোন মা‘বূদ নেই। তাঁর নিকটই প্রত্যাবর্তন। (সূরা মু’মিন- ৩)

ব্যাখ্যা : আল্লাহ গোনাহ মাফকারী ও তাওবা কবুলকারী। এটা তাঁর আশা ও উৎসাহ দানকারী গুণ। এ গুণটি বর্ণনা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, যারা এখন পর্যন্ত বিদ্রোহ করে চলেছে, তারা যেন নিরাশ না হয়ে নিজেদের আচরণ পুনর্বিবেচনা করে। এখনো যদি তারা এ আচরণ থেকে বিরত হয়, তাহলে তারা আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারবে। তিনি কঠিন শাস্তিদাতা। এ গুণটি উল্লেখ করে মানুষকে এ মর্মে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, ইবাদাত ও দাসত্বের পথ অনুসরণকারীদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা যতটা দয়াবান, বিদ্রোহ ও অবাধ্য আচরণকারীদের জন্য তিনি ঠিক ততটাই কঠোর। যে সীমা পর্যন্ত তিনি ভুল-ত্রুটি ক্ষমা ও উপেক্ষা করেন, যখন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠি সে সীমা লঙ্ঘন করে তখন তারা তাঁর শাস্তির যোগ্য হয়ে যায়। আর তাঁর শাস্তি এমন ভয়াবহ যে, তা সহ্য করার ক্ষমতা কারো নেই। তিনি অত্যন্ত দয়ালু অর্থাৎ দানশীল, অভাবশূন্য এবং উদার। সমস্ত সৃষ্টিকূলের উপর প্রতি মুহূর্তে তাঁর নিয়ামত ও অনুগ্রহরাজি ব্যাপকভাবে বর্ষিত হচ্ছে। বান্দা যা কিছু লাভ করছে তা তাঁর দয়া ও অনুগ্রহেই লাভ করছে।

আল্লাহ বান্দার দু‘আ শুনেন এবং কবুল করেন :

اِنَّ رَبِّيْ لَسَمِيْعُ الدُّعَآءِ

আমার প্রতিপালক অবশ্যই প্রার্থনা শুনে থাকেন। (সূরা ইবরাহীম- ৩৯

আল্লাহ মুমিনদেরকে সাহায্য করেন :

وَكَانَ حَقًّا عَلَيْنَا نَصْرُ الْمُؤْمِنِيْنَ

আর মুমিনদের সাহায্য করা তো আমারই কর্তব্য। (সূরা রূম- ৪৭)

اَلَاۤ اِنَّ نَصْرَ اللهِ قَرِيْبٌ

শুনে নাও, নিশ্চয় আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটবর্তী। (সূরা বাক্বারা- ২১৪)

সাহায্যের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট :

وَكَفٰى بِاللهِ وَلِيًّا وَّكَفٰى بِاللهِ نَصِيْرًا

অভিভাবক হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট এবং সাহায্যকারী হিসেবেও আল্লাহ যথেষ্ট। (সূরা নিসা- ৪৫)

তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন :

وَاللهُ يُؤَيِّدُ بِنَصْرِهٖ مَنْ يَّشَآءُؕ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَعِبْرَةً لِّاُولِى الْاَبْصَارِ

আল্লাহ যাকে চান তাকে নিজ সাহায্যের দ্বারা সাহায্য করেন। নিশ্চয় এর মধ্যে জ্ঞানীদের জন্য রয়েছে শিক্ষা। (সূরা আলে ইমরান- ১৩)

আল্লাহ সৎপথ দেখান :

لَيْسَ عَلَيْكَ هُدَاهُمْ وَلٰكِنَّ اللهَ يَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُ

তাদের হেদায়াতের দায়িত্ব তোমার উপর নয়। বরং আল্লাহ যাকে চান তাকেই হেদায়াত দান করেন। (সূরা বাক্বারা- ২৭২)

وَاللهُ يَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ

আল্লাহ যাকে চান তাকে সরল পথে পরিচালিত করেন। (সূরা নূর- ৪৬)

وَاَنَّ اللهَ يَهْدِيْ مَنْ يُّرِيْدُ

আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে পথপ্রদর্শন করেন। (সূরা হজ্জ- ১৬)

وَاِنَّ اللهَ لَهَادِ الَّذِيْنَ اٰمَنُواۤ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ

যারা ঈমান এনেছে অবশ্যই আল্লাহ তাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন। (সূরা হজ্জ- ৫৪)

আল্লাহকে আঁকড়ে ধরলেই হেদায়াত আসে :

وَمَنْ يَّعْتَصِمْ بِاللهِ فَقَدْ هُدِيَ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ

আর যে ব্যক্তি শক্তভাবে আল্লাহকে ধারণ করবে, সে সৎপথে পরিচালিত হবে। (সূরা আলে ইমরান- ১০১)

আল্লাহর হেদায়াতই আসল হেদায়াত :

قُلْ اِنَّ الْهُدٰى هُدَى اللهِ

বলো, আল্লাহর হেদায়াতই হচ্ছে প্রকৃত হেদায়াত। (সূরা আলে ইমরান- ৭৩)

ব্যাখ্যা : মানুষের এক ধরনের প্রয়োজন হচ্ছে যে, তার একজন প্রতিপালক, আশ্রয়দাতা, প্রার্থনা শ্রবণকারী ও অভাব পূরণকারী থাকবে। বস্তুত আল্লাহই এসব গুণের অধিকারী। আরো এক ধরনের প্রয়োজন হচ্ছে যে, তার এমন একজন পথপ্রদর্শক থাকতে হবে, যিনি তাকে দুনিয়ায় বসবাস করার সঠিক নীতি নির্ধারণ করে দেবেন এবং পরিপূর্ণ আস্থার সাথে যার দেয়া জীবনবিধানের আনুগত্য করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রেও একমাত্র আল্লাহই হলেন পথপ্রদর্শক। দুনিয়ায় মানুষের প্রয়োজন খাদ্য, পানীয়, পোশাক ও জীবন-যাপনের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি লাভ করা এবং বিপদাপদ ও ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকা। জীবন-যাপনের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানাও মানুষের একটি বড় প্রয়োজনীয় বিষয়। সাথে সাথে তাকে আরো জানতে হবে যে, নিজের ব্যক্তিসত্তার সাথে, নিজের শক্তি, সামর্থ্য, যোগ্যতা ও কর্মক্ষমতার সাথে, পৃথিবীতে যে উপায়-উপকরণ আছে তার সাথে, যে অসংখ্য মানুষের সাথে বিভিন্নভাবে তাকে জড়িত হতে হয় তাদের সাথে এবং সামগ্রিকভাবে যে বিশ্বব্যবস্থার অধীনে তাকে কাজ করতে হয় তার সাথে কী ব্যবহার করতে হবে। এটাও জানা এজন্য প্রয়োজন যে, তার জীবন যেন সামগ্রিকভাবে সফলকাম হয় এবং তার প্রচেষ্টা ও পরিশ্রম ভুল পথে নিয়োজিত হয়ে ধ্বংস হয়ে না যায়। যে পথনির্দেশনা মানুষকে এ পদ্ধতির দিকে নিয়ে যায় সেটিই ‘হকের হেদায়াত’ বা সত্যের পথনির্দেশনা। সত্যের পথনির্দেশনা লাভ করতে মানুষ আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের কাছে যায় তারা মানুষের জীবন-যাপনের সঠিক মূলনীতি রচনা করার পুরোপুরি জ্ঞান রাখে না। মানুষের জীবনের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাগুলো যে বিস্তীর্ণ পরিসরে ছড়িয়ে আছে তার সবকিছুর উপর একমাত্র আল্লাহর দৃষ্টিই পড়ে থাকে। অন্য কেউ সত্য পথনির্দেশনার উৎস হতে পারে না।

আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকে ভালোবাসেন :

وَهُوَ الْغَفُوْرُ الْوَدُوْدُ

আর তিনি ক্ষমাশীল ও প্রেমময়। (সূরা বুরুজ- ১৪)

اِنَّ رَبِّيْ رَحِيْمٌ وَّدُوْدٌ

নিশ্চয় আমার প্রতিপালক পরম দয়ালু ও প্রেমময়। (সূরা হুদ- ৯০)

ব্যাখ্যা : আল্লাহ বান্দাকে কতই না ভালোবাসেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ফেরেশতাদেরকে বলেন, আমার বান্দা কোন গোনাহের কাজ করার ইচ্ছা করলে তা না করা পর্যন্ত তার জন্য কোন গোনাহ লিপিবদ্ধ করো না। তবে সে যদি উক্ত গোনাহের কাজটি করে ফেলে, তাহলে কাজটির অনুপাতে তার গোনাহ লিখ। আর যদি আমার কারণে তা পরিত্যাগ করে, তাহলে তার জন্য একটি নেকী লিপিবদ্ধ করো। আর সে যদি কোন নেকীর কাজ করতে ইচ্ছা করে কিন্তু এখনো তা করেনি, তাহলেও তার জন্য একটি নেকী লিপিবদ্ধ করো। আর যদি তা করে তাহলে কাজটির অনুপাতে তার জন্য দশগুণ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত নেকী (সওয়াব) লিপিবদ্ধ করো। (সহীহ বুখারী, হা/৭৫০১)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন