hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৬৯
পর্ব- ৩৩ : মুনাফিকী অধ্যায়- ১ : মুনাফিকদের পরিচয় ও তাদের আচরণ
মুনাফিকরা মুখে ঈমানদার বলে পরিচয় দেয় :

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّقُوْلُ اٰمَنَّا بِاللهِ وَبِالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِيْنَ

মানুষের মধ্যে এমনও লোক আছে যারা বলে, আমরা আল্লাহর এবং বিচার দিনের উপর ঈমান এনেছি; অথচ তারা মোটেই ঈমানদার নয়। (সূরা বাক্বারা- ৮)

তারা মুসলিমদের সাথে প্রতারণা করে :

يُخَادِعُوْنَ اللهَ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۚ وَمَا يَخْدَعُوْنَ اِلَّاۤ اَنْفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُوْنَ

তারা আল্লাহ ও মুমিনদের সাথে প্রতারণা করে। প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেদের ব্যতীত অন্য কারো সাথে প্রতারণা করে না; অথচ তারা এটা অনুভব করতে পারে না। (সূরা বাক্বারা- ৯)

তারা আল্লাহর সাথেও ধোঁকাবাজি করে :

اِنَّ الْمُنَافِقِيْنَ يُخَادِعُوْنَ اللهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ

নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে; বস্তুত তিনিই তাদেরকে এর দ্বারা ধোঁকায় ফেলে দিচ্ছেন। (সূরা নিসা- ১৪২)

তাদের অন্তরে মুনাফিকীর রোগ থাকে :

فِيْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ فَزَادَهُمُ اللهُ مَرَضًا

তাদের অন্তরে রোগ রয়েছে, উপরন্তু আল্লাহ তাদের রোগ আরো বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। (সূরা বাক্বারা- ১০)

ব্যাখ্যা : এখানে মুনাফিকীকেই রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘‘আল্লাহ মুনাফিকদের এ রোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন’’- এ কথার অর্থ হচ্ছে, তিনি ঘটনাস্থলেই মুনাফিকদেরকে তাদের কার্যকলাপের শাস্তি দেন না বরং তাদেরকে ছাড় দিতে থাকেন। এর ফলে মুনাফিকরা নিজেদের কলা-কৌশলগুলোকে আপাত দৃষ্টিতে সফল হতে দেখে আরো বেশি মুনাফিকী কার্যকলাপে লিপ্ত হতে থাকে।

উপদেশ দিলে পাল্টা জবাব দেয় :

وَاِذَا قِيْلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوْا فِى الْاَرْضِ قَالُوْاۤ اِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُوْنَ

যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না। তখন তারা বলে, আমরা তো কেবল সংশোধনকারী মাত্র। (সূরা বাক্বারা- ১১)

মুনাফিকরা ফাসাদ সৃষ্টি করে :

اَلَاۤ اِنَّهُمْ هُمُ الْمُفْسِدُوْنَ وَلٰكِنْ لَّا يَشْعُرُوْنَ

সাবধান! তারাই অশান্তি সৃষ্টিকারী; কিন্তু তারা বুঝে না। (সূরা বাক্বারা- ১২)

তারা প্রকৃত ঈমানদারদেরকে নির্বোধ মনে করে :

وَاِذَا قِيْلَ لَهُمْ اٰمِنُوْا كَمَاۤ اٰمَنَ النَّاسُ قَالُوْاۤ اَنُؤْمِنُ كَمَاۤ اٰمَنَ السُّفَهَآءُ

যখন তাদেরকে বলা হয়, লোকেরা যেরূপ ঈমান এনেছে তোমরাও অনুরূপ ঈমান আনয়ন করো। তখন তারা বলে, নির্বোধরা যেরূপ ঈমান এনেছে আমরাও কি সেরূপ ঈমান আনব? (সূরা বাক্বারা- ১৩)

ব্যাখ্যা : যারা একাগ্রচিত্তে নিষ্ঠার সাথে ইসলাম গ্রহণ করে নিজেদেরকে নানা নির্যাতন, কষ্ট ও বিপদের মুখে নিক্ষেপ করছিল মুনাফিকরা তাদেরকে নির্বোধ মনে করত। তাদের মতে, নিছক সত্য ও ন্যায়ের জন্য সারা দেশের জনসমাজের শত্রুতার মুখোমুখি হওয়া নিরেট বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। হক্ব ও বাতিলের বিতর্কে না জড়িয়ে সব ব্যাপারেই নিজের স্বার্থের দিকে দৃষ্টি রাখাই প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ।

আসলে মুনাফিকরাই নির্বোধ :

اَ لَاۤ اِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَآءُ وَلٰكِنْ لَّا يَعْلَمُوْنَ

সাবধান! নিশ্চয় তারাই নির্বোধ, কিন্তু তারা তা জানে না। (সূরা বাক্বারা- ১৩)

তারা ঈমান ও কুফরীর মাঝখানে দোদুল্যমান থাকে :

وَاِذَا لَقُوا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا قَالُوْاۤ اٰمَنَّاۚ وَاِذَا خَلَوْا اِلٰى شَيَاطِيْنِهِمْ قَالُوْاۤ اِنَّا مَعَكُمْ اِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِئُوْنَ

যখন তারা মুমিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আর যখন তারা নিজেদের শয়তানদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে, আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই আছি; আমরা তো শুধু (তাদের সাথে) ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে থাকি। (সূরা বাক্বারা- ১৪)

ব্যাখ্যা : এখানে شَيَاطِيْنُ (শায়াত্বীন) বলতে মুশরিকদের বড় বড় সরদারদেরকে বুঝানো হয়েছে। কেননা তারা তখন ইসলামের বিরোধিতার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছিল।

مُذَبْذَبِيْنَ بَيْنَ ذٰلِكَ لَاۤ اِلٰى هٰۤؤُلَآءِ وَلَاۤ اِلٰى هٰۤؤُلَآءِؕ وَمَنْ يُّضْلِلِ اللهُ فَلَنْ تَجِدَ لَهٗ سَبِيْلًا

এরা দোদুল্যমান অবস্থায় ঝুলন্ত; এদিকেও নয় ওদিকেও নয়। বস্তুত আল্লাহ যাদেরকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি তাদের জন্য কখনো কোন পথই খুঁজে পাবে না। (সূরা নিসা- ১৪৩)

মুনাফিকরা গোমরাহীর পথকে বেছে নেয় :

اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ اشْتَرَوُا الضَّلَالَةَ بِالْهُدٰى فَمَا رَبِحَتْ تِّجَارَتُهُمْ وَمَا كَانُوْا مُهْتَدِيْنَ

এরাই তারা, যারা হেদায়াতের পরিবর্তে গোমরাহীকে ক্রয় করে নিয়েছে। সুতরাং তাদের ব্যবসা লাভজনক হয়নি এবং তারা সঠিক পথেও পরিচালিত হয়নি। (সূরা বাক্বারা- ১৬)

তারা খারাপ কাজের নির্দেশ দেয় :

اَ لْمُنَافِقُوْنَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُمْ مِّنْ ۢبَعْضٍ يَّأْمُرُوْنَ بِالْمُنْكَرِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمَعْرُوْفِ وَيَقْبِضُوْنَ اَيْدِيَهُمْ

মুনাফিক নর ও মুনাফিক নারী একে অপরের অনুরূপ, তারা অসৎকাজের নির্দেশ দেয় এবং সৎকাজ থেকে নিষেধ করে; আর তারা (আল্লাহর পথে ব্যয় করা হতে) নিজেদের হাত গুটিয়ে রাখে। (সূরা তাওবা- ৬৭)

তারা আল্লাহকে ভুলে যায় :

نَسُوا اللهَ فَنَسِيَهُمْؕ اِنَّ الْمُنَافِقِيْنَ هُمُ الْفَاسِقُوْنَ

তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, ফলে তিনিও তাদেরকে ভুলে গেছেন; নিশ্চয় মুনাফিকরাই পাপাচারী (সম্প্রদায়)। (সূরা তাওবা- ৬৭)

কসম খেয়ে মিথ্যা কথা বলে :

يَحْلِفُوْنَ بِاللهِ مَا قَالُوْاؕ وَلَقَدْ قَالُوْا كَلِمَةَ الْكُفْرِ وَكَفَرُوْا بَعْدَ اِسْلَامِهِمْ

তারা আল্লাহর নামে শপথ করে যে, তারা কিছুই বলেনি। অথচ তারা কুফরীর কথা বলেছে এবং ইসলাম গ্রহণের পর কাফির হয়ে গেছে। (সূরা তাওবা- ৭৪)

তারা মুখে যা বলে তাদের অন্তরে তা থাকে না :

يَقُوْلُوْنَ بِاَفْوَاهِهِمْ مَّا لَيْسَ فِيْ قُلُوْبِهِمْؕ وَاللهُ اَعْلَمُ بِمَا يَكْتُمُوْنَ

যা তাদের অন্তরে নেই, তারা তাই মুখে বলে থাকে। তবে তারা যা গোপন করে, আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন। (সূরা আলে ইমরান- ১৬৭)

মুনাফিকরা ওয়াদা ভঙ্গ করে :

وَمِنْهُمْ مَّنْ عَاهَدَ اللهَ لَئِنْ اٰتَانَا مِنْ فَضْلِهٖ لَنَصَّدَّقَنَّ وَلَنَكُوْنَنَّ مِنَ الصَّالِحِيْنَ فَلَمَّاۤ اٰتَاهُمْ مِّنْ فَضْلِهٖ بَخِلُوْا بِهٖ وَتَوَلَّوْا وَّهُمْ مُّعْرِضُوْنَ

তাদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর নিকট অঙ্গীকার করেছিল যে, আল্লাহ নিজ কৃপায় আমাদেরকে দান করলে নিশ্চয় আমরা সাদাকা করব এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হব। অতঃপর যখন তিনি নিজ কৃপায় তাদেরকে তা দান করলেন, তখন তারা এ বিষয়ে কার্পণ্য করল এবং বিরুদ্ধভাবাপন্ন হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিল। (সূরা তাওবা- ৭৫, ৭৬)

তারা আল্লাহর পথে ব্যয় করাকে জরিমানা মনে করে :

وَمِنَ الْاَعْرَابِ مَنْ يَّتَّخِذُ مَا يُنْفِقُ مَغْرَمًا

মরুবাসীদের কেউ কেউ এমন আছে যে, যা তারা (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে তা অর্থদন্ড মনে করে। (সূরা তাওবা- ৯৮)

তারা স্বেচ্ছায় আল্লাহর পথে ব্যয় করে না :

وَمَا مَنَعَهُمْ اَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقَاتُهُمْ اِلَّاۤ اَنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللهِ وَبِرَسُوْلِهٖ وَلَا يَأْتُوْنَ الصَّلَاةَ اِلَّا وَهُمْ كُسَالٰى وَلَا يُنْفِقُوْنَ اِلَّا وَهُمْ كَارِهُوْنَ

তাদের ব্যয়কৃত কোনকিছু গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে এজন্য যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করে, সালাতে শৈথিল্যের সাথে উপস্থিত হয় এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে। (সূরা তাওবা- ৫৪)

তারা নামাযে অলসতা করে :

فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَ اَ لَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَ

দুর্ভোগ সেসব (মুনাফিক) নামাযীদের জন্য, যারা নিজেদের নামায থেকে উদাসীন থাকে। (সূরা মাঊন- ৪, ৫)

তারা মানুষকে দেখানোর জন্য আমল করে :

وَاِذَا قَامُوْاۤ اِلَى الصَّلَاةِ قَامُوْا كُسَالٰى يُرَآءُوْنَ النَّاسَ

যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সঙ্গে কেবল লোক দেখানোর জন্য দাঁড়ায়। (সূরা নিসা- ১৪২)

মানুষকে ভালো কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে :

اِتَّخَذُوْاۤ اَيْمَانَهُمْ جُنَّةً فَصَدُّوْا عَنْ سَبِيْلِ اللهِ فَلَهُمْ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ

তারা তাদের শপথকে ঢাল হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে, এভাবে তারা (লোকদেরকে) আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখে। অতএব তাদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। (সূরা মুজাদালা- ১৬)

তারা মুমিনদেরকেও তাদের মতো বানাতে চায় :

وَدُّوْا لَوْ تَكْفُرُوْنَ كَمَا كَفَرُوْا فَتَكُوْنُوْنَ سَوَآءً

তারা এটা কামনা করে যে, তারা যেরূপ কুফরী করেছে তোমরাও সেরূপ কুফরী কর, যাতে তোমরা তাদের সমান হয়ে যাও। (সূরা নিসা- ৮৯)

তারা কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব করে :

بَشِّرِ الْمُنَافِقِيْنَ بِاَنَّ لَهُمْ عَذَابًا اَلِيْمًا اَ لَّذِيْنَ يَتَّخِذُوْنَ الْكَافِرِيْنَ اَوْلِيَآءَ مِنْ دُوْنِ الْمُؤْمِنِيْنَؕ اَيَبْتَغُوْنَ عِنْدَهُمُ الْعِزَّةَ فَاِنَّ الْعِزَّةَ لِلّٰهِ جَمِيْعًا

মুনাফিকদেরকে সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে মর্মান্তিক শাস্তি- যারা মুমিনদের পরিবর্তে কাফিরদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে; (এর দ্বারা) তারা কি তাদের নিকট সম্মান পেতে চায়? বরং সমস্ত সম্মান তো আল্লাহরই। (সূরা নিসা- ১৩৮, ১৩৯)

তারা কাফিরদের অনুসরণ করতে চায় :

ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْا لِلَّذِيْنَ كَرِهُوْا مَا نَزَّلَ اللهُ سَنُطِيْعُكُمْ فِيْ بَعْضِ الْاَمْرِۚ وَاللهُ يَعْلَمُ اِسْرَارَهُمْ

এটা এজন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা যারা অপছন্দ করে তাদেরকে মুনাফিকরা বলে, কোন কোন ব্যাপারে আমরা তোমাদের কথাও মানব। আল্লাহ তাদের এসব গোপন বিষয় সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। (সূরা মুহাম্মাদ- ২৬)

তারা সত্যকে দেখে না এবং শোনেও না :

اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ لَعَنَهُمُ اللهُ فَاَصَمَّهُمْ وَاَعْمٰۤى اَبْصَارَهُمْ

এরা ঐসব লোক, যাদের উপর আল্লাহ লানত করেছেন এবং তাদের শ্রবণ করা ও দেখার শক্তি নষ্ট করে দিয়েছেন। (সূরা মুহাম্মাদ- ২৩)

মুনাফিকরা কুরআন নিয়ে গবেষণা করে না :

اَفَلَا يَتَدَبَّرُوْنَ الْقُرْاٰنَ اَمْ عَلٰى قُلُوْبٍ اَقْفَالُهَا

তবে কি তারা কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তরে তালা লেগে গেছে? (সূরা মুহাম্মাদ- ২৪)

শয়তান তাদের খারাপ কাজকে সুন্দর করে দেখায় :

اِنَّ الَّذِيْنَ ارْتَدُّوْا عَلٰۤى اَدْبَارِهِمْ مِّنْ ۢ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْهُدَى الشَّيْطَانُ سَوَّلَ لَهُمْؕ وَاَمْلٰى لَهُمْ

নিশ্চয় যারা তাদের কাছে হেদায়াত স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও মুখ ফিরিয়ে নেয়, শয়তান তাদেরকে সেদিকেই লোভ দেখায় এবং মিথ্যা আশার জাল বিস্তার করে দেয়। (সূরা মুহাম্মাদ- ২৫)

শয়তান তাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে :

اِسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَاَنْسَاهُمْ ذِكْرَ اللهِؕ اُولٰٓئِكَ حِزْبُ الشَّيْطَانِؕ اَ لَاۤ اِنَّ حِزْبَ الشَّيْطَانِ هُمُ الْخَاسِرُوْنَ

শয়তান তাদের উপর পরিপূর্ণ আধিপত্য বিস্তার করে নিয়েছে। অতঃপর সে তাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে ভুলিয়ে রেখেছে। সাবধান! তারা শয়তানের দল; তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেই। (সূরা মুজাদালা- ১৯)

তারা আল্লাহর বিধি-বিধানের জ্ঞান রাখে না :

اَ لْاَعْرَابُ اَشَدُّ كُفْرًا وَّنِفَاقًا وَّاَجْدَرُ اَ لَّا يَعْلَمُوْا حُدُوْدَ مَاۤ اَنْزَلَ اللهُ عَلٰى رَسُوْلِهٖؕ وَاللهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ

মরুবাসীরা কুফরী ও কপটতায় খুবই কঠোর এবং এরা সেসব সীমারেখা না জানারই যোগ্য, যা আল্লাহ তাঁর রাসূলের উপর অবতীর্ণ করেছেন। মূলত আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও অত্যন্ত কৌশলী। (সূরা তাওবা- ৯৭)

ব্যাখ্যা : অধিকাংশ মরুবাসীদের জন্য ইসলাম গ্রহণ করা নিছক স্বার্থ, সুবিধা ও কৌশলের ব্যাপার ছিল। তাদের উপর নামায পড়ার ও রোযা রাখার যে বিধান আরোপিত হতো, যে যাকাত আদায় করা হতো, একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য তাদের কাছ থেকে যে জানমালের কুরবানী চাওয়া হচ্ছিল- এসব জিনিস তাদের কাছে ছিল খুবই বিরক্তিকর। এগুলোর হাত থেকে বাঁচার জন্য তারা নানা ধরনের অজুহাতের আশ্রয় নিত। তাছাড়া নগরবাসীদের তুলনায় গ্রামীণ লোকেরাই বেশি মুনাফিকী আচরণ করে থাকে এবং সত্যকে অস্বীকার করার প্রবণতা তাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। নগরবাসীরা জ্ঞানীগুণী লোকদের সাহচর্যে এসে দ্বীন সম্পর্কে কিছু না কিছু জ্ঞান লাভ করতেও পারে; কিন্তু গ্রামবাসীরা দিন-রাত কেবল রুজী-রোজগারের ব্যস্ততায় লেগে থাকে এবং উন্নত পর্যায়ের কোন জিনিসের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার সময়ই তাদের থাকে না। তাই ইসলাম ও তার বিধিবিধান সম্পর্কে তাদের অজ্ঞ থাকার সম্ভাবনাই বেশি।

মানুষের পক্ষ থেকে আসা বিপদকে আল্লাহর আযাব মনে করে :

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّقُوْلُ اٰمَنَّا بِاللهِ فَاِذَاۤ اُوْذِيَ فِى اللهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللهِؕ وَلَئِنْ جَآءَ نَصْرٌ مِّنْ رَّبِّكَ لَيَقُوْلُنَّ اِنَّا كُنَّا مَعَكُمْ

মানুষের মধ্যে কেউ কেউ বলে, আমরা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি। কিন্তু যখন তারা আল্লাহর পথে চলার জন্য কষ্টে পতিত হয়, তখন তারা মানুষের পক্ষ হতে প্রাপ্ত দুঃখ-কষ্টকে আল্লাহর শাস্তির মতো মনে করে। অতঃপর তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে কোন সাহায্য আসলে তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম। (সূরা আনকাবূত- ১০)

ব্যাখ্যা : তারা মানুষের নির্যাতনের ভয়ে সৎকাজ থেকে বিরত থাকে। তারা যখন কাফিরদের হুমকি ও নির্যাতনের সম্মুখীন হয় তখন মনে করে যে, মরে যাওয়ার পর জাহান্নামের যে আযাব ভোগ করতে হবে সে আযাব তো পরে ভোগ করব; কিন্তু এখন এ নগদ আযাব থেকে নিস্তার লাভ করার জন্য আমাকে কুফরীর মধ্যে চলে যাওয়া উচিত। এভাবে দুনিয়ার জীবনটা আরামের মধ্য দিয়ে কেটে যাবে। সত্য দ্বীনের জন্য নিজের গায়ে বিন্দুমাত্র আঘাত নিতেও সে প্রস্তুত নয়; কিন্তু যখন আল্লাহ এ দ্বীনের জন্য জীবন উৎসর্গকারীদের সাফল্য ও বিজয় দান করবেন তখন এ ব্যক্তি বিজয়ের ফল ভোগ করে নেয়ার জন্য এসে বলবে, আমি তো তোমাদের সাথেই ছিলাম; তোমাদের সাফল্যের জন্য দু‘আ করেছিলাম। কিন্তু এসব সুযোগ সন্ধানী লোক যখনই দেখে যে, ইসলামের পথ কঠিন হয়ে গেছে তখনই সে নিরাপত্তা লাভের অজুহাতে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে।

তারা আল্লাহ সম্পর্কে খারাপ ধারণা করে :

وَيُعَذِّبَ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْمُشْرِكِيْنَ وَالْمُشْرِكَاتِ الظَّآنِّيْنَ بِاللهِ ظَنَّ السَّوْءِ

আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারী এবং মুশরিক পুরুষ ও মুশরিক নারীদেরকে আযাব দেবেন, (কেননা) তারা আল্লাহর সম্পর্কে খারাপ ধারণা রাখে। (সূরা ফাতহ- ৬)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন